Image description

‘ঘুরি যদি তাকাস, তাইলে গুলি মাইরব’ ভারতীয় নাগরিক মিনারুল শেখকে হুমকি দিয়ে পুশইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সদস্যরা। 

পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে দাঁড়িয়ে ভুক্তভোগী মিনারুল শেখ বলেন, আমাকে এবং সঙ্গে আরও কয়েকজনকে কাঁটাতারের বেড়া পার করে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়ার আগে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সদস্যরা এই কথাগুলো বলেছিলেন।

এর পরে মিনারুল শেখ, নাজিমুদ্দিন মণ্ডলসহ এরকম কয়েকজনকে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’।

সেদিন বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে অন্তত চারজন যে ভারতেরই নাগরিক, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ। এর মাত্র একদিনের পরেই বিএসএফ ওই চারজনকে ফিরিয়ে এনেছে।

ভারত থেকে বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করে সম্প্রতি যে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতের নাগরিক এমন অভিযোগ করে আসছিলেন মানবাধিকার কর্মীরা।

এর আগে আসাম থেকে একইভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া অনেক মানুষকে ফিরিয়ে এনেছে সরকার। যদিও তাদের এক সময়ে ওই রাজ্যের ‘বিদেশি ট্রাইব্যুনাল’ বিদেশি বলে ঘোষণা করেছে। তবে তাদের অনেকেই ওই ‘ঘোষণার বিরুদ্ধে’ উচ্চতর আদালতে আপিল মামলা করেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ যাদের বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে এনেছে, তাদের মধ্যেই একজন মেহবুব শেখ। তার বাড়ি ভগবানগোলা থানা এলাকায়।

তার ছোট ভাই মুজিবর বলেন, আমার বড় ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গত মাসে মুম্বাই গিয়েছিলেন। জুলাইয়ের ৯ তারিখে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাইকে পুলিশ ডেকে নিয়ে যায়। আমরা এসব জানতাম না। পরের দিন থানা থেকে আমাদের খবর দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আধার কার্ড, প্যান কার্ড– আমাদের যা প্রমাণ আছে সব নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ার পর সেগুলো ভালো করে চেক করেনি তারা। ফোনে বাংলাদেশি কোনো নম্বর আছে কী না তারা খুঁজছিলেন। এরপর সেখান থেকে আমাদের মীরা রোডে নিয়ে যায় ভেরিফিকেশন করার জন্য।

মুর্শিদাবাদে কয়েকজনকে মহারাষ্ট্রের পুলিশ আটক করেছিল, তাদের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করছিল পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ নামের সামাজিক সংগঠনের প্রধান আসিফ ফারুক।

তিনি বলছিলেন, মীরা রোড থানায় যে পুলিশ কর্মকর্তা তাদের বিষয়টি দেখছিলেন, তার সঙ্গে আমরা বার বার যোগাযোগ করেছি, তাদের সব নথি দিয়েছি। হঠাৎ শুক্রবার রাতে খবরই পাই যে তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আমরা সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছিলাম যাতে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলে সীমানা পার করানো বন্ধ করা যায় কিনা। পরে শনিবার সকালে জানতে পারলাম তাদের বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা