
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় অবিচারমূলক ফলাফল বাতিল ও খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগের ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৯ জুন) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘বাংলা বিভাগ, ৫৪তম ব্যাচ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন বিভাগের ৫৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ধ্রুব বুড়ুয়া। এতে সংহতি জানিয়ে বিভাগটির অন্যন্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, স্টুডেন্ট এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ২৪ জুন একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে বাংলা বিভাগ, ৫৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, শিক্ষকদের সাথে বনিবনা না হলেই রেজাল্ট ধ্বসিয়ে দেয়ার চিত্রটা শুধু এক বিভাগের নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগের চিত্রই এমন। একজন শিক্ষক তার স্বৈরাচারিতার সর্বোচ্চটুকু প্রয়োগ করেন শিক্ষার্থীর পরীক্ষার খাতার উপর। শুধু বাংলা বিভাগ নয়, চবির প্রায় সব বিভাগের শিক্ষার্থীরাই দিনের পর দিন এমন মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ সৃষ্টি করাই হতে পারে একমাত্র সমাধান।
তিনি আরো বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষকদের নিরব ভূমিকা ও আন্দোলন পরবর্তী বিভাগের বিভিন্ন সংকট নিয়ে আওয়াজ উঠিয়েছিলাম আমরা। এই কারণে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে শিক্ষকরা একযোগে পুরো ব্যাচের ফলাফল ধ্বসিয়ে দিয়েছেন। আমরা আমাদের সাথে হওয়া এ অন্যায়ের প্রতিকার দ্রুত সময়ের মধ্যে চাই।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী শাহজাদা আল হাবীব বলেন, আমরা বাংলা বিভাগের ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অবিচারমূলক ফলাফলের বিরুদ্ধে আজকের মানববন্ধন করেছি। আমাদের দাবি : খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নিশ্চিত করা হোক এবং এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটি নীতিগত সংস্কার হোক। অনার্সের ফলাফলে যেখানে ৩ এর কম পেয়েছিলো মাত্র ৬-৭ জন। সেখানে মাস্টার্সে এসে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ এরও বেশি। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে এতোগুলো শিক্ষার্থীতো অমেধাবী হয়ে যাওয়ার কথা না। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন আর কখনো অযৌক্তিকভাবে অমূল্যায়নের শিকার না হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে বাংলা বিভাগের ৫৪তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে যেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগ তুলেন শিক্ষার্থীরা। এরপরদিনই বিবৃতি প্রকাশ করে ফলাফল বর্জনের ঘোষণা দেয় তারা।