Image description
 

গত ১০ মাসে সারা দেশে ১২৩ খুন হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৭ জুন- এই ১০ মাসে এসব খুন হয় এবং বিএনপি নেতাদের হাতেই তারা নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতা। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চলতে দেখা গেছে। এনসিপি নেতাদের দাবি, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে গণমাধ্যমে ৭ আগস্ট থেকে ৭ জুন পর্যন্ত প্রকাশিত হত্যাকাণ্ডের খবর বাংলা আউটলুক বিশ্লেষণ করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একজন গবেষক ও সাংবাদিকের সহায়তায় করা এই বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে নতুন তথ্য। 

যেসব কারণে এই খুনাখুনি 

গত ১০ মাসে ১২৩ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অন্তত ২১টি ঘটনা বিতর্কিতভাবে বিএনপির নাম এসেছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত খবরগুলোতে দেখা গেছে দলীয় পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আধিপত্য বিস্তার, লেনদেন সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বের কারণে ওইসব ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সরাসরি রাজনৈতিক স্বার্থে বা দলীয় কারণে কিংবা দলীয় পরিচয়ে খুন করেছেন এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়নি। শুধু রাজনৈতিক পরিচয় উঠে এসেছে। 

যেভাবে হত্যার ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নিহতের ঘটনাগুলোর মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষেই অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসার নিয়ন্ত্রন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ, ডাকাতি সংশ্লিষ্ট ঘটনায় এক পক্ষের হামলায় আরেকপক্ষের লোকজন নিহত হয়েছেন। 

তথ্যগত ভুল, বিভ্রান্তি 

বিবিসি বাংলাসহ দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১২৩টি হত্যাকাণ্ডের খবরের মধ্যে অন্তত ২০টি খবর ‍বিভ্রান্তিকর (মিসলিড) তথ্য দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। ১৩টি সংবাদে তথ্যগত ভুল ছিল। এছাড়া ৫৯টি ঘটনার খবর তথ্যগত ঠিক ছিল। 

বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনগুলো হলো:

১. অলিউজ্জামান

ঘটনার প্রায় চার মাস পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মিঠুন, আহসান ও সীমান্ত এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে সে সময় লোকমুখে শোনার কথা জানিয়েছিলেন অলিউজ্জামানের ভাতিজা আবু হানিফ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মিঠুন দাবি করেছিলেন, আহসান ও সীমান্ত ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

২. লয়লুছ মিয়া

সিলেটের বালাগঞ্জে আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে দা দিয়ে কোপানোর পর লয়লুছ মিয়া নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়, এটি গোষ্ঠীকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব।

৩. মুহাম্মদ ইব্রাহিম

হঠাৎ একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তিনটি অটোরিকশায় এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। মুহাম্মদ রায়হান নামের একজন সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

৪. আবদুল কাদের (মিলন)

কোম্পানীগঞ্জের চর পার্বতী ইউনিয়নের চৌধুরীরহাট এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল তাঁদের পিছু নেয়। অটোরিকশা একই ইউনিয়নের পোলের গোড়া এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা আরোহীরা পথরোধ করেন। পরে তাঁর ভাইকে অটোরিকশা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামান। সেখান থেকে মারতে মারতে পার্শ্ববর্তী এতিমখানার সামনে নিয়ে যান। সেখানে আরও কয়েকজন লোক তাঁর ভাইকে নির্মমভাবে পেটাতে থাকেন।

৫. তাজেল হাওলাদার

খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এ নিয়ে প্রতিবেশী জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা যুব দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক শাহজাহান খান ও বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর জের ধরে ৮ মার্চ শাহজাহান খান ও হোসেন সরদারের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন সাইফুল ও তাঁর ভাইদের কুপিয়ে হত্যা করেন।

৬. আবুল কাশেম

বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর কিছুটা দূরে সড়কে পৌঁছানোর পর ফাঁকা জায়গায় কাশেমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা।

৭. মোহাম্মদ আলী

চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এরপর গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে হারুন মাহমুদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৪৫ জন লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে মহিষখলা বাজারে হামলা চালান। 

৮. শান্তা ইসলাম

সোহেল ও তাঁর সমর্থকেরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের বাড়িঘরে হামলা চালান। এ সময় শান্তা বাধা দিলে তাঁকে গুলি করা হয়।

