
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রংপুরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত’ বলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আর হামলায় দলের দুই কর্মী জড়িত থাকায় ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেছে বিএনপি।
রোববার দিবাগত রাতে রংপুর স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে বৈঠক শেষে দুই সংগঠনের নেতারা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে, রাত ৯টার দিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে বৈঠক করতে যান বিএনপির রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি, সদস্য সচিব রহমত আলী, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, সদস্য সচিব জামিল আহমেদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫-২০ সদস্য।
বৈঠক শেষে রাত ১০টা দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, ‘আমরা আনন্দিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির প্রতিনিধিরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এখানে এসেছেন। তাদের যেসব কর্মী ও সহযোদ্ধা আবেগে হোক বা যেকোনো কারণেই হোক আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিছু কর্মকাণ্ড করেছিলেন। তাদের চিহ্নিত করার সুযোগ দিয়েছিলাম। তারা নিজে থেকে এসেছেন। তারা এ রকম আর কিছু করবেন না ভবিষ্যতে।’
হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, ‘আশা করব, তারা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যেটা নিয়মের মধ্যে পড়ে সেভাবে চালিয়ে যাবেন। কিন্তু কোনো ধরনের ভাঙচুর, কোনো কিছু নষ্ট করা, মবের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে বাধা সৃষ্টি করবেন না। এসব কর্মকাণ্ড শুধু রংপুরে কেন, বাংলাদেশের কোথাও করার সুযোগ নেই।’
বিএনপি নেতা সামসুজ্জামান (সামু) সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই দিন আগে রংপুরে একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আমাদের অঙ্গসংগঠনের দুজন সদস্য এই ভুলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা সরি বলেছেন। আমরা মনে করি, তাঁরা যেহেতু ভুল বুঝেছেন, ভবিষ্যতে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটাবেন না।’
ইমতিয়াজ আহমেদ উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেন, গত ২৯ মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়েছিল। জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসী বাহিনী এর ওপর হামলা চালান। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বাসায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ রকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনায় রংপুরে উত্তেজনা বিরাজ করে।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থান থেকে নিশ্চিত করেছি, এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রংপুরে যেন আর না হয়, এ জায়গা থেকে সচেতন থাকব।’
এদিকে, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ এবং জিএম কাদেরের বাসায় হামলার ঘটনায় উভয়পক্ষের এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছে পুলিশ। রোববার রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান মামলা দুটি রেকর্ড হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, দুটি এজাহারই প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে এবং কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শুকুর আলীকে এর তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।