
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে অবজ্ঞা এবং জনগণের রায়কে অবহেলা করে রাজনীতিকরণকে উৎসাহিত করা হলে সেটি শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এবি পার্টির উদ্যোগে দলটির ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে। তারপরেও সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেন এতো সময়ক্ষেপণ করছেন? এ নিয়ে জনগণের মনে ধীরে ধীরে প্রশ্ন বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতের মুখোমুখি করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতি মেরামতের জন্য সংস্কারে কর্মযজ্ঞ চলছে। চলমান সংস্কার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অবজ্ঞা করতে হয় তাহলে সংস্কারের তাৎপর্যটা কী? এটি বহু মানুষের প্রশ্ন আজ।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দলীয় আদর্শ ভিন্ন হলেও আমাদের উদ্দেশ্য দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং জনগণের কল্যাণ সাধন। লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীন বাংলাদেশ, ৭৫-এর ৭ই নভেম্বরে আধিপত্যবিরোধী তাবেদার মুক্ত বাংলাদেশ, ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী বাংলাদেশ এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশ। দেশের ইতিহাসে এমন প্রতিটি বাঁকে মানুষ কেন অকাতরে জীবন দিয়েছিলেন? কী ছিল এই শহীদদের স্বপ্ন? শহীদের স্বপ্ন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবল তাদের আত্মত্যাগের প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা আমরা করতে পারি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ৭১ আর ২৪-এর রাজনৈতিক বার্তাটি হলো- দিল্লির তাবেদার হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে পি-ি ত্যাগ করেনি। ১৯৭৫ সালে ৭ই নভেম্বরে দেশের সিপাহী জনতা এই বার্তাটি দিয়েছিলেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে সভায়, বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারী চৌধুরী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, জাসদের (রব) সধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে কেক কেটে ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।