৯. এনামুল হক

পতিত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের লোকজন মো. ফরিদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। পাল্টা হামলাও করেছিলেন ফরিদের লোকজন। দৃশ্যটি ভিডিও করতে গিয়ে এনামুল হামলার শিকার হন।

১০. আক্তার শিকদার ও মারুফ শিকদার

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যেরচর এলাকায় ফকির ও শিকদার বংশের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকা ছাড়েন আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার শিকদার। আজ ভোররাতে শরীয়তপুরের নতুনবাজার এলাকা দিয়ে আক্তার শিকদার তাঁর লোকজন নিয়ে মধ্যেরচর এলাকায় প্রবেশ করছেন, এমন খবর পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন জলিল ফকিরের লোকজন। পরে আক্তার ও জলিলের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। হাতবোমার আঘাতে ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বোমায় গুরুতর আহত হন তাঁর ছেলে মারুফ শিকদার (২০)। শিকদারদের সঙ্গে ফকির বংশের লোকজনের দীর্ঘ বিরোধের কথা জানিয়ে মধ্যেরচর এলাকার বাসিন্দা রাজন হোসেন বলেন, ভোরে আক্তার শিকদার ও তাঁর দুই শতাধিক লোক প্রথমে জলিল ফকির, মোকলেস ফকির, মিজান আকন, শাহাবুদ্দিন ফকির, লাটু ব্যাপারী, বশার ব্যাপারী, আলী সরদারের বাড়িতে হামলা চালান। পরে তাঁরা একত্র হয়ে প্রতিরোধ গড়লে শিকদাররা পালান।

১২. সিরাজুল চৌকিদার

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যেরচর এলাকায় ফকির ও শিকদার বংশের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকা ছাড়েন আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার শিকদার। আজ ভোররাতে শরীয়তপুরের নতুনবাজার এলাকা দিয়ে আক্তার শিকদার তাঁর লোকজন নিয়ে মধ্যেরচর এলাকায় প্রবেশ করছেন, এমন খবর পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন জলিল ফকিরের লোকজন। পরে আক্তার ও জলিলের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। হাতবোমার আঘাতে ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বোমায় গুরুতর আহত হন তাঁর ছেলে মারুফ শিকদার (২০)। শিকদারদের সঙ্গে ফকির বংশের লোকজনের দীর্ঘ বিরোধের কথা জানিয়ে মধ্যেরচর এলাকার বাসিন্দা রাজন হোসেন বলেন, ভোরে আক্তার শিকদার ও তাঁর দুই শতাধিক লোক প্রথমে জলিল ফকির, মোকলেস ফকির, মিজান আকন, শাহাবুদ্দিন ফকির, লাটু ব্যাপারী, বশার ব্যাপারী, আলী সরদারের বাড়িতে হামলা চালান। পরে তাঁরা একত্র হয়ে প্রতিরোধ গড়লে শিকদাররা পালান।

১৩. এমরান হোসেন

এমরানকে পেয়ে রফিকুল কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে হামলা করেন। একপর্যায়ে রফিকুল এমরানকে ছুরিকাঘাত করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এরপর এমরান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা তাঁকে ফেলে চলে যায়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দাবি, এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিরোধ। রাজনৈতিক কোনো কারণে খুনের ঘটনা ঘটেনি।

১৪. হিরু মাতুব্বর

দত্তপাড়া ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মালেক মোল্লার সঙ্গে টুকু ফরাজির বিরোধ চলে আসছিল। রোববার রাতেও এই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরই জেরে উভয় পক্ষের লোকজন আজ দুপুর ১২টার দিকে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে আবার সংঘর্ষে জড়ান। এতে অহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন। এ সময় মালেক মোল্লার অনুসারী হিরু আর্য্যদত্তপাড়া এলাকায় গেলে তাঁকে একা পেয়ে কুপিয়ে জখম করেন টুকু ফরাজির লোকজন।

১৫. হামিদুল ইসলাম

ছাতারপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থক গাইন বংশ এবং বিএনপির সমর্থক পিয়াদা বংশের মধ্যে তিন যুগের বেশি সময় ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এদের বর্তমানে পিয়াদা বংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাদি নামে এক ব্যক্তি। আরেক পক্ষ নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিহত হামিদুল ইসলাম।

১৬. নজরুল ইসলাম

ছাতারপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থক গাইন বংশ এবং বিএনপির সমর্থক পিয়াদা বংশের মধ্যে তিন যুগের বেশি সময় ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এদের বর্তমানে পিয়াদা বংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাদি নামে এক ব্যক্তি। আরেক পক্ষ নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিহত হামিদুল ইসলাম।

১৭. পলাশ শেখ

ঘটনার দুই প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, পলাশ শেখ প্রথমে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ব্যক্তিকে কোপাচ্ছিলেন। এতে দুজন আহত হন। এর কিছুক্ষণ পরই লোকজন একজোট হয়ে পলাশকে আটকে মারধর শুরু করেন। পলাশের হামলায় আহত দুজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পুলিশ বলছে, নিজেদের মধ্যে বিরোধ থেকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।

১৮. শামীম আহমেদ

গত ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনের ছাত্রলীগের হামলায় শামীম জড়িত ছিলেন কি না, সেটা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আহসান লাবিব। তখন শামীম নিজে জড়িত ছিলেন না দাবি করে ছাত্রলীগের দুজন নেতা জড়িত ছিলেন বলে স্বীকারোক্তি দেন।

১৯. সিরাজুল ইসলাম

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারে মহেশ দাস নামের একজনের দোকান লুট করা হয়। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা ছিল। শুক্রবার সকালে মধুর বাজারে লুটের অভিযোগে রক্তা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ভাই কেওলা গ্রামের ছুনু মিয়ার কথা–কাটাকাটি হয়। কথা–কাটাকাটির বিষয়টি জানাজানি হলে কেওলা ও সারমপুর এবং রক্তা গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

২০. সবুজ আকন্দ

বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা যুবদল কর্মী জসিম উদ্দিনের (৩৪) নেতৃত্বে পৌর শহরের নতুনবাজার ম্যাক্সিস্ট্যান্ড দখল করতে যান তাঁর সমর্থকেরা। সেখানে যুবদলের আরেক পক্ষ সুমনের সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সুমনের সমর্থকেরা জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।

নিহতদের দলীয় পরিচয় বিশ্লেষণে যা জানা যায়

নিহতদের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ৭৫ নেতা-কর্মী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ১৮ জন নেতা-কর্মী, জামায়াতে ইসলামীর ২ নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষ ১১, ব্যবসায়ী ৪ জন, নৈশপ্রহরী, ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ছাত্র ও প্রবাসী রয়েছেন। 

বাংলা আউটলুক পাঠকদের জন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে দেওয়া হলো—

১. ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পৃথক ঘটনায় যুবদলের দুই কর্মী নিহত হন। পৌর শহরের নতুনবাজার ম্যাক্সিস্ট্যান্ড দখল নিয়ে সংঘর্ষের জেরে এই ঘটনা ঘটে। 

২. কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক শফিউল আলম শফি দুই পক্ষের কোন্দলে খুন হন। 

৩. চাঁদা না দেওয়ায় বরিশালের গৌরনদীতে ছাত্রলীগের কর্মী রাশেদ শিকদারকে (২২) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। 

প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য রাশেদ শিকদার কোটা আন্দোলন শুরু হলে পারিবারিক চাপে গত জুলাই মাসে তাবলিগ জামাতে চলে যান। তাবলিগে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন ছবি ও লেখা পোস্ট করতেন। এতে ছাত্রদল নেতারা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।

৪. ফরিদপুরের নগরকান্দায় দুই পক্ষের কোন্দলে নিহত একজন। 

৫. নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়।

৬. গাজীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক কলেজ ছাত্র নিহত।

৭. মাগুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু। 

৮.গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এক নেতা নিহত হয়েছেন।

৯. খুলনায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ফারুক আলী মীর নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হন। 

১০. বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জেরে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৭) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় মিজানের পক্ষের লোকজনের হামলায় লেদু (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

১১. নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় বিএনপির ‍দুই পক্ষের গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই খুন হয়েছেন।  

১২. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল শিক্ষার্থীর হামলায় আহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা মারা গেছেন। 

১৩. চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকায় যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জুবায়ের উদ্দিন নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। টার্ফের (কৃত্রিম ঘাসের মাঠ) দখল নিয়ে যুবদলের এই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

১৪. চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক তরুণ নিহত। 

১৫. মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক ব্যবসায়ী নিহত হন। 

১৬. গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মসজিদের মাইকের ব্যাটারি চুরির অভিযোগ তুলে মারধর ও শরীরে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনে মো. ইসরাফিল মিয়া নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। 

১৭. লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় বাড়িতে ঢুকে নুর আলম (৫০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নুর আলম পাঁচপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। 

