
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তনের আলোচনা ফের সামনে এসেছে।একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি ফের জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই সেই নির্বাচন হতে হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচনার শুরুতেই ড. রিপন বলেন, "আমরা একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন চাই? চেয়েছিলাম বা এখনো চাই।কেন চাই? যাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে যদি দেশ নির্বাচনের দিকে হাঁটে।"
এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে কলঙ্ক রটানো হচ্ছে। এনসিবি'র নামে ছাত্র উপদেষ্টা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চায় এমন ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন এনসিপি।একটি চক্রান্ত করে তাদেরকে এই দিকে পরিচালিত করা হচ্ছে ।কারা তাহলে এই চক্রান্ত করছে?বলেন উপস্থাপক।
উত্তরে ড. রিপন বলেন, “চক্রান্তের বিষয় না। আপনি যেভাবে কাজ করবেন, সেটার প্রতিফলন তো আপনার কাজের মধ্য দিয়েই হবে। এটা কোনো চক্রান্তের বিষয় না। এগুলো সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে যদি দেশ নির্বাচনের দিকে হাঁটে।”
আলোচনার একপর্যায়ে ড. রিপন সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, “যেটা সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন, যে দেশে একটা রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক সরকার দরকার। ইনফ্যাক্ট, সারা পৃথিবীতে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর পারমাণবিক বাটনটা রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পরিচালিত হয়। সুতরাং এখন বাংলাদেশে একটু সংকট আছে। এই সংকটটাকে মোকাবেলা করার জন্য রাজনৈতিকভাবে এটাকে সমাধান করতে হবে।”
হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. রিপন বলেন, “তার পুরো স্টেটমেন্টে আমার কাছে মনে হচ্ছে, সবকিছুই একটা সেনাবাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে আঙুল তোলা। মানে বিএনপি ভিকটিম হয়েছে। বিএনপি তো একটা রাজনীতির ভিকটিম। সেনাবাহিনীর হাতে ভিকটিম হবে কেনো? সেনাবাহিনী কি আমার প্রতিপক্ষ নাকি?”
উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, বিএনপি এনসিপিকে এখন ভিক্টিমাইজ করার চেষ্টা করছে কি না?
জবাবে ড. রিপন বলেন, “এখনো দলই তৈরি হয় নাই। তাকে আমি কেন ভিক্টিমাইজ করবো? দল করার জন্য মার্কা লাগে, মার্কার জন্য নিবন্ধন লাগে। তো অনেকগুলো ধাপ এখন পর্যন্ত ধাপেই আসে না। তারপরেও তার অবস্থানটা কী? একটা ইলেকশন কখনো করে নাই। আমি তো কাউন্টই আনছি না। তো তাকে কেন আমার ভিকটিম করতে হবে? ভিকটিম তো তারা নিজেরা হচ্ছে, না বুঝে রাজনীতির ভুলটা করে।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের সাথে দূরত্ব কমানো বাড়ানোর কোনো বিষয় না। আমি আমার রাজনীতিটা করছি। তারা যে রাজনীতিটা করে, তা সঠিক করলেই হবে।”
ড. রিপন প্রশ্ন তোলেন, “যেমন ধরুন তাদের একজন উপদেষ্টা আছেন, সজীব। সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তিনি আলাদা একটা ইন্টারভিউ দিয়ে বসলেন ডেকে। এমন অর্গানাইজড ইন্টারভিউ দিলেন। এই যে অর্গানাইজড ইন্টারভিউ দিয়ে কি সে শপথ ভঙ্গ করেনি? নিঃসন্দেহে শপথ ভঙ্গ করেছে। সে কি এটা পারে? পারে না। কিন্তু করেছে। তার তো উচিত ছিল তখনই নিজের থেকে পদত্যাগ করা শপথ ভঙ্গের কারণে। সেনাবাহিনী প্রধানকে, সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করার কারণে।”
উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, “তারা বলছে আপনাদের দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি একেবারে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
ড. রিপন পাল্টা জবাব দেন, “গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, তাহলে তো আমাদের ছাত্রদলের রাকিব আছে, আমাদের নাসির আছে, তো ওদেরও দুইজনকে আমার এখন পাঠাতে হবে? ইউনূস সাহেবের মন্ত্রিসভার ভাষ্য মানার জন্য আমার দুইজন ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারিকে এখন বলতে হবে, তাহলে ওদেরকে উপদেষ্টা বানাতে হবে।”
সূত্র:https://tinyurl.com/26u2xtv7