
পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনের বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেছেন, পুলিশকে দূরে ঠেলে দেবেন না। মনোবল ভেঙে গেলে পুলিশ আর কাজ করতে পারবে না।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে কেএমপি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এ কথা বলেন তিনি।
জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, চাকরিতে পদত্যাগের সুযোগ নেই। কর্তৃপক্ষ চাইলে আমাকে বদলি করতে পারে। সেজন্য আমি প্রস্তুত আছি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। চাপ দেওয়া বা দাবি আদায়ের নামে পুলিশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা সমীচীন হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার জানান, বিগত ১০ মাসে মেট্রোপলিটন এলাকায় ২৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি মরদেহ নদীতে ভেসে আসায় মামলাটি নৌ-পুলিশ তদন্ত করছে। বাকি ২৪টির মধ্যে ২২টি হত্যার পেছনের ঘটনা মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে ও আসামিদের আটক করা হয়েছে। বাকি দুটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে, তবে তদন্তকাজে অগ্রগতি আছে।
তিনি আরও বলেন, মাদকের কারণে আমাদের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। মাদকের বিক্রেতা, বাহক ও যারা খুলনার বাইরে থেকে মাদক নিয়ে আসে তাদের ওপর পুলিশের নজরদারি অব্যাহত আছে। গত সপ্তাহে হরিণটানা থানা এলাকা থেকে ১৯ হাজার পিস ইয়াবা আটক করা হয়েছে। এ ছাড়াও নিয়মিত অভিযানে মাদকদ্রব্য উদ্ধার হচ্ছে। স্কুলকলেজ পড়ুয়া আমাদের সন্তানদের সন্ধ্যায় পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে হবে। তারা যেন সন্ধ্যার পরে ঘরের বাইরে অযথা আড্ডা না দেয়, সেদিকে অভিভাবকসহ সকলকে নজর দিতে হবে।
কমিশনার জুলফিকার আলী বলেন, খুলনা শহরে প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার ইজিবাইক চলাচল করে। ধারণা করা হয়, এর প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিদিন বাইরে থেকে শহরে প্রবেশ করে। ইজিবাইক চালকরা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় যানজটের কারণ হয়ে ওঠে। কেএমপির উদ্যোগে এ পর্যন্ত ছয় হাজার ৫০০ ইজিবাইক চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের তিন থেকে চার মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া খুলনার সব ইজিবাইককে দুই রংয়ে বিভক্ত করে রঙ অনুযায়ী একদিন বাদে একদিন চলাচলের ব্যবস্থা করা বিষয়ে ভেবে দেখা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান, উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আবু তারেক, উপপুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) সুদর্শন কুমার রায়সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা।