
নির্বাচন ইস্যুতে রাজনীতিতে বিতর্ক যেন থামছেই না। বিশেষ করে আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—এই প্রশ্নে রাজনীতিবিদরা নতুন করে তর্কযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন। এ নিয়ে প্রায় দিনই পক্ষে-বিপক্ষে নানা বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। তবে নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলনরত বিএনপি বরাবরই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে। গতকাল শুক্রবারও এক অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হলে স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা এ দেশে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ পাবে। তা ছাড়া চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে জোরালো অবস্থানে অনড় বিএনপি। এ দাবিতে সব দলকে একই ছাতার নিচে এনে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্য সম্প্রতি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে দলটি।
অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা নতুন দল জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) দাবি, আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে হবে। গণপরিষদ নির্বাচনেরও দাবি দলটির। আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণঅধিকার পরিষদ—এই তিনটি দল গত সপ্তাহে স্পষ্ট করে বলেছে, তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির মাঠ, যা ভাবাচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ডকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিলে সেটি হবে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। একই সঙ্গে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথ সহজ হবে। ফলে সবার আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের শুরু
মূলত স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার বিষয়টি গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনায় আসে। কিন্তু মার্চে রোজা ও ঈদুল ফিতরের পর বিষয়টি কিছুটা স্তিমিত হয়ে যায়। ঈদ-পরবর্তী আবারও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকটা আলোচনার বাইরে চলে যাওয়া এ দাবি নতুন করে কেন সামনে আসছে, তা নিয়ে নানা মহলে কৌতূহলও তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবি নতুন করে সামনে আনার বিষয়টি বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল, নাকি আগামী জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো নতুন মেরূকরণের ইঙ্গিত? স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবি সামনে আনা দলগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে কোনো অভ্যন্তরীণ সমঝোতা আছে কি না, সেই আলোচনাও শোনা যাচ্ছে।
গতকাল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না দিয়ে যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছেন, তাদের বলতে চাই, লুটপাট আর দুর্নীতির শত শত কোটি টাকা হাতে নিয়ে সারা দেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগের অপেক্ষায়। স্থানীয় নির্বাচন পলাতক স্বৈরাচারের জন্য পুনর্বাসিত হওয়ার একটা সুবর্ণ সুযোগ। যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছেন, হয়তো বা তারা এ বিষয়টি এভাবে বিবেচনা করেননি। আমি অনুরোধ করব বিষয়টাকে এভাবে বিবেচনা করার জন্য।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে সারা দেশে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। ফলে জাতীয় নির্বাচনও পিছিয়ে যেতে পারে। আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কারণে দলের তৃণমূলে কোন্দল-বিভাজন তীব্র হবে। এই বিশৃঙ্খলার প্রভাব আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের ওপর পড়তে পারে। এসব কারণেই বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবি প্রথম দফায় জোরেশোরে আলোচনায় আসে গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। গত ৬ জানুয়ারি ঢাকায় জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতীয় পর্যায়ে সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হলেও ঢাকার বাইরে মানুষের মতামতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রাধান্য পাচ্ছে। ঢাকার বাইরে মতবিনিময় করতে গিয়ে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন এ চিত্র পাচ্ছে। এরপরও গত ৮ জানুয়ারি ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ারের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে’। এমন পরিপ্রেক্ষিতে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে মত দেয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পক্ষে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।
তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অনুষ্ঠানের বিষয়ে তুমুল বিতর্ক দেখা দেয় চলতি বছরের শুরুতে। তখন বিএনপির বিরোধিতার মুখে বিষয়টি হালে পানি না পেয়ে একরকম চাপা পড়ে যায়। সম্প্রতি কয়েকটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নতুন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবি সামনে আনা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টির সঙ্গে বৈঠক করে আগামী সংসদ নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ভোট এক বাক্সে আনার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একই দিনে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। বৈঠক শেষে পৃথক বক্তব্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে দুই দলের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে বলে জানান ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। এরপর ৩০ এপ্রিল ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি তিন বিষয়ে একমত হয়। জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত স্থানীয় নির্বাচন এবং মৌলিক সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতেও একমত তারা। দল দুটি চায়, গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদে জড়িতদের দ্রুত বিচার এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার। বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখার দাবিতেও একমত হয়েছে ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি।
অবশ্য নতুন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিটি সামনে আনার কারণ কী, এর পেছনে কোনো কৌশল আছে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার দাবি জানানো দলগুলোর নেতারা বলছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হলে বিএনপির বাইরে অন্য দলগুলোর প্রার্থীরাও ভালো ফল করতে পারেন। তৃণমূলে তাদের পরিচিতি ও অবস্থান আরও সংহত হতে পারে। ফলে দলগুলো সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যেতে পারে। বিএনপি সেই ভয়েই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাইছে না।
যা বলছেন রাজনীতিকরা
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালবেলাকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা চাই না। যদি হয়, তাহলে রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশটাকে আরও ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যাবে। যত দ্রুত নির্বাচন হবে, তত দ্রুত দেশের পরিস্থিতি সহজ হবে। তা ছাড়া আনুপাতিক হারে (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন নিয়েও একমত নন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু কালবেলাকে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি সামনে আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল। কেননা, যারা দাবি তুলেছেন তারা ভালোভাবেই জানেন, নির্বাচন হলে বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় আসবে। সেজন্য নির্বাচন বিলম্ব করার কৌশলে অংশ হিসেবে আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি করছেন। তারা গাছের আগারটা খেতে চান আবার তলারটাও কুড়াতে চান। এটা তো সম্ভব নয়। যে কোনো একটা খেতে হবে। যত কৌশলই করা হোক, নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার কালবেলাকে বলেন, আমরা দুটি কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই। প্রথমত, স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়ার কারণে গ্রামীণ অবকাঠামো ও উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় প্রশাসনে সরকারি আমলারা দুর্নীতি করছেন, জনগণ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচিত যে কোনো সরকার ক্ষমতায় এলে সেই সরকারের ধারণা এবং প্রবণতা হয় স্থানীয় নির্বাচনের ফল তার অনুকূলে নেওয়ার। প্রশাসনিক ও কালো টাকার চাপ, রাজনৈতিক চাপ তারা সৃষ্টি করে। তাই রাজনৈতিক সরকার আসার আগেই বর্তমান যে নিরপেক্ষ সরকার আছে তাদের অধীনেই অপেক্ষাকৃত সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। সেখানেই প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারেন। এই কাজটা হওয়ার পর জাতীয় নির্বাচন। এক্ষেত্রে সরকার আন্তরিক ও নির্বাচন কমিশন সিরিয়াস হলে এটা সম্ভব। সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যেই স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবিটি নতুন করে সামনে এনেছেন, বিষয়টি এমন নয়। শুরু থেকেই তার দল বিষয়টি নিয়ে সরব। তারা সব সময়ের জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান। কারণ, দলীয় সরকারের সময় সংসদ সদস্যরা স্থানীয় সরকারে নিজস্ব লোক বা স্বজনদের বসান। ফলে স্থানীয় সরকার কার্যকর হতে পারে না।
এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু কালবেলাকে বলেন, আগে নির্বাচনের পরিবেশ আসুক, তারপর নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে আমাদের সংস্কারও লাগবে, পাশাপাশি যোগ্য লোকদের যোগ্য জায়গায় বসানোর কাজও করতে হবে। সুতরাং আমাদের সংস্কার যেমন প্রয়োজন, তেমনি মানসিকভাবে পরিবর্তন আনতে হবে স্থানীয় সরকার সংস্কারের ক্ষেত্রেও।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কালবেলাকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কঠিন হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে প্রাদেশিক সরকারব্যবস্থার আদলে জেলা সরকারকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, এখন তা ভাবতে হবে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন গতকাল কালবেলাকে বলেন, জাতীয় নির্বাচন একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ এবং সেটি ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারীদের বিচার এবং মৌলিক সংস্কারের ওপর নির্ভরশীল। উভয়টিই চলমান। অন্যদিকে জনগণের ভোগান্তি দূর করা এবং সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিতের জন্য আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে চাইছি।
বিশ্লেষক যা মনে করেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হলে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কেননা, রাজনীতিবিদরা সবসময় নির্বাচনে তাদের পেশিশক্তির ব্যবহার করে থাকেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুধু উপরি কাঠামোতে সামান্য পরিবর্তন করে ক্ষমতা নিয়েছে। ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তিতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে। সেখানে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হলে ভিত্তি কাঠামোর রাজনৈতিক পরিসরেও আগের লোকজন ফিরে আসবে। অতএব যারা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার কথা বলেন, তাদের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে। এই চাওয়ার পেছনে মূল উদ্দেশ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা। ৫ আগস্ট পরবর্তী যেসব রাজনৈতিক শক্তি মনে করছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রার্থী জিতিয়ে এনে তারা জাতীয় নির্বাচন প্রভাবিত করবেন, তারা রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ঠিকভাবে অনুধাবন করছেন কি না সে প্রশ্ন রয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে ফ্যাসিবাদের রাজনৈতিক পুনর্বাসন আরও সহজ হবে। কেননা, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ীরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেন। ফলে অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে হওয়া উচিত। তা না হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, হানাহানি বাড়বে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়বে।