Image description
 

মুফতি আমির হামজার দাবি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাদে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে এত সৎ মানুষ নেই, আর সেটি দেশের জনগণ ৫৪ বছর ধরে দেখে আসছে।ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজাকে কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঈদে কুষ্টিয়ায় জামায়াতের আয়োজনে ৫০০ পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন, যেখানে উঠে আসে জামায়াতের 'সততা', 'মানবসেবা' এবং 'নির্বাচন সংস্কার' বিষয়ে নানা দৃষ্টিভঙ্গি।

মুফতি আমির হামজা বলেন, “অনেকে বলে যে ভোট আপনাকে কেন দেবে? ভোট দেবে না কেন? মানুষ তো ৫৪ বছর দেখেছে। দলে যারা আছে, তাদের উপর বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আছে যে, এরা অন্তত মারিং কাটিং করবে না। আমরা তো দ্বীনের জন্য, আল্লাহর জন্য কাজ করব। মানুষ এমনিতেই সাড়া দেবে।”

তিনি আরও বলেন, “কোরআনে কারীমের সূরা আল-ইমরানের আয়াত আজকে বাস্তব প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি।”

 

মুফতি হামজা জানান, কুষ্টিয়ার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে মানবতার সেবায় যে কাজগুলো করা হচ্ছে, তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

 

তিনি বলেন, “আমরা আসলে উত্তম হওয়ার পেছনে, শ্রেষ্ঠ হওয়ার পেছনে কারণই এই যে, আমরা যেন মানবতার সেবা করি। আর সেই কাজই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রথম কাজ। এই কাজ চালু থাকবে। আমরাও যতটুকু পারি, ইনশাআল্লাহ আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে।”

তিনি জানান, “৫০০ পরিবার শুনলেন আপনারা, ৫০০ পরিবার তো হয়েছে। এরপরেও আমরা যদি বাড়াতে পারি, এখনো আগামী আরেকদিন আছে। আমরা আরও বাড়াবো ইনশাআল্লাহ। গতকালকেও আমার গ্রামের বাড়ি ডাবিরাভিটা, পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নে আমার গরুটায় প্রায় সাড়ে পাঁচ মনের মতো ওজন ছিল। ওগুলো গরিবদের মাঝে দিয়েছি। এরপর ছাগল ছিল, একটা ভেড়া ছিল এগুলোও দেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরও দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।”

ঈদের আগের দিন বিকালে কুষ্টিয়া সদরে শহরের ভেতরে একটি মোটরসাইকেল র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “মোটরসাইকেল র‍্যালিতে মানুষের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা তো দিনের জন্য, আল্লাহর জন্য কাজ করব। মানুষ এমনিতেই সাড়া দেবে।”

ভোট প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে বলে যে ভোট আপনাকে কেন দেবে? ভোট দেবে না কেন? মানুষ তো ৫৪ বছর দেখেছে। সামনে অন্তত সৎ এবং যোগ্য মানুষ যেহেতু এদের স্লোগান ‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’। সে সৎ লোক বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাদ দিয়ে অন্য দলে এত সৎ মানুষ নেই। এটা পরীক্ষিত হয়ে গেছে।”

চট্টগ্রামের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের ঘটনা এবং মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের জীবনী তিনি মন্ত্রিত্ব চালিয়ে ৩৬ টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম। সুতরাং, এই দলে যারা আছে, তাদের উপরে বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আছে যে, এরা অন্তত মারিং কাটিং করবে না।”

তিনি বলেন, “আমরা সেই প্রতিশ্রুতি আপনাদের দিতে পারি। আমরা সেই প্রতিশ্রুতি সামনে নিয়ে আপনাদের কাছে দোয়া চাই।”

নির্বাচন ঘিরে প্রাসঙ্গিক সংস্কারের দাবি তুলে ধরে মুফতি হামজা বলেন, “সুষ্ঠু তো হতেই হবে। মাস্টবি সুষ্ঠু হওয়া লাগবে। কিন্তু নির্বাচনের আগে কাজ হচ্ছে সংস্কার লাগবে। সংস্কার না করে দেশে নির্বাচন দিলে আবার ওই দিনের ভোট রাতে হবে। আর এটা জীবনেও কেউ মানবেও না। বিশেষ করে এদেশে যারা দেশকে ভালোবাসে, তারা কখনো মানবে না যে, সংস্কারের আগে নির্বাচন হোক।”

তিনি আরও বলেন, “বিশেষ করে আমরা বিচার চাই। যতগুলো মানুষ বিদায় নিয়েছে, ২৭৩২ জন মানুষ বিদায় নিয়েছে, তাদের এই হত্যার বিচার হওয়া লাগবে। এরপরেই নির্বাচন।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ড. মোহাম্মদ ইউনূস এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে একটা হালকা ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা চাই ওই সময় হোক, কিন্তু এর আগে যেন বিচারটা আর সংস্কারটা হয়।”

কুষ্টিয়ার জামায়াতে ইসলামীর এই আয়োজনে মুফতি আমির হামজার বক্তব্যে নির্বাচন ব্যবস্থায় ‘সংস্কার ও বিচার’ প্রশ্নে তার স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে। একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে দেশের ‘সবচেয়ে সৎ রাজনৈতিক দল’ হিসেবে অভিহিত করে, মানুষের আস্থার দাবি জানান তিনি।