
আওয়ামী ক্যাডারদের ছোড়া ৩টি গুলি লাগে চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র শহীদ মাহবুবুল হাসান মাসুমের মাথায়। একটি সামনের দিকে, বাকি দুটি পেছনে। পরবর্তী সময়ে ৭ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ছেলেকে হারিয়ে এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবার। তারা চান, মাসুম হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার।
জানা যায়, আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে পরিবারের নিষেধ ছিল। সে সময় মাসুম ছোট ভাইবোনদের প্রায়ই বলতেন, ঘরে থেকেও শিশুরা মারা যাচ্ছে, প্রয়োজনে আমিও শহীদ হব, এ সময় ঘরে বসে থাকা অন্যায়। পরিবারের আদেশ অমান্য করে ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। এই আন্দোলনে গডফাদার নিজাম হাজারীর আওয়ামী সন্ত্রাসীবাহিনী নির্বিচারে গুলি করে। ওই সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন মাসুম। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মাসুমের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান বলেন, ৪ আগস্ট ১২টার দিকে মাসুমের সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয়। তাকে বাসায় চলে যেতে বলার পর সে উত্তর দেয় নামাজ পড়ে বাসায় যাবে। নামাজের পরে তাকে ফোন দেওয়ার পর অন্য একজন রিসিভ করে। এরপর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে একজন জানালেন মাসুম মারা গেছে, তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে সোনাগাজীর এক সাংবাদিকের মাধ্যমে খবর পাই সে তখনও জীবিত। প্রাণে বাঁচতে তাকে সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম নিয়ে যাই। তার মাথায় ৩টি গুলি লাগে, একটি সামনের দিকে বাকি দুটি পেছনে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মাহমুদুল আরো বলেন, আমার ভাই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে। তার পড়াশোনা শেষ পর্যায়ে ছিল। এখন আমাদের সুন্দর সময় এসেছিল, তা দেখার আগেই সে চলে গেল।
ছেলে হারানোর শোক এখনও ভুলতে পারছেন না মাসুমের মা ফেরদৌস আরা বেগম। শোকে এখনও আহাজারি করছেন তিনি। এ ঘটনার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, আমার সব ছেলেই ইসলামের খেদমতে কাজ করছে। আমার সেজ ছেলে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। আমার ছেলে হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, আমি তাদের বিচার চাই।
এ ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় মামলা করেছেন মাহমুদুল হাসান। মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।