Image description

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদলের দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত মাদ্রাসাছাত্র ইয়াসিন মৃধার লাশ নিয়ে মিছিল করেছে উপজেলা বিএনপির একাংশ, ছাত্রদল ও স্থানীয় লোকজন।

 

ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদরে গৈড্যা এমএস ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে নিহত ইয়াসিন মৃধার জানাজা শেষে লাশ দাফন করার জন্য ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় এ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা।

এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে ইয়াসিনের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার সহপাঠী, স্থানীয় লোকজন ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্থানীয় গৈড্যা এমএস ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ছিল ইয়াসমিন।

জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ৫ জুন সন্ধ্যা ৭টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ভেদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক হাকিম, কনস্টেবল জাহিদ, ছাত্রদল নেতা পন্নী কাজি, এনাম, সোহান, লিখন বেপারী, মবিন ও ইয়াসিনসহ অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হন। এ সময় সাইফুল ইসলামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট করা হয়।

আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত ইয়াসিন মৃধাকে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রদলের একটি গ্রুপ ভেদরগঞ্জে বিচারের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

বোরবার দুপুর ১২টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদরে গৈড্যা এমএস ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে নিহত ইয়াসিন মৃধার জানাজা শেষে লাশ দাফন করার জন্য পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় এ বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা। ভেদরগঞ্জ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ভেদরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সায়েম খান, আহ্বায়ক ইমরান খান, সদস্য সচিব রহিম শেখ, পৌরসভা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সজিব মাঝি, যুগ্ম আহ্বায়ক রানা বেপারীসহ অনেক নেতাকর্মী। আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও তাদের ফাঁসির দাবি জানান তারা। গত ১১ দিনেও ভেদরগঞ্জ থানার পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতের বাবা হানিফ মৃধা।

নিহত ইয়াসিনের মা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমার ছেলেকে ১০-১২ জন মিলে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ গত ১১ দিনেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

তার সহপাঠী আতাউর রহমান, সিয়াম, অর্ণবসহ অনেকেই বলেন, ইয়াসিন আমাদের খুব কাছের বন্ধু ছিল। সে মেধাবী ছাত্র ছিল। যারা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে আমরা তাদের বিচার চাই। 

পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একলাছ উদ্দিন বেপারী বলেন, নিহত ইয়াসিনের জানাজা শেষে আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে লাশ নিয়ে মিছিল করা হয়েছে। আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

গৈড্যা এমএস ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ইয়াসিন খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। তাকে অন্যায়ভাবে মেরে ফেলা খুবই দুঃখজনক। আমরা এর বিচার চাই।

শরীয়তপুরের এএসপি (ভেদরগঞ্জ সার্কেল) সৌম্য শেখর পাল বলেন, মামলার এজাহারে আসামিদের নাম উল্লেখ না থাকায় তাদের চিহ্নিত করতে দেরি হচ্ছে। শিগগিরই আমরা আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।