১৮. গাজীপুরের কালীগঞ্জে যুবদল নেতার ভাইকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে কৃষক দল নেতার বিরুদ্ধে। 

১৯. চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কবির আহম্মদ (৭০) নামের এক বিএনপির নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। 

২০. রাজধানীর হাতিরঝিলে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিম (৩৪) হত্যার ঘটনা ঘটে। ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই ঘটনায় বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলমের নাম উঠে আসে। 

২১. চট্টগ্রাম নগরে বিএনপির দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দলের সংঘর্ষে এক তরুণ নিহত হন। 

২২. পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় একটি হাসকিং মিলে মুখোশধারীদের হামলায় নৈশপ্রহরী মারা যান। এ ঘটনায় করা মারধর ও ডাকাতির মামলায় স্থানীয় যুবদল এক নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

২৩. চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে যুবদলের দুই কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাওয়ের চেষ্টার সময় মো. শরীফ (৩২) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার মৃত্যু হয়।

২৪. বাগেরহাটের কচুয়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে পলাশ শেখ (৩৬) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত যুবকের মা হেলেনা বেগমের দাবি, তার দুই ভাই ও স্থানীয় বিএনপি নেতা আবদুর রব ও কবির হোসেনের নির্দেশে পলাশকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। 

২৫. রাজধানীয়ার উত্তরায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবদল কর্মী নিহত হন। 

২৬. কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পূর্বশত্রুতার জেরে দুই ভাইকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত দুই বংশের জেরে এই ঘটনা ঘটে। 

২৭. যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিসুর রহমানকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২২ বছর আগে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন আনিসুরের ভাই সিংহঝুলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তৎকালীন চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন। 

২৮. চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা সুলতান আহমেদ নিহত হন। নিহত সুলতান দামুড়হুদার নাটুদহ ইউনিয়নের খলিশা গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছেলে ও ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড (গচিয়ারপাড়া) বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। 

২৯. মাদারীপুরের শিবচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। 

৩০. যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসানকে (২৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় করা মামলায় ঝিকরগাছা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম রেজাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

 ৩১. ফেনীর পরশুরামে পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে এমরান হোসেন (২০) নামের এক কলেজছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। 

৩২. নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দোকানের জায়গা ভরাটকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন।

৩৩. পাবনায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত।

৩৪. কক্সবাজারের টেকনাফে হোয়াইক্যংয়ে আবদুর রহমান (৩০) নামের এক যুবককে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ স্থানীয় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।  

৩৫. রাজবাড়ীতে কলেজছাত্র তানভীর হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার।

৩৬. ভোলার লালমোহন উপজেলায় একটি বাজারের খাজনা আদায় ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবদলের এক নেতা নিহত। 

৩৭. সিলেট নগরে যুবদলের এক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। পূর্ববিরোধের জের ধরে নিজ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় বিলাল নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

৩৮. রাজধানীর কাপ্তানবাজার এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে আল আমিন (২৭) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। 

৩৯. আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুগ্রুপের সংঘর্ষে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাভলু মিয়া (৪০) নিহত হয়েছে। 

৪০. ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে কৃষক বাদশা মোল্লা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  

৪১. মাগুরা সদর উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত দুই ইউপি সদস্যের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে শরিফুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হন।

৪২. নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনায় সিএনজিস্ট্যান্ড দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত মো. আলম মিয়া (৫৫) মারা গেছেন। 

৪৩. নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি নেতা–কর্মীদের মারধরে পাভেল মিয়া (৩০) নামের ছাত্রদলের এক নেতা নিহত হন। 

৪৪. কুড়িগ্রামের উলিপুর থানা চত্বরে শুক্রবার সালিশে উপজেলার পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল আলমকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। আর বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। 

৪৫. চট্টগ্রামের রাউজানে চাঁদার জন্য গুলি করে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যা।

৪৬. ইব্রাহিম হোসেন সরদারের মৃত্যুর ২১ বছর ১ মাস ২২ দিন পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে তার বড় ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউদ্দিন পলাশকে 

৪৭. মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাবা-ছেলেসহ তিনজনকে হত্যা করা হয়। 

৪৮. পায়ের রগ কাটার পর কুপিয়ে হত্যা করা হয় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দল নেতা মীর আরমান হোসাইনকে। রগ কাটার বিষয়টি প্রথমে পরিবার না জানলেও শনিবার ডাক্তারি পরীক্ষায় (ময়নাতদন্তে) বিষয়টি উঠে এসেছে।

