
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার মামলায় পরিবারের দেওয়া তিন আসামির নাম বাদ দিয়ে নতুন তিনজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। এর কারণ জানতে চেয়েছেন এই যুবদল নেতা।
শনিবার (১২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। সেখানে যুবদল সভাপতি এ কথা বলেন।
আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, 'আমরা জানতে চাই, কারা, কেন এই তিন আসামিকে বাদ দিয়ে নতুন করে অন্য তিনজনকে আসামি করল? ঘটনাটি বুধবারের। শুক্রবার এটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। দুই দিন আগের ঘটনা কেন গতকাল প্রচার হলো, এর পেছনে কারা জড়িত, সেটিও খুঁজে দেখতে হবে। এটির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।'
সংবাদ সম্মেলনে লাল চাঁদের বড় বোনের মেয়ে বীথি আক্তারের বরাত দিয়ে আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘পরিবার জানিয়েছে, তারা আসামি হিসেবে নাম দিয়েছে, এমন তিনজনকে মামলার এজাহার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে যাঁদের দেখা গেছে, আশ্চর্যজনকভাবে তাঁদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি। যাঁরা প্রাণঘাতী আঘাতগুলো করেছেন, তাঁরা এখনো গ্রেপ্তার হননি। এর কারণ বোধগম্য নয়।’
ঘটনার ৬০ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও খুনিদের খুনের প্রমাণাদি হাতে থাকা সত্ত্বেও এখনো কেন মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল না, এটি একটি বিরাট রহস্য বলে জানান যুবদল সভাপতি।
ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় দায় অস্বীকার না করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বলেন আবদুল মোনায়েম মুন্না। তিনি আরও বলেন, 'আমরা দায় অস্বীকার করিনি। কোনো ঘটনা ঘটলে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। গতকাল ৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে হাজারো নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছি। কিন্তু প্রশাসন কি তাদের বিষয়ে যথাযথ আইনি বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে? না নিয়ে থাকলে কেন নেয়নি, তা জানতে চাচ্ছি।'
গত এক বছরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি, বলেন যুবদল সভাপতি। তিনি আরও বলেন, 'গতকাল খুলনায় যুবদলের বহিষ্কৃত একজন নেতাকে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা জাতীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ লক্ষ করা যাচ্ছে না। চাঁদপুরে খুতবা দেওয়ার সময় একজন ইমামের ওপর নারকীয় কায়দায় প্রাণনাশের লক্ষ্যে হামলা করা হয়েছে। রগ কেটে হত্যা করা একটি বিশেষ সংগঠনের দীর্ঘদিনের সহিংস রাজনৈতিক চর্চার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গতকালের দুটো ঘটনায় তারা জড়িত ছিল। এর আগে কুয়েটের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনেও তাদের প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল।'
বর্তমানে প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত উল্লেখ করে আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘একটি সুযোগসন্ধানী বিশেষ গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিলেকটিভ প্রতিবাদ করে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও বিবৃতি দেওয়া শুরু করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান প্রমুখ।
শীর্ষনিউজ