
রাজবাড়ী জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যালয়ে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের শুনানি চলাকালে তাকে মারধর করেছেন বিএনপির নেতারা। এ সময় মারধর ঠেকাতে যাওয়ায় অধিদফতরের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসানকেও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানসহ ছয় নেতাকর্মীকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শহরের বড়পুর এলাকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যালয় থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তারা হলেন- পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খান, উপজেলা বিএনপির সদস্য শেখ পাড়া গ্রামের বদরউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে বাচ্চু বিশ্বাস, উপজেলা নারায়ণপুর গ্রামের রিয়াজুদ্দিন আহম্মদের ছেলে টাইলস ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমিন, শহরের ভবানীপুর গ্রামের রওশন শিকদারের ছেলে মামুন শিকদার, আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. ফরিদ হোসেন ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম পিন্টুর ছেলে মো. শিশির করিম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের গাড়াকোলা গ্রামের জেসমিন সুলতানা ব্যবসায়ী রুহুল আমিনের কাছ থেকে টাইলস কিনলে তাকে নকল টাইলস দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেসমিন সুলতানা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। আজ সেই অভিযোগের শুনানি হয়। এতে উভয় পক্ষের তিন জন প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে শুনানির কার্যক্রম শুরু করলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানের নেতৃত্বে পাঁচ নেতাকর্মী জেসমিনকে মারধর করেন। এ সময় অধিদফতরের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান ঠেকাতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয়। পরে রকিবুল হাসান সেনা ক্যাম্পকে বিষয়টি জানালে সেনা টহল টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং কার্যালয়ে অরাজকতা সৃষ্টির ঘটনায় ছয় জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বলেন, আজ আমার অফিসে একটি অভিযোগের শুনানি ছিল। সেখানে অভিযোগকারী ও যার নামে অভিযোগ তিনিসহ কয়েকজন আসেন। শুনানিতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানও ছিলেন। শুনানি চলাকালীন চাঁদ আলী খান অভিযোগকারী নারীকে মারধর করেন। আমি সেটা ঠেকাতে গেলে চাঁদ আলী খানের নেতৃত্বে আমাকেও কিল-ঘুষি মারেন তারা। পরে আমি ডিসি ও এসপি স্যারকে জানালে তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে উদ্ধারসহ ছয় জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, ভোক্তার সহকারী পরিচালকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় সেনা ক্যাম্পের টিম ছয় জনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ের মামলার প্রস্তুতি চলছে।