
জুলাই অভ্যুত্থানের বছর পূর্ণ হবার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি, অতএব বিলম্ব না করে অবিলম্বে জুলাই সনদের খসড়া উপস্থাপন করার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। আজ রাজধানীর বেইলি রোডস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সম্মুখে ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন। আলোচনায় এবি পার্টির পক্ষ থেকে আরও অংশগ্রহণ করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এ দুটি বিষয়ে আজ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এবি পার্টির পক্ষ থেকে আলোচনায় এক ব্যক্তি যাতে একই সঙ্গে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন সে বিষয়ে সংবিধানে নীতি প্রণয়ন করার প্রস্তাবকে সমর্থন জানানো হয়।
দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয়করণ কীভাবে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা আমরা অতীতে বহুবার দেখেছি। গণভবনে রাষ্ট্রীয় পদ ব্যবহার করে দলের সম্মেলন অনুষ্ঠান করা ও বিভিন্ন জেলা সফরে গেলে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করার কারণে সরকারি রাজনৈতিক দল বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত হয় যা বৈষম্যের নামান্তর। তিনি বলেন বিএনপি উপস্থাপিত ৩১ দফার ৪র্থ পয়েন্টে আইনসভা, মন্ত্রীসভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিচার বিভাগের মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করার যে অঙ্গীকার করা হয়েছে তার সাথে এই প্রস্তাব সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি যতটুকু আলোচনা হয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে অবিলম্বে জুলাই সনদের খসড়া উপস্থাপন করার জন্য ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহবান জানান। রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রসঙ্গে জনাব মঞ্জু বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতিকে যুক্ত প্রস্তাবকে আমরা সমর্থন ও স্বাগত জানাই।
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যথা, আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের দায়িত্বে তিনজন আলাদা ব্যক্তি থাকবেন সেটিই কাম্য। কিন্তু, বাংলাদেশে একই ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের একাধিক অঙ্গের ক্ষমতা থাকায় ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলে একই ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হবার পথ সুগম হয় যা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট পরিপন্থী। তিনি উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কীভাবে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে বিষয়ে তুলনামূলক আলোচনা হাজির করেন। ব্যারিস্টার সানী তার আলোচনায় এটিও নিশ্চিত করেছেন যে, একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না সেটি দলটির গঠণতন্ত্রের বিধানে সন্নিবেশিত রয়েছে।