
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ভবনের লোহার দরজা, জানালা ও রড বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির ৩ নেতার বিরুদ্ধে। জানা গেছে, যশোর সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের এফএমবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ভবনের মালামাল বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা ভাগাভাগি করেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন, দেয়াড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম সাগর এবং বিএনপি নেতা আমিন হোসেন।
বিএনপি এ কাজে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন স্কুলের ইট ও সুড়কি দিয়ে নিজের বাড়ির রাস্তার কাজ করায়। এ ছাড়াও স্কুলের ঘর ভাঙার লোহার দরজা, জানালা ও লোহার রড বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেয় আরও ২ নেতা। তবে বিষয়টি নিয়ে স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলেও প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান তারা।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই বিদ্যালয়টি গ্রামের শিক্ষার প্রাণ। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলটির এক শিক্ষক বলেন, ‘আমরা খুব আতঙ্কে আছি। কিছু বললে হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কায় আছি।’
এ বিষয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে মালামাল নিয়েছি। আর মাত্র ২হাজার টাকার সুড়কি আমার বাড়ির রাস্তার জন্য ব্যবহার করেছি। প্রধান শিক্ষক আমাদের বিক্রি করার জন্য দিয়েছিল, তাই আমরা ওই মালামাল স্কুল থেকে নিয়ে এসেছিলাম।’
বিএনপি নেতা শাহ-আলম সাগর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ওই স্কুলে ওয়াশব্লকের কাজ দেখতে গিয়েছিলাম।’
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইশরাত জাহান ঝরনা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা স্কুলের জন্য একটি রুমের বরাদ্দ পেয়েছি। এ কারণে একটি ঘর ভাঙতে হয়েছে। ঘর ভাঙার সব মালামাল আমির হোসেন ও সাগর নিয়ে গেছে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে তারা সুযোগ পেয়েছে।
মালমালের বিষয় তিনি বলেন, আমির ও সাগর ২৬ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে বলে আমায় জানিয়েছে। আমাকে ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলে তা গ্রহণ করেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘পরে জানতে পারি তারা ওই সকল মালামাল বিক্রি করে দিয়েছে। পরবর্তীতে আমি টাকা না নিয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে (এটিও) জানিয়েছি।’
এ বিষয় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সোহেল রানার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
যশোর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, তিনি এ বিষয় কিছুই জানেন না। তবে খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।