Image description

বাংলাদেশে ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এবং ‘ইসলামি খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য নিয়ে সপ্তাহজুড়ে কম আলোচনা হয়নি ঢাকার রাজনীতিতে। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘অপতথ্য’ ও ‘অর্ধসত্য খবর’ দিয়ে আগুনে ঘি ঢেলে আসছে ভারতীয় মিডিয়া।  বেশিরভাগ রাজনৈতিক ঘটনাকে ‘ধর্মীয় পরিচয়’ দিয়ে ন্যারেটিভ নির্মাণে তৎপর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের জন্য তুলসী গ্যাবার্ডের এ মন্তব্য ছিল ‘কাড়াকাড়ি খবর’।  

তবে ইতিহাস বলছে— বাংলাদেশে ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ইস্যুতে হাসিনা আমলে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে’ উদ্বেগ তুলে ধরেছিলেন তুলসী গ্যাবার্ড।  শুধু তাই নয়, হাসিনার অধীনে ২০১৪ সালের নির্বাচনকে তিনি ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে তুলনা করেছিলেন। বর্তমানে ভারত ও ঢাকায় দেশটির অঘোষিত ‘রাজনৈতিক মিত্র’ আওয়ামী লীগ, সংখ্যালঘু ইস্যুতে যেভাবে মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে চাপ আশা করছে, অথচ আওয়ামী আমলেই তুলসী গ্যাবার্ড এই উদ্বেগ জানিয়েছিলেন।  

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের অপেক্ষা তর সইনি আওয়ামী লীগ ও ভারতের। নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই সংখ্যালঘু ইস্যু দিয়ে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি তৈরি করে। কিন্তু এই ইস্যুতে আগে থেকেই প্রশ্নের মুখে আওয়ামী লীগ।

২০১৫ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যা বলেছিলেন তুলসি 

ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোভিজের কাছে, তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার ও চরমপন্থার ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এটি ‘নতুন কিছু নয়’।  

অতীত সূত্র টেনে ড্যানিলোভিজ বলেন, ‘২০১৫ সালে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে, কংগ্রেস সদস্য হিসেবে তুলসি গ্যাবার্ড এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন’।  

ওই প্রস্তাবে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি, মানবাধিকার, সংখ্যালঘু ধর্মীয় সুরক্ষা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করার পাশাপাশি চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোর উত্থান ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন তুলসি গ্যাবার্ড।

এনডিটিভির সাক্ষাৎকারে তুলসী গ্যাবার্ড

মূলত এটি ছিল দ্বিদলীয় প্রস্তাব। এটি এমন একটি প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত, যা মার্কিন কংগ্রেসের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ই সমর্থন করে।  ওই প্রস্তাবে তুলসীর সঙ্গে ছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের তৎকালীন আরও দুই সদস্য ম্যাট সালমন ও বব ডোল্ড।  তারা তিনজন একত্রে ওই প্রস্তাবে বাংলাদেশে ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন ও পরে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।  

হাউস ফ্লোরে দেওয়া এক ভাষণে গ্যাবার্ড বলেছিলেন— ‘বাংলাদেশ এখন অস্থিতিশীলতার মধ্যে রয়েছে।  গত বছর (২০১৪) অনুষ্ঠিত ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের পর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ছে, যা দেশটির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।  আমি বিশেষভাবে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বিগ্ন।  বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমাগত হামলা হচ্ছে এবং এসব অপরাধের বিচার হয় না।  এটি বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব— যারা সহিংসতা উসকে দেয় এবং সংঘটিত করে, তাদের দমন করা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করা। (এই প্রস্তাব) বাংলাদেশ সরকারকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করার পাশাপাশি চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোর উত্থান ঠেকানোর আহ্বান জানায়’।

ভারতীয় মিডিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বার্তা দেবে না

চার দিনের সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ শীর্ষ ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তুলসী গ্যাবার্ড।  বাংলাদেশ নিয়ে তার এই মন্তব্য এসব বৈঠকের পর কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে করা হয়নি।  তিনি এই মন্তব্য করেছেন এনডিটিভিতে সঞ্চালক বিষ্ণু সোমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক শ্রীরাধা দত্ত

