Image description

সিলেটে গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগপন্থী শ্রমিকনেতা হিসেবে পরিচিত মো. জাকারিয়া আহমদ জামিনে মুক্তি পাওয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে জেলা ও মহানগর বিএনপি। এ বিষয়ে আজ বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দলটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী এ বিবৃতি দেন। স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ এই চার নেতার বিবৃতিটি জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলমের স্বাক্ষরে পাঠানো হয়েছে।

গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার নিজ বাসা থেকে সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

জাকারিয়াকে গ্রেপ্তারের পর মহানগরের কোতোয়ালি থানা–পুলিশ জানায়, গত বছরের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হত্যা ও নাশকতার অভিযোগে জাকারিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছে। জাকারিয়া বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক। তিনি সিলেট জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।

জাকারিয়াকে ‘ডেভিল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ১২ ঘণ্টার মধ্যে একই দিনে পাঁচটি মামলায় তাঁর জামিনের বিষয়টিকে স্থানীয় বিএনপি ‘গভীর উদ্বেগের’ বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে। এতে বলা হয়, অতীতে বিরোধী দল কোনো সমাবেশ আহ্বান করলেই পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়ে জাকারিয়া জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন। আবার হরতাল ও অবরোধে জোর করে যানবাহন চালু রাখতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মালিক–শ্রমিকদের বাধ্য করেছেন। সেই ব্যক্তি অভাবনীয় দ্রুততায় একসঙ্গে এতগুলো মামলায় জামিন পাওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

একই ধরনের মামলায় ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্ন আচরণ আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে না মর্মে আশঙ্কা রয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, ‘সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি মনে করে, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসনামলে বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মনগড়া মামলাগুলোয় জামিন নিতে মাসের পর মাস লড়তে হয়েছে। এমনকি উচ্চ আদালত থেকেও বারবার জামিন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। অথচ আওয়ামীপন্থী ব্যক্তি মাত্র কয়েক ঘণ্টায় জামিন লাভ করায় বিচারিক স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’

একজন ‘ডেভিল–খ্যাত আওয়ামী নেতা’র গ্রেপ্তারে সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট পালিত হওয়ায় অবৈধ সিন্ডিকেট এখনো প্রশাসনিক ছত্রচ্ছায়ায় সক্রিয় রয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এসব অনিয়ম ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে একদিন বিস্ফোরিত হবেই, তাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি অনিবার্য।’ এ অবস্থায় অনতিবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তাঁরা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের প্রতি প্রশাসনিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।