
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘৭১ টিভিকে’ শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
সম্প্রতি জুলাই অভ্যুত্থানে ৭১ টিভির ভূমিকা সম্পর্কে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘৭১ টিভির অনেক সিনিয়র সাংবাদিক জুলাইয়ে আমাদের সঙ্গে একীভূত হয়েছিল।’
এই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব রিফাত রশিদ।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীকে উদ্দেশ করে রিফাত জানতে চেয়েছেন, এই ‘আপনাদের’ বলতে আপনি কাদের বুঝিয়েছেন? এবং এই সিনিয়র সাংবাদিকরা কারা? তাদের নামগুলো কী?’
রিফাত বলেন, যদি একটু কষ্ট করে বলতেন। গোটা জুলাইজুড়ে একাত্তরের কোনো সিনিয়র সাংবাদিক আমার/আমাদের সঙ্গে ছিল বলে আমার মনে পড়ে না।
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, একদিকে বলবেন, ‘মিডিয়ার ফ্যাসিবাদ তাড়াও’, আর অন্যদিকে বলবেন ‘একাত্তরের সিনিয়র সাংবাদিকরা আমাদের পাশে ছিলেন’। একই অঙ্গে এত ভিন্ন রূপ কেন?
রিফাত ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নাসীরুদ্দীনের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে অনেকেই স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
সমালোচনার মুখে একপর্যায়ে দেশবাসীর কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ নিয়ে একটি পোস্ট দেন তিনি।
তার পোস্টটি যুগান্তরের পাঠকদের জন্য হুবহু দেওয়া হলো-
‘ক্ষমা প্রার্থনা----
৭১ টিভিকে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়ার জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। এ বার্তাটি অনেক দেশপ্রেমিক মানুষের মনে আঘাত দিয়েছে—যা কখনোই আমার উদ্দেশ্য ছিল না। যারা ফ্যাসিবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, আমি তাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আপনাদের অনুভূতির প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান রয়েছে এবং আমি জনগণের সংগ্রামের প্রতি আমার অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।
পুনশ্চ:
গত ১৫ বছরে যেসব প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে এবং তাদের জন্য সম্মতি তৈরি করতে ভূমিকা রেখেছে, একাত্তর টিভি তাদের অন্যতম।
তারা যখন আমার কাছে শুভেচ্ছা চাইলেন, আমি মূলত দুইটি কথা বলেছি।
প্রথমত, আমি ধন্যবাদ জানিয়েছি সেই একাত্তর টিভির সাংবাদিক ভাইবোনদের, যারা জুলাই আন্দোলনের সময় আমাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন। তারা সেই কঠিন সময়ে হাউসের বিপরীতে গিয়ে আমাদের সাহায্য করেছিলেন।
দ্বিতীয়ত, আমি আহ্বান জানিয়েছি আগামী দিনে একাত্তর টিভি যেন আগের মত প্রোপাগান্ডার জায়গা না হয়ে, সত্য ও জনগণের পক্ষে সাংবাদিকতা করে। দেশের পাশে দাঁড়াক।
আমার এ বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেটুকু দেখে অনেকে কষ্ট পেয়েছেন, যা আমি বুঝতে পারছি। আমি তাদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি।
একই সঙ্গে, আমি অনুরোধ করব খণ্ডিত বক্তব্য প্রচারের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, সেই অসৎ চর্চা থেকে সবাই যেন বেরিয়ে আসি।’