
টুডে রিপোর্ট
ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিরস্ত্র জনসাধারনের ওপর গুলি না করার নিদের্শনা দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। তবে সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত একজন। বিনা উস্কানিতে এক সেনাসদস্যের ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারান এক বিক্ষোভকারী। ঘটনাটি ঘটে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়, তখন সময় বেলা সাড়ে ১১টা।
সম্প্রতি নেত্র নিউজ ও বাংলাদেশ প্রটেস্ট আর্কাইভের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন ঘটনা উঠে আসে। ঘটনাস্থলে থাকা বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ অনুসন্ধান করে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী নিহতের এই ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সেখানে দেখা যায়, যমুনা ফিউচার পার্কের প্রবেশ পথে থাকা শতাধিক বিক্ষোভকারী অবস্থান নিলে হঠাৎ করেই ৪০০ মিটার দূর থেকে ফাঁকা গুলি করতে করতে এগিয়ে আসে সেনাবাহিনী। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কারো কারো হাতে লাঠি থাকলেও অধিকাংশই ছিলেন নিরস্ত্র। এর মধ্যেই এক সেনাসদস্য কাধে অস্ত্র নিয়ে এক বিক্ষোভকারীকে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এক বিক্ষোভকারী। এ দিন আরও তিনজন সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত হন বলে নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে তাদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে তা জানা যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নিহত বিক্ষোভকারীর নাম সাইফুল হাসান। তার বাসা টঙ্গীতে হলেও তিনি কাজ করতেন কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার একটি অফিসে। আন্দোলনের সময় তিনি বাসায় না গিয়ে অফিসেই থাকতেন। পরিবারকে না জানিয়ে অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলনেও।
ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেদিন ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা ছিল ১৪ স্বাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের অধীনে ২১ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটেলিয়নের সেনাসদস্যরা। এই ব্যাটেলিয়নের কমান্ডার লেফট্যানেন্ট কর্নেল গাজী আব্দুল্লাহ আল রাজি। ভিডিও ফুটেজে একজন মাস্ক পরিহিত সেনা কর্মকর্তাকে একাধিকবার গুলির নির্দেশ দিতে দেখা যায়। সামরিক সূত্রগুলো জানায় তিনি মেজর অথবা তার ওপরের কোনো র্যাংকের কর্মকর্তা।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সেনাসদস্যরা সেদিন বিক্ষোভ দমনে বিডি ০৮ রাইফেল ব্যবহার করে। বুলেটের গায়ে লিখা ছিল ৭৬২*৩৯ মিলিমিটার। রাইফেলটি একটি যুদ্ধাস্ত্র যা সাধারণ বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করা বেআইনি।
এ ঘটনায় সেনাবাহিনী পক্ষ থেকে মন্তব্য চাওয়া হলে কোনো সাড়া দেয়নি সেনাসদর। এমনিক লেফট্যানেন্ট কর্নেল গাজী আব্দুল্লাহ আল রাজিও কোনো মন্তব্য করেননি।
পুরো ভিডিও দেখুন
https://www.youtube.com/watch?v=zOEkiKMiFO