
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “গোপালগঞ্জে যারা আমাদের ভয় দেখাতে চেয়েছিল, তারা জানে না তাদের সেই আক্রমণ আমাদের দ্বিগুণ শক্তিশালী করেছে।”
তিনি বলেন, “এই প্রমাণ আমরা ফরিদপুরে দিয়েছি, রাজবাড়ীতে দিয়েছি এবং এই প্রমাণ রাত ১০টায় মানিকগঞ্জেও দিচ্ছি” ।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাত পৌনে ১০টার দিকে মানিকগঞ্জের খালপাড় এলাকায় শহীদ রফিক চত্বরে আয়োজিত জুলাই পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, “আমরা জানি ১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ স্বাধীন হয়েছিল আর ৪ আগস্ট হয়েছিল ফ্যাসিস্টমুক্ত। মানিকগঞ্জ সবসময় এক ধাপ এগিয়ে থেকেছে, কিন্তু উন্নয়নের দিক থেকে দুই ধাপ পিছিয়ে। আমরা সেই পুরনো বন্দোবস্ত বদলাতে চাই।”
তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, সংসদকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করতে হবে—উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষে দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব হবে ভোটের অনুপাতে, পিআর পদ্ধতিতে। এতে ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত হবে।”
শেখ হাসিনার কাছে একক ক্ষমতা ছিল উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা নতুন বাংলাদেশে এমন কোনো প্রধানমন্ত্রী চাই না, যার কাছে একক ক্ষমতা থাকবে। সে যা খুশি তাই করবে। তাকে প্রশ্ন করার কেউ থাকবে না। কিন্তু আমরা দেখছি সেই সংস্কারে প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
মানিকগঞ্জে এনসিপির পাঁচজন শহীদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এক বছরেও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারিনি। বরং তারাই এখন আমাদের ওপর হামলা চালায়—এটা আমাদের ব্যর্থতা।”
গোপালগঞ্জ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “সেখানে প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি গ্রামে এনসিপির কর্মসূচি চলবে। সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে আসতে চেয়েছিল, কিন্তু সন্ত্রাসীরা তাদের বাধা দিয়েছে, ফেরি বন্ধ করে দিয়েছে, বাস আটকে দিয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, “বাংলাদেশের মানুষ একবার আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করেছে, আবারও যদি তারা মাথা তোলে, জনগণই তাদের রুখে দেবে।”
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যেসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা কোনোটিই পালন করতে পারেনি। জুলাই ফাউন্ডেশনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা প্রতিনিয়ত ঘোরাফেরা করেন। তাদের পুনর্বাসনে কয় কোটি টাকা লাগে? কিন্তু সেই উদ্যোগটুকুও তারা নেয়নি।”
সামান্তা শারমিন আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার পুরো বাংলাদেশকে একটা নির্বাচনি ম্যান্ডেট বানিয়ে ফেলছে। এটা কী আমরা নির্বাচনি ম্যান্ডেটের জন্য করেছিলাম? আমরা গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম পুরো কাঠামো বদলানোর জন্য।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “কাঠামো বদলানোর পরিবর্তে আজকে প্রধান উপদেষ্টা সোহেল তাজের সঙ্গে দেখা করেছেন। আওয়ামী লীগের কোনো রিকন্ডিশন্ড, বি-টিম যদি বাংলাদেশে নামানোর চেষ্টা করা হয়, সেইটা আমরা গণঅভ্যুত্থান দিয়ে আবারো উড়াইয়া ফেলব। আওয়ামী লীগের কোনো বি-টিমও বাংলাদেশে থাকতে পারবে না।”
জুলাই পদযাত্রায় আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম, ডা. তাসনীম জারা এবং কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা।
শীর্ষনিউজ