
রাজধানীর সাবেক এক সংসদ সদস্যের কাছে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা দাবি করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েক নেতা। সেই দাবির প্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ টাকা দেওয়াও হয়েছিল। কিন্তু বিপত্তি ঘটে দ্বিতীয় দফায় টাকা আনতে গেলে। শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যার পর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডের ওই বাসায় গেলে পুলিশ তাদের হাতেনাতে আটক করে।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি। শনিবার রাতেই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেত্রী উমামা ফাতেমা। সেখানে বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশের পাশাপাশি এর শেকড় খোঁজার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
উমামা লিখেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ৫ জনের চাঁদাবাজির খবর শুনে আমার পরিচিত ব্যক্তিবর্গ এতটাই আশ্বার্যান্বিত হওয়ার অভিনয় করছেন যে, আমার মনে হচ্ছে আমিই সব থেকে কম আশ্বর্য হয়েছি। এই ছেলেগুলাকে তো নেতাদের পেছনে প্রটোকল দিতে দেখা গেছে এতদিন যাবৎ। সচিবালয় থেকে শুরু করে মিছিল-মিটিং, মারামারি সব জায়গাতেই সমন্বয়কদের ডান হাত, বাম হাত হিসেবে নির্বিঘ্নে প্রটোকল দিয়ে গেছে। গুলশান বনানী গ্যাং কালচারের অজস্র অভিযোগ অভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিরুদ্ধে ছিল।
এই ছবির রিয়াদ নামের ছেলেটা গত ডিসেম্বর মাসে রূপায়ন টাওয়ারে আমার সামনে অত্যন্ত উশৃঙ্খল আচরণ করেছিল। আমরা মেয়েরা তাকে থামানোর চেষ্টা করলে আমাদের উপর পাল্টা চড়াও হয়। ওিই ঘটনার পর ছেলেটার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে হুমকি, মারামারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে। আমি জেনে তখন মোটেও অবাক হইনি, কারণ ততদিনে বৈষম্যবিরোধীতে এই ধরনের মানুষজনের আনাগোনাই সর্বত্র টের পাওয়া যেত। ঠিকই তারা রূপায়ন টাওয়ারে অবাধে আসা যাওয়া করত। কারো দুর্নীতি বা অসততার ব্যাপারে অভিযোগ জানালে উত্তরে পিনড্রপ সাইলেন্স উপহার পেতে হবে। আর আমি চোখের সামনে দেখতাম এসব লোকজনই কীভাবে দিনেশেষে এক্সেস করে নেয়। আজকে এতমাস পর এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে বলার ভাষা পাইনা কোনো?! যে যেভাবে পারছে এই প্ল্যাটফর্মকে নষ্ট করেছে।
তিনি আরও লিখেন, আজকের এই চাঁদাবাজির খবর দেখে আশপাশের সবাই এত অবাক হওয়ার ভান করছেন বিষয়টা কিছুটা হাস্যকর বটে :v
ইশ! মানুষ কত নিঃষ্পাপ! সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো তারা আবিষ্কার করেছেন এই ছেলেগুলো আজ কীভাবে চাঁদাবাজি করল?! অত্যন্ত দুঃখিত বন্ধুরা, বলতে হবে এই প্রথম কোনো চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তারা পুলিশের হাতে ধরা খেল। ঠিকমতো খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে।