Image description

তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে মাঠে নেমেছে বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে তরুণরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। দেশে তরুণ ভোটার ৩ কোটি ৪ লাখ ৭ হাজার। তাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছর। মোট ১২ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ভোটারের ২৪ দশমিক ৪২ শতাংশই তরুণ। বড় অংশই শিক্ষার্থী। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটার হবেন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। ভোটের হিসাবনিকাশ তারা পালটে দিতে পারেন। কাজেই বিএনপির টার্গেটও তরুণ ভোটার। তরুণদের কাছে টানতে ১০ সাংগঠনিক বিভাগকে ভাগ করে কর্মসূচি পালন করছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

জানা যায়, তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ শীর্ষক ২৮ এপ্রিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় তারুণ্যের সেমিনার এবং সমাবেশের আট দিনের কর্মসূচি পালন করছে তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। এর মধ্যে ৯ মে চট্টগ্রামে সেমিনার এবং ১০ মে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ১৬ মে খুলনায় সেমিনার ও ১৭ মে সমাবেশ, ২৩ মে বগুড়ায় সেমিনার ও ২৪ মে সমাবেশ এবং ২৭ মে ঢাকায় সেমিনার ও ২৮ মে সমাবেশ। ২৮ মে ঢাকায় সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারুণ্যের সেমিনার ও সমাবেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, তরুণদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করাসহ বিভিন্ন বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সেমিনারে কর্মসংস্থান, বহুমাত্রিক শিল্পায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মৌলিক অধিকার, কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং নাগরিক সমস্যা নিয়ে তরুণদের বক্তব্য ও মতামত শুনছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মতামতগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে তার ভিত্তিতেই আগামীতে পথ চলবে বিএনপি। সংগঠন তিনটি বলছে, এর মধ্য দিয়ে তরুণদের বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবে তারা। মূলত তরুণদের একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতেই এ উদ্যোগ।

সূত্র জানান, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বাইরে যেসব তরুণ রয়েছেন, যারা বিএনপির কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তাদের সেমিনারে আনার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্য যে কোনো প্ল্যাটফর্মে যারা ভালো করছেন, তাদেরও এ সেমিনারে আনা হচ্ছে। এর মধ্যে সাংবাদিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশার তরুণদের সম্পৃক্ত করার জন্য বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সংগঠন তিনটি। শুধু শিক্ষিত তরুণ নয়, যেসব তরুণ বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি, তাদেরও এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা বলছেন, মেধাবী তরুণরা কর্মসংস্থান না পেয়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। দেশ হারাচ্ছে মেধাবী সন্তান; যা উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিএনপি তরুণদের এ মেধা, জ্ঞান এবং তাদের স্বপ্ন ধারণ করতে চায়। পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তরুণদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চায়।

যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, দেশে তরুণ ভোটার ৩ কোটির ওপর। তাদের বিষয়ে আমাদের কিছু চিন্তাভাবনা আছে। যে কোনো কাজে তরুণদের প্রাধান্য দিতে চাই। দেশের তরুণদের স্বপ্ন, মেধা, জ্ঞান, শক্তি এবং সাহস ধারণ করার সক্ষমতা বিএনপির রয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে আমরা কাজে লাগাতে চাই।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান বলেন, সেমিনার এবং সমাবেশে দেশের সব তরুণকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা তাদের কথা শুনব। সেমিনার এবং সমাবেশ হবে সব তরুণের।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চান তরুণরা সব সেক্টরে প্রতিনিধিত্ব করুক। সেজন্য তাঁর নির্দেশনায় এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দলের সঙ্গে তরুণদের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছি। কর্মসূচিতে তরুণদের ভাবনা শুনছি। দলের পলিসি বা সংস্কারসহ যে কোনো বিষয়ে তরুণদের দ্বিমত পোষণেরও সুযোগ থাকছে। এ পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হতে পারে তার ধারণাও দেওয়া হচ্ছে।