৪৯. কুষ্টিয়ার মিরপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে জামায়াতের আহত এক কর্মী মারা গেছেন। 

৫০. কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আবুল হাসান ওরফে রতন (৫৫) নামে এক নেতা নিহত হয়েছেন। 

৫১. চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পৌরসভা বিএনপি ও যুবদল নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে মো. মুন্না (২২) নামের এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছেন।

৫২. গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার ওপর হামলা ঘিরে মারামারির ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক যুবকের মৃত্যু হয়।

৫৩. নরসিংদীর মাধবদীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। 

৫৪. চট্টগ্রামে সন্দ্বীপ উপজেলায় মাথায় ‘সেলফ ডিফেন্স স্টিক’ দিয়ে আঘাত করে এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় যুবদলের সাবেক এক নেতা ওই বৃদ্ধকে হত্যা করেছেন। 

৫৫. পটুয়াখালীর বাউফলে মো. সুজন হাওলাদার (৩০) নামের এক অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।

৫৬. কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় দলীয় কোন্দল ও বিরোধে সেলিম ভূঁইয়া (৪৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। 

৫৭. চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুরে বিএনপি কর্মী মো. শহীদকে (৩২) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। 

৫৮. নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ও ইউপি কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় গুলিতে একজন নারী নিহত হয়েছেন। 

৫৯. ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মোশাররফ হোসেন (৩৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। 

৬০. বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত যুবদল নেতা রাশেদুল মিঞা (২৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। 

৬১. বাগেরহাটের কচুয়ায় বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত বিএনপি নেতা শওকত হোসেন (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। 

৬২. রাজশাহীর দুর্গাপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে ফেরদৌসী বেগম (৫৫) নামের এক নারী নিহত হন। 

 ৬৩. শেরপুর সদর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। 

৬৪. বাগেরহাটের চিতলমারীতে দলীয় কোন্দলের সংঘর্ষে আহত বিএনপি কর্মী কৃষক নুর ইসলাম শেখ (৪৮) মারা গেছেন। 

৬৫. বরিশাল নগরের কাউনিয়া এলাকায় যুবদল নেতা সুরুজ গাজীকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। 

৬৬. চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহে টিসিবির পণ্য বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মল্লিক নিহত হন।

৬৭. কয়লাবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ইটের আঘাতে মোহাম্মদ আলী (৭০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।

৬৮. মাদারীপুরে বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। বংশীয় দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটে। 

৬৯. রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে আহত হওয়া রিকশাচালক গোলাম হোসেন ওরফে রকি (৪৮) মারা যান।

৭০. মাদারীপুরে শ্রমিক দলের একটি কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শাকিল মুনশিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। 

৭১. রাজশাহীর তানোর উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য গানিউল ইসলাম নিহত হন। 

৭২. চট্টগ্রামের রাউজানে কমর উদ্দিন টিটু নামে সৌদি প্রবাসী এক যুবদল কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

৭৩. বাগেরহাটের চিতলমারীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় কাজী নিজাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

৭৪. নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসনকেন্দ্রে মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

৭৫. চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। তাঁরা দুজনই যুবদলের কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, যুবদলের দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে মারামারির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

৭৬. ঢাকার ধামরাই উপজেলায় বিএনপির স্থানীয় এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। 

৭৭. ভোলার মনপুরায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. রাশেদ নিহত হয়েছেন। 

৭৮. সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ইফতার মাহফিলের আয়োজন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত। 

৭৯. নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হন।

৮০. কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আশিক খান (২২) নামে ছাত্রদলের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। 

৮১. চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মোহাম্মদ জাবেদ (৩৪) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। 

৮২. রাজশাহীর তানোরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নেকশার আলী (৩৫) নামে এক কৃষক দল নেতা নিহত। 

৮৩. চট্টগ্রামে ঈদ শুভেচ্ছা ব্যানার টাঙানো নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাহত হয়ে যুবদলের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। 

৮৪. ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আবুবকরপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে কয়েক দফা পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে। 

৮৫. রংপুরের বদরগঞ্জে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সশস্ত্র সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। 

৮৬. লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. সাইজুদ্দিন দেওয়ান (৪৫) নামের এক প্রবাসী নিহত হয়েছেন।

৮৭. নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বেধড়ক পিটুনির পর এক যুবলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম আবদুল কাদের ওরফে মিলন (৩৫)। তিনি উপজেলার চর হাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

