
প্রতিহতের ঘোষণা ও দলীয় কোন্দল উপেক্ষা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার জনসভায় জনতার ঢল নামে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকালে ইউনিয়নের চুন্টা বাজার মুক্তমঞ্চে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
চুন্টা ইউনিয়ন বিএনপির ব্যানারে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, “আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক হয়, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিএনপির। রাষ্ট্র সংস্কারের যে ৩১ দফা কর্মসূচি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা করেছেন, তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।”
তিনি বলেন, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে নানা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েও মাথা নত করেনি। তারেক রহমান প্রতিটি ভাষণে বলেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই, ষড়যন্ত্রকারীরাও থেমে নেই। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিএনপির তৎপরতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সম্ভাব্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে লন্ডনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে বৈঠক থেকে আমরা আশাবাদী হয়েছি—আগামী রমজানের আগেই দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জনসভায় স্থানীয় জনসেবার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতার বিষয়েও তিনি বক্তব্য দেন। রুমিন ফারহানা বলেন, আমি ঢাকায় বিভিন্ন সেমিনারে বলেছি, নিয়ম করা উচিত—যে এলাকার সংসদ সদস্য, তাকে সে এলাকাতেই চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে তারা নিজের এলাকার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বাধ্য হবে।
সভাকে ঘিরে কিছুটা রাজনৈতিক উত্তেজনা ছিল। চুন্টা ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ সভার বিরোধিতা করে একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন। তাদের অভিযোগ বর্তমান কমিটিকে উপেক্ষা করে সভা আয়োজন করা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এমনকি তারা সভা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েও মাঠ ছেড়ে দেননি।
তবে সকল প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিবাদের মুখেও চুন্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান নান্নুর সভাপতিত্বে সভাটি সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন, জেলা বিএনপির সম্মানিত সদস্য ও সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টারসহ অনেকে।
সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপি নেতা বিধান চন্দ্র ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা আল আমিন।