
‘পাপ বাপকেও ছাড়ে না’- কথাটি অনেক পুরনো হলেও একেবারে খাঁটি। সেটা ফের আরেকবার প্রমাণিত হলো। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বর্তমান জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন তিনি দুদকের সচিব থাকাকালে। সেই মোখলেস উর রহমান এবার নিজেই মামলার জালে ফেঁসে যাচ্ছেন।
হয়তো মোখলেসের ধারণা ছিল, খালেদা জিয়াকে বাকিটা জীবন অসুস্থ অবস্থায় এবং কারাবন্দী হয়েই থাকতে হবে। হয়তো তার এটাও ধারণা ছিল, দেশের রাজনীতিতে আর ফিরে আসা হবে না তারেক রহমানেরও। তাকেও নিদারুণ মানসিক কষ্ট নিয়ে দেশের বাইরে জীবনের বাকিটা সময় কাটাতে হবে। অর্থাৎ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দেশের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে পারলে বিএনপি যতই জনসমর্থিত দল হোক, আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে না। চরম সুবিধাভোগী এই সরকারি আমলার আরও ধারণা ছিল, তাদেরকে যত মামলায় ফাঁসানো যাবে ওয়ান ইলেভেন সরকার এবং আওয়ামী লীগ খুশি হবে। শুরুতে মঈন উদিন-ফখরুদ্দিনের মিশন ছিল বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ উভয়কেই মাইনাস করা। কিন্তু পরবর্তীতে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের আঁতাত গড়ে উঠে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিতে থাকে। বিএনপিকে চূড়ান্তভাবে মাইনাস করার জন্যই ওই সময় তৈরি করা হয় একাধিক ভুয়া মামলা। এসব ভুয়া মামলা তৈরিতে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছিলেন তখনকার দুদক সচিব (বর্তমান জনপ্রশাসন সচিব) মোখলেস উর রহমান। তখনকার সরকারের কাছ থেকে নিজের আর্থিকসহ নানা সুযোগ-সুবিধা আওয়ামী লীগের নেকনজরে থাকার লোভেই তিনি এ অপকর্ম করেছিলেন। আর এখন প্রকৃতির বিচারে একই মামলায় উল্টো আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকেই।
বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের ওই মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর দায়ে সচিব মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ঢাকার সিএমএম আদালতে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছে। এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- দুদকের তৎকালীন চেয়ারম্যান লে: জে: (অব.) হাসান মশহুদ চৌধুরী, তৎকালীন দুদক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও আবুল হাসান মনজুর মান্নান। মামলার বাদী ইতিমধ্যে মোখলেস উর রহমানসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন আদালতের কাছে। অভিজ্ঞজনরা বলছেন, এ মামলা থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। এ মুহূর্তে বড় কোনো সমস্যায় না পড়লেও অদূর ভবিষ্যতে জেলে যেতে হবে মোখলেস উর রহমানকে। কারণ, দেশের সর্বোচ্চ আদালতই খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে খালাসের রায়ে পর্যবেক্ষণে বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো অর্থই আত্মসাত হয়নি। খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে ফাঁসানোর জন্যই উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ মামলা তৈরি করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ওয়ান ইলেভেনের আমলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের মামলাটি তৈরি হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের তখনকার সচিব মোখলেস উর রহমানের হাত দিয়েই। তিনিই এই ভুয়া মামলা তৈরিতে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেন। মামলাটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর মামলা দায়েরের আগ মুহূর্তেই চতুর মোখলেস উর রহমান দুদক থেকে বদলি হয়ে চলে আসেন, যাতে তার ওপর এ মামলার দায় না পড়ে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে ঘায়েল করতে এ ভুয়া মামলাটিই লুফে নেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এ মিথ্যা মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বিশেষ শর্তে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয়। এরপরে ছয় মাস করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলেও বিশেষ শর্তের কারণে খালেদা জিয়া ছিলেন অনেকটা বাসায় নজরবন্দীর মতো। রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে দেয়া হয়নি, বাইরে প্রকাশ্যে কথা বলতে দেয়া হয়নি, এমনকি গুরুতর অসুস্থতায় বিদেশে চিকিৎসা নিতেও দেয়া হয়নি। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপরেই বেগম খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তিলাভ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোও আদালত থেকে পর্যায়ক্রমে খারিজ হয়ে যায়।
মোখলেস উর রহমান আওয়ামী লীগ আমলে এসএসবি পদোন্নতির সর্বোচ্চ পদ হাসিল করেছিলেন। ওয়ান ইলেভেন আমল থেকে আওয়ামী লীগ পর্যন্ত ছিলেন দুদকের সচিব, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান, পিএসসির সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। স্বাভাবিক অবসরের ১২ বছর পরে পেছনের দরজা দিয়ে আগস্ট বিপ্লবোত্তর সরকারে চুক্তিভিত্তিতে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। দায়িত্ব পেয়েই জাকির আহমেদ খান কমিটিকে পাশ কাটিয়ে নিজ ব্যাচের ৫ সুবিধাভোগী চুক্তিধারীর সঙ্গে নিজে চোরাই পথে ব্যাক ডেটে দুটি ভূতাপেক্ষ প্রমোশন নিয়ে সিনিয়র সচিব পদ বাগিয়ে নিয়েছেন, যা ৬ হাজার ক্যাডার সদস্যের কেউই জানতেন না। নিজেকে বঞ্চিত দাবি করে একই পদে দ্বিতীয় দফায় পদোন্নতি নেন মোখলেসরা জাকির আহমেদ কমিটির মাধ্যমে।
জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন এই মোখলেস উর রহমান ওয়ান ইলেভেনের পর ২০০৭ সালের ৫ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব পদে পোস্টিং নেন। দুদকের সচিব হওয়ার পর তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা সাজানোর সকল প্রকার গ্র্যাউন্ড নিজ হাতে সম্পন্ন করেন। তার এই কাজে সহায়তা করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যার অন্যতম কুশীলব ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টন মাহফুজের ছেলে রেদওয়ান, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আছেন। মোখলেস ও রেদওয়ান মিলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দুদকে ভুয়া মামলার সূচনা করেন। পরিকল্পিতভাবে একজন বেনামী ব্যক্তির দরখাস্তকে পুঁজি করে মামলার অনুসন্ধান কাজ শুরু করা হয়। যেটা ত্বরাম্বিত করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নুর আহমেদ। নুর আহমেদ অন্যত্র বদলি হওয়ার পর হারুনুর রশিদ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে ভুয়া মামলার চার্জশীট দাখিল করেন। মামলার ব্যাকগ্র্যাউন্ড তৈরির পর সুচতুর মোখলেস দুদক থেকে বদলি নিয়ে সরে আসেন। ফলে বিএনপি তথা দেশবাসী তার অপকর্ম বুঝতেই পারেনি।
সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজে গত ১৭ মার্চ প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমানের এসব অপকর্মের তথ্য তুলে ধরা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ মে মোখলেসসহ দুদকের চার সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি এবং মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ আনা হয়েছে। হারুন-অর-রশীদ নামে এক ব্যক্তি ওইদিন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে অভিযোগটি জমা দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তির সাথে মিলে সভা করে এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তৈরির ষড়যন্ত্র করে। যার ফলে পরবর্তীতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আগে একে অপরের সাথে যোগসাজশে মিথ্যা অভিযোগ তৈরি করার জন্য অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রসহ আসামিদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলো বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য বলে দাবি করেন মামলার বাদী।
চলতি বছরের শুরুতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এটি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসামূলক মামলা ছিল বলে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন। গত ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ এই মামলার রায় এবং পর্যবেক্ষণ দেন আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা নিজের ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করলেও হাসিনা মামলাটি হাতে পেয়েছিলেন ওয়ান ইলেভেন সরকারের উত্তরাধীকারী হিসেবে। মামলাটি দায়ের হয়েছিল ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে এবং এ মামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে কাজ করেছিলেন দুদকের তৎকালীন সচিব মোখলেস, যা ইতিমধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে।
