Image description

বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশের প্রথম স্বৈরশাসক হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। সোমবার (২১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য হুমকি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

দুদু বলেন, “গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যারা দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্রের চর্চা করে এসেছে, তাদের বিচার হওয়া জরুরি। এ বিচার এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা একজন গণহত্যাকারী — এ বিষয়ে দেশে কিংবা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব একটা মতভেদ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “পার্শ্ববর্তী দেশ তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক শাসকের আসনে বসিয়েছে। যদি ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়েই প্রতিবেশী রাষ্ট্র প্রশ্ন তুলত, তাহলে হয়তো শেখ হাসিনা আজকের জায়গায় থাকতে পারতেন না।”

শেখ মুজিবকে নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে দুদু বলেন, “আমার দৃষ্টিতে শেখ হাসিনা নন, বরং শেখ মুজিব ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরশাসক। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ — এই সাড়ে তিন বছরে রক্ষীবাহিনী গঠন করে প্রায় ৪০ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। গুম ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড তখনই শুরু হয়। ইতিহাসে এটি একটি অন্ধকার অধ্যায়, যার ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে শেখ হাসিনার শাসনামলেও।”

 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “শেখ হাসিনা শুধু একজন ফ্যাসিস্ট নন, তিনি হত্যাকারী, লুটপাটকারী এবং স্বাধীনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, গণমাধ্যম ও রাজনীতি কার্যত ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন। তিনি নিজেই বলেছেন, এমন কিছু দিয়েছেন যা ভারত কোনোদিন ভুলবে না — যদিও তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি কী দিয়েছেন। এটা স্পষ্ট, তিনি বাংলাদেশকেই সমর্পণ করেছেন। সুযোগ পেলে হয়তো তা সংসদেও তুলে দিতেন।”

দুদু আরও বলেন, “গোপালগঞ্জে যেটা ঘটেছে, তার পেছনে অর্থ এসেছে শেখ হাসিনার কাছ থেকেই। দেশের ৪-৫টি বাজেটের সমান অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এই অর্থ জনগণের, তা উদ্ধার করতে হবে।”

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি তার পক্ষে ছিল এবং এখনও আছে। আমরা চাই তিনি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজনের জন্য ভূমিকা রাখুন। নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প পথ নেই। আমরা তার সমালোচনাও করি যেন তিনি সঠিক পথে থাকেন। তার আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি দেশের জন্য কাজে লাগতে পারে — এই বিশ্বাস বিএনপির আছে। তবে নির্বাচন বিলম্বিত হলে ষড়যন্ত্র থেমে থাকবে না, তা আমরা গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনাতেই দেখতে পেয়েছি।”