৮৮. রাজগঞ্জে সরকারি খাসজমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও বসতবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের মারধরে মদিন মোল্লা (৫৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়।

৮৯. লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

৯০. রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

৯১. চট্টগ্রামের রাউজানে এক যুবদলকর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গরিব উল্লাহপাড়া গ্রামের ভান্ডারী কলোনির একটি বাসায় ভাত খাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় একই দলের প্রতিপক্ষের লোকজন জড়িত বলে সন্দেহ নিহত ব্যক্তির পরিবারের।

৯২. নরসিংদীর সদরের আলোকবালী ইউনিয়নে নিষিদ্ধ ঘোষিক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও ইউপি সদস্যকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করে। 

৯৩. ঢাকার হাতিরঝিলে ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য আরিফ সিকদারকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়। 

৯৪. চট্টগ্রামের রাউজানে মুহাম্মদ ইব্রাহিম (৩০) নামের এক যুবদল কর্মীকে হত্যা করা হয়। তিনটি অটোরিকশায় করে ১০ থেকে ১২ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার মাথায় ও বুকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় তার বাবা মুহাম্মদ আলম ও চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিমকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। গায়ে গুলি না লাগলেও পালাতে গিয়ে পড়ে তারা আহত হয়েছেন।

৯৫. গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে বাদশা মিয়া (৫৫) নামে একজন নিহত হন। 

৯৬. টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মিজানুর রহমান (৪০) নামের এক আওয়ামী লীগের নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে। 

৯৭. ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ হোসেন (২৫) নামে এক যুবক নিহত হন। 

৯৮. যশোরের ঝিকরগাছায় বাজার দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আশাদুল হক আশার (৪০) নামে এক যুবক নিহত। 

৯৯. সিলেটের বালাগঞ্জে আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে দা দিয়ে কোপানোর পর লয়লুছ মিয়া নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। 

১০০. রাজশাহীর দুর্গাপুরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে হাসিবুর রহমান (২৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

 ১০১. ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ববিরোধ ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মিয়াজুল হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।  

১০২. শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে আবুল কাশেম মোতাইত (৪৫) নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত আবুল কাশেম স্বেচ্ছাসেবক দলের কুচাইপট্টি ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

১০৩. চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে খালের দখলকে কেন্দ্র করে হামলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্র নিহত হয়। নিহত মো. রিফাতুর রহমান (১৭) উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জামসেদুর রহমানের ছেলে। রিফাত মগধরা ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। সে স্থানীয় কোরাইল্যা খালে বাঁধ দেওয়ার বিরোধিতা করেছিল।

১০৪. চট্টগ্রামের হালিশহরে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপ ‘পাইথন’ ও ‘বিংগু’-এর দ্বন্দ্বে খুন হন কলেজছাত্র ওয়াহিদুল হক। তাঁকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

১০৫. নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিএনপির এক পক্ষের হামলায় অন্য পক্ষের একজন নিহত হয়েছেন। 

১০৬. রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় আত্মগোপন থেকে বাড়ি ফিরে নির্যাতনের শিকার অলিউজ্জামান ওরফে মন্টু নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার প্রায় চার মাস পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

১০৭. গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে দোকান বরাদ্দ, বাড্ডা এলাকায় কেব্‌ল টিভি–সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবসা ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপি নেতা কামরুল আহসানকে (সাধন) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান বাড্ডার রবিন–ডালিম–মাহবুব গ্রুপের মাহবুবের মামা। তাঁকে গুলি করেছে বাড্ডার আরেক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মেহেদী গ্রুপের অনুসারীরা। তাঁরা গত বৃহস্পতিবারও তাঁকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে।

১০৮. চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএনপির এক পক্ষের হামলায় আরেক পক্ষের এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছেন। 

১০৯. ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনুছ আলী (৬২) নামে এক বিএনপি কর্মী মারা গেছেন।

১১০. ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে মহব্বত আলী (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

১১১. লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড রাজিবপুর গ্রামে সন্ত্রাসীদের হামলায় জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় ইউনিট সভাপতি ও মসজিদের ইমাম মাওলানা কাউসার হোসেন মিলন (৫৫) নিহত হয়েছেন।

১১২. যশোরের বেনাপোলে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এক কর্মী নিহত হয়েছেন। 

১১৩. বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আজিজুর রহমান চৌধুরী (৪০) নামে একজন নিহত হয়েছে।