বিসিএস প্রশাসনের ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা এই মোখলেস উর রহমান চাকরিজীবনে বরাবরই সুবিধাভোগী এক অনৈতিক চরিত্রের আমলা হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজে অবশ্য বঞ্চিত নন, তারপরও ব্যাকডোরে চুক্তি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপদে বসে সুযোগ-সুবিধা নেওয়াসহ নানা অপকর্মের রেকর্ড গড়েছেন, যদিও দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজে অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছেন বার বার। এমনকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলাসহ সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রেও তিনি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দফায় দফায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে এবং হচ্ছে সরকারকে।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয় হাইকোর্ট সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এরপর, ২০১৯ সালে খালেদা জিয়া আপিল বিভাগের কাছে পৃথক লিভ টু আপিল করেন। গত ৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার এ লিভ টু আপিল চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন শুনানি শেষে আদালত আপিল বিভাগে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন। শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে এই শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এবং কায়সার কামাল। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আসিফ হাসান। শুনানিতে, বিচারিক আদালতের রায় একতরফা দাবি করে জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারিক আদালত ৫ বছর সাজা দিলেও হাইকোর্ট তা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন, যা তিনি উপস্থাপন করতে চান। এরপর কায়সার কামাল হাইকোর্টের রায়ের কিছু অংশ তুলে ধরেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র এবং বিচারিক আদালতের রায়ের কিছু অংশ তুলে ধরে বলেন, ‘এখানে কোনো আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি, বরং ফান্ড স্থানান্তরিত হয়েছে এবং টাকা অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে।’ এছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় দেওয়া বক্তব্য উল্লেখ করেন। পরে জয়নুল আবেদীন কিছু যুক্তি তুলে ধরে বলেন, হাইকোর্টের এই সাজা বাড়ানোর রায়ে আইনগত ত্রুটি রয়েছে। অবশেষে সেই মামলায় খালাস পান বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। আর এখন উল্টো নিজেই মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন মোখলেস উর রহমান ভুয়া মামলা তৈরির দায়ে।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তৈরির পুরস্কার হিসেবে সচিব মোখলেস বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা রকমের বিশেষ সুবিধা পেয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক বনে যান। এছাড়া বর্তমান আমলে গত দশ মাসে জনপ্রশাসন সচিব পদে থেকেও দু’হাতে কামিয়েছেন অর্থ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়নে বিশেষ সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে। বিদেশের মাটিতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে হয়েছেন অনেক কিছুর মালিক। এরমধ্যে পর্তুগালে একটি বাড়ি ও সুপার শপ, ভারতের সল্টলেক এরিয়ায় এমআর টাওয়ার নামে ৮ তলা ভবন, সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর কাছ থেকে লন্ডনে দুটি বাড়ি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সুইজারল্যান্ডে স্ত্রীর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সুইস ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা জমা রয়েছে তার। হয়তো সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর দায়ে তাকেই জেলে যেতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগেই মোখলেস উর রহমান বিদেশ সফরের নামে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা নাহলে তিনি আটকা পড়ে যাবেন। শুধু জেলে যাওয়াই নয়, অবৈধ অর্থবিত্তের উৎসও বের হয়ে আসবে এর সঙ্গে। তাতে নতুন বিপদের মুখোমুখি হবেন। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের দায়ে একাধিক মামলায় ফেঁসে যাবেন তিনি। এসব ছাড়াও চারিত্রিক অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং নারীঘটিত অনেক কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি sheershanews.com এ এই সংক্রান্ত বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। চাকরিজীবনের প্রায় শুরু থেকেই মোখলেস এসব অপকর্মে জড়িত ছিলেন। এ পর্যন্ত অনেক কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছেন তিনি। এখন এই বুড়ো বয়সেও থামেননি। বাংলাদেশ সচিবালয়ে তাকে নিয়ে নানা মুখরোচক আলোচনা এখনো চলমান।
শীর্ষনিউজ