Image description

প্রোফাইল পিকচার লাল করা ও চোখে-মুখে লাল কাপড় বাধা কর্মসূচি নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ। ডিপি লাল করার বিষয়টি ছাত্রশক্তির নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রথম সামনে নিয়ে আসে বলে জানান তিনি। আর হ্যাশট্যাগ ইউজের প্রস্তাব শিবিরের সাইমুম ছদ্মনামের একজন করে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ছাত্রদলের নাসির কাদেরকে প্রস্তাব করেছিল, হাসিনার লোকজনের কালো ব্যাজ ধারণের বিপরীতে তারা লাল ব্যাজ ধারন করবেন।

রবিবার (৬ জুলাই) ফেসবুকে এক পোস্টে এসব কথা লিখেছেন রিফাত রশিদ। তিনি প্রোফাইল পিকচার লাল করা বা চোখেমুখে লাল কাপড় বাধা কর্মসূচির পেছনের গল্প শিরোনামে লিখেছেন, প্রোফাইল পিকচার লাল বা চোখেমুখে লাল কাপড় বাধা কর্মসূচিটা আইকনিক ছিল, ফ্যাসিবাদের পক্ষের আর বিপক্ষের শক্তি সকলের কাছে স্পষ্ট হয়। সেদিন এই কর্মসূচি কিভাবে এলো সেই গল্পটাও বলি।

তিনি বলেন, হাসিনা ৩০ জুলাইয়ে জুলাইয়ের শহীদ আহতদের স্মরণে শোক দিবস ঘোষণা করে। এ ব্যপারটা ছিলো প্রচন্ড রকম প্রহসনের। এইদিন কি কর্মসূচি দেয়া যাবে, সেইটা নিয়ে ভাবছিলাম আমরা। প্রোগ্রামের কনসেপ্ট হবে হাসিনার শোক কর্মসূচিকে প্রত্যাখ্যান করা। প্রাথমিকভাবে আমি প্রস্তাব করেছিলাম, হাসিনার লোকজন কালো ব্যাজ ধারনের আহবান জানাইছে, আমরা মুখে আর চোখে কালো কাপড় বেধে প্রতিবাদ জানাব। মুখে কাপড় বাধা মানে বাক স্বাধীনতা হরণ আর চোখে কালো কাপড় বাধা অর্থ এত এত গণহত্যাকে চোখ বন্ধ করে মানুষের থেকে আড়াল করার ঘৃণ্য অপচেষ্টার প্রতিবাদ। 

তিনি আরও বলেন, এইটা প্রাথমিক আইডিয়া হিসেবে নিয়ে আমরা সবগুলো স্টেকহোল্ডারদের সাথে মিটিং করা শুরু করি। মিটিং এর আগেই ছাত্রদলের নাসির ভাই কাদের ভাইকে প্রস্তাব করেছিল, হাসিনার লোকজন কালো ব্যাজ ধারণ করবে, আর আমরা তার বিপরীতে গিয়ে লাল ব্যাজ ধারন করব। মিটিং এ আবারও যখন উনি সেইম কথা বলেন, তখন মাহিন ভাই বলে বসেন যে, ‘তাইলে আমরা এক কাজ করতে পারি। চোখে-মুখে কালো কাপড় না বেধে লাল কাপড় বাধতে পারি। আর জুলাইয়ের রঙ লাল।’

‘তখন কাদের আর মাসুদ ভাইও বলেন যে, যদি আমরা কালো কাপড় ইউজ করি তাহলে হাসিনার লোকজন গুজব প্রচার করবে যে আমরা ওদের শোক দিবস পালন করতেসি। কালার আলাদা হইতে হবে। তখন ডিসিশন ফাইনাল হয় যে আমরা চোখেমুখে লাল কাপড় বাধবো।’, যোগ করেন তিনি।

রিফাত রশিন বলেন, এই ডিপি আপলোড করার সময় কিছু হ্যাশট্যাগ ইউজের প্রস্তাব করে শিবিরের সাইমুম ছদ্মনামের একজন। তখন আমরা বলি, সম্ভাব্য কি কি হ্যাশট্যাগ দেয়া যায় সেইটার একটা তালিকা প্রস্তাব করতে বলি। তারা সেটা পাঠায়ও। এরপরেই চোখেমুখে লাল কাপড় বাধার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এবার আসি ডিপি লাল করার ব্যপারটায়। এইটা হইসে একটা অর্গানিক জিনিস। এই ডিপি লাল প্রথম করে আমাদের ২১-২২ এর ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া ছাত্রশক্তির ছোটভাই নুরুল ইসলাম নাহিদ। ও এই আইডিয়াটা মূলত পাইছিলো পরিষদে থাকাকালে আমরা হাসিনার কোনো ব্যপারকে প্রত্যাখ্যান করতে লালকার্ড প্রদর্শনী প্রোগ্রাম করতাম, প্রায়শই সেখান থেকে। 

লাল কাপড় চোখেমুখে বাধা কঠিন হওয়ায় ঠিক ১২টায় ‘শোক দিবসকে লালকার্ড দেখিয়ে দিলাম’ টাইপের একটা ক্যাপশন দিয়ে আপলোড করে দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ওইটা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কপি করা শুরু করে। আমরাও এপ্রিশিয়েট করেছিলাম, কারণ কাপড় চোখেমুখে বাধা সবার জন্য কঠিন হইলেও ডিপি লাল করাটা ইজিয়ার। রাত একটা বাজতে বাজতে চোখেমুখে লাল কাপড় বাধার ব্যপারটার চেয়েও ডিপি লাল করাটা ট্রেন্ডে চলে আসে আর আমরাও সেলিব্রেট করি। 

সবাইকে ডিপি লাল করার জন্য আহবান জানানো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই কর্মসূচিই আমাদের পক্ষ আর বিপক্ষের শক্তিকে আমাদের সামনে স্পষ্ট করে দেয়। দ্যাটস দ্যা একচুয়াল হিস্ট্রি অব ডিপি লাল করার কর্মসূচি। একতোলাও ভেজাল নাই।