Image description

ধানমন্ডি থানায় আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজনকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনার ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ ভুল স্বীকার করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ধানমন্ডি থানার একটি ঘটনায় আটক তিনজনকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনার ঘটনায় এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য আব্দুল হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তিনি কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত ও মৌখিক জবাব দিয়েছেন ‘রাজনৈতিক পর্ষদ’ এর কাছে। নোটিশে উল্লেখিত কর্মকাণ্ডে ভুল ছিল বলে তিনি স্বীকার করেছেন এবং আগামীতে এই ধরণের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি থানায় আটককৃত ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল না বলে প্রমাণসাপেক্ষে প্রতীয়মান হওয়ায় রাজনৈতিক পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার ওপর আরোপিত কারণ দর্শানো নোটিশ প্রত্যাহার করা হলো।

গত ২০ মে রাজধানীর ধানমন্ডিতে হাক্কানী পাবলিশার্সের মালিকের বাসায় ঢোকার চেষ্টায় আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজনকে হান্নান মাসউদের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে এবং সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে হান্নান মাসউদকে।

নোটিশে বলা হয়, ‘ধানমন্ডি থানার আওতাভুক্ত একটি আবাসিক এলাকায় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগে তিনজন ব্যক্তিকে আটক করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক উক্ত তিনজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিকে নৈতিকতা স্খলনজনিত কারণে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এতৎসত্ত্বেও আপনি সংশ্লিষ্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আটক তিনজনের মুচলেকা প্রদান করে থানা থেকে তাদের জামিন করিয়েছেন।’

নোটিশে আরও বলা হয়, ‘এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আপনার ব্যাখ্যা এবং আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার লিখিত বিবরণ আগামী তিন দিনের মধ্য শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের নিকট উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।’

প্রসঙ্গত, সোমবার (১৯ মে) রাতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তারে চাপ ও পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনজন। পরে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ধানমন্ডি থানার ওসিকে উদ্দেশ্য করে এক তরুণ বলেন— ‘আপনি কেন এইখানে কথা বলতেছেন এইভাবে। আপনি ওসি আপনি গ্রেপ্তার করলেন না কেন। আমি বলছি, আমি বলছি... আপনি গ্রেপ্তার করেন।’

এরপরই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে তিনজনকে হেফাজতে নেয় ধানমন্ডি থানা পুলিশ।