ভারতের ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত মনে করেন, ভারতীয় মিডিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বার্তা দেবে না।  দুই দেশের প্রশাসনের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। কোনো উদ্বেগ থাকলে সেটি ওয়াশিংটন সরাসরি ঢাকাকে জানাবে।

যুগান্তরকে গত মঙ্গলবার শ্রীরাধা দত্ত যেমনটি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না ইসলামিক খিলাফত সম্পর্কে মন্তব্যটি বিশেষভাবে বাংলাদেশের প্রতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি চলমান সমস্যা, যা শুধু সম্প্রতি নয়, বরং আওয়ামী লীগের গত শাসনামলেও ছিল। গত কয়েক মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাগুলো শুধু ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে এবং তারা যদি বার্তা দিতে চায়, তবে তারা সরাসরি বাংলাদেশে যোগাযোগ করে বলবে। তাদের ভারতীয় মিডিয়ার মাধ্যমে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই’।

তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সুইডেনের আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ গবেষণা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আশোক অশোক সোয়াইনের মতে, এই ‘প্রতিবাদ’ জানানোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এ নিয়ে যুগান্তরের সঙ্গে আলাপে আশোক স্বাইন বলেন, ‘টিভি সাক্ষাৎকারে হলেও এমন মন্তব্যের এখনো কূটনৈতিক প্রভাব হতে পারে। গ্যাবার্ড ট্রাম্প প্রশাসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা পদে রয়েছেন এবং তার মন্তব্য ওয়াশিংটনে, বিশেষ করে রক্ষণশীল নীতিনির্ধারকদের মধ্যে, উপলব্ধি প্রভাবিত করতে পারে। বাংলাদেশের জন্য এ রকম মন্তব্যের প্রতি উদ্বেগ থাকা বৈধ। কারণ এমন বক্তব্যগুলো বিদেশি বিনিয়োগ, কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা সহযোগিতায় প্রভাব ফেলতে পারে’।

তার মতে, ‘তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির নিরপেক্ষ বিশ্লেষণের চেয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মূল্যায়ন ছিল, যা ভারতের হিন্দুত্ব প্রভাবিত মিডিয়া এবং ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর ভাষাতত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।  তার হরে কৃষ্ণ কাল্টের সঙ্গে সম্পর্ক এবং ভারতের শাসক দল বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ইঙ্গিত দেয়, তার মন্তব্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়ন থেকে নয়। বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে’।

সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটির শান্তি ও সংঘাত গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক অশোক সোয়াইন। 

তুলস্যী গ্যাবার্ডের সফর থেকে কী পেল আওয়ামী লীগ?

তুলসী গ্যাবার্ডের ভারত সফর ঘিরে নজর রেখেছিল আওয়ামী লীগও।  বলা যায়, মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষপদে আসীন হিন্দুত্ব আদর্শবাদী তুলসীর সফরে নিজেদের পক্ষে যায়, এমন কিছুর অপেক্ষায় ছিল দলটি। এই সফর থেকে আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা অর্জনের মতো কিছু পেয়েছে?

বাংলাদেশের নিবিড় পর্যবেক্ষক অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলছেন, আওয়ামী লীগ সুযোগ খুঁজে বেড়াবে ঠিক, তবে কোনো মন্তব্য দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি পরিবর্তন করবে না।  

তার ভাষায়, ‘আওয়ামী লীগ সব পথ অনুসন্ধান করবে, তবে তুলসী গ্যাবার্ডের একটি মন্তব্যই দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি পরিবর্তন করবে না। যদিও অনেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তবু এটি আওয়ামী লীগের অপকর্মগুলোর জন্য কোনো অজুহাত হতে পারে না।  এমনকি ভবিষ্যতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দলীয় সমর্থকদের সমর্থন পেতে লড়াই করতে হবে’।

৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ সামাজিক মাধ্যমে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ইস্যুতে নানা প্রচার চালিয়ে আসছে। এসব প্রচারাভিযান দেখলে মনে হয় এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নয়, বরং একটি সামাজিকমাধ্যমভিত্তিক সংবাদ চ্যানেল। তাই সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শীর্ষ নেতাদের কোনো মন্তব্য তাদের প্রচারণাকে আরও গুরুত্ব তৈরি করত।

অন্যদিকে ভারতীয় অধ্যাপক অশোক সোয়াইনের ভাষ্য, ‘আওয়ামী লীগ সম্ভবত আশা করেছিল, তুলসী গ্যাবার্ডের সফর তাদের কথিত ন্যারেটিভকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে তুলে ধরবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ তৈরি করবে।  যদিও গ্যাবার্ডের মন্তব্যগুলো উসকানিমূলক ছিল, তবে তা সরাসরি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন নীতি কার্যক্রমে রূপান্তরিত হয়নি’।

‘বৃহত্তর মার্কিন প্রশাসন, যার মধ্যে পররাষ্ট্র দপ্তরও অন্তর্ভুক্ত, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রেখেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে গ্যাবার্ডের মতামত ওয়াশিংটনের আনুষ্ঠানিক অবস্থান নয়।  তা ছাড়া ভারতের সরকারও গ্যাবার্ডের মন্তব্যের সঙ্গে মেলে এমন কোনো বড় মন্তব্য করেনি।  বলা যায়, এ সফরটি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্যভাবে কাজে আসেনি’, আরও যোগ করেন তিনি।

সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোভিজ

এ নিয়ে সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোভিজ বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শপথগ্রহণের পর থেকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সমর্থকরা ট্রাম্প প্রশাসন থেকে কিছু সমর্থনের জন্য আশা করেছিল।  তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদির ওয়াশিংটন সফরের সময় তার প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘‘ডিপ স্টেটের” ভূমিকা নিয়ে কথাটি অগ্রাহ্য করে তাদের হতাশ করেছেন। আওয়ামী লীগ ইউএসএআইডি প্রোগ্রাম সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিতর্কে কিছুটা সুবিধা নিতে চেয়েছিল, কিন্তু তাতে তেমন সফলতা পায়নি। তারা আশা করেছিল, তুলসী গ্যাবার্ডের ভারত সফর ট্রাম্প প্রশাসনের বাংলাদেশ নীতি পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত দেবে, কিন্তু তাও হয়নি।  এদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ তাদের সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজে পাচ্ছে, যার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রও রয়েছে।’

তৃপ্তির সুযোগ নেই

৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ফলে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। নারীদের ওপর নিরাপত্তার হুমকি, মোরাল পুলিশিং, গণপিটুনি, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া— এসব নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।  

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জন যে কোনো রাষ্ট্রের জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ। উপমহাদেশ চিরাচরিতভাবে সংখ্যালঘু ইস্যুতে দেশ কমবেশি অস্থির। অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন বলে আসছে, দেশের নাগরিক হিসেবে সবার অধিকার সমান। ধর্মীয় পরিচয়ে সংখ্যালঘু তকমা দিয়ে সম্প্রদায় বিভাজনে সরকার বিশ্বাসী নয়। 

সিরিয়ার বর্তমান শাসক দল যদি দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ ও আসাদপরবর্তী শাসনব্যবস্থার মধ্যে থেকেও পশ্চিমা বিশ্বকে সংস্কার নিয়ে আশ্বস্ত করতে পারে, বাংলাদেশকেও বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন সহযোগী এবং বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর আস্থা কার্যকরভাবে অর্জন করতে হবে। কোনো সন্দেহ নেই পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসনের আগের নীতি থেকে ট্রাম্প প্রশাসন কিছুটা পৃথক অবস্থানে রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশ নিয়ে সরাসরি কঠোর কোনো অবস্থান গ্রহণ করেনি, বরং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মতো পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়গুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

এতে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আপাতত বড় কোনো নীতিগত পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে না। তবে স্থিতিশীলতা অর্জনের পথ এখনো অনেক দূর বাকি, তাই খুব বেশি তৃপ্তিরও সুযোগ নেই।