
পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই আইনজীবীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-নোমান, অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আতিকুল ইসলাম দিপু, পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজল তালুকদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে প্রথমে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ সময় পাঁচ ব্যক্তি আহত হন এবং আদালত চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-নোমান বলেন, ‘আমি কলাপাড়ার একটি মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নিই। মামলার বাদী যুবলীগ নেতা শাহিন মৃধা নিজের ঘরে নিজেই আগুন লাগিয়ে এখন বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করেছেন। অথচ আমাদের বারের সেক্রেটারিসহ কয়েকজন এপিপি বাদীপক্ষের হয়ে দাঁড়িয়ে কোর্টকে প্রভাবিত করেন। এমনকি সেক্রেটারি সালাহউদ্দিন সাহেব আমাকে মারধর ও খুনের হুমকি দেন।’
আব্দুল্লাহ আল-নোমান আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর বারের সাধারণ সম্পাদক আমাকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন, যা তাঁর এখতিয়ারবহির্ভূত।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মহসিন বলেন, ‘আমি পরিস্থিতি শান্ত করতে চেষ্টা করলেও তারা উল্টো আমার ওপর ও আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায়।’
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কলাপাড়ার একটি মামলার জামিন শুনানি ছিল। সেই মামলার বাদী হচ্ছে ধানখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন মৃধা এবং আসামিরা হচ্ছেন কলাপাড়া বিএনপির লোকজন। আসামিরা জামিনের আবেদন করেছেন এবং অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-নোমানসহ ১৫-২০ জন আইনজীবী জামিনের জন্য শুনানি করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের এপিপিরা বাদীপক্ষের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন। আমিও ওখানে ছিলাম। আদালত দুজনকে হাজত দেন এবং অন্যদের জামিন দেন। এ বিষয় নিয়ে নোমান সাহেব আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। এ সময় আমিসহ উপস্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁদের কথা-কটাকাটি হয়। একপর্যায় তিনি বাইরে বের হয়ে কলাপাড়ার বহিরাগত যত লোকজন এসেছিলেন, তাঁদের নিয়ে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করেন এবং আজেবাজে স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে একপর্যায়ে আমি আইনজীবীদের নিয়ে বার লাইব্রেরিতে চলে আসি। এ সময় তাঁরা আমাদের আইনজবীবীদের ধাওয়া করেন। আমরা বার লাইব্রেরি ভবনের মধ্যে ঢুকে পড়ি এবং মেইন গেট আটকে দিই। তারপরও তাঁরা বহিরাগতদের নিয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির মধ্যে ঢুকতে বারবার চেষ্টা চালান এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।’