Image description

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লংঘন করে ফিলিস্তিনের বেসামরিক নারী-শিশু, কিশোর-কিশোরী হত্যার দায়ে জাতিসংঘ কর্তৃক ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ।

শনিবার (২২ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মহিলা বিভাগের উদ্যোগে এ মানববন্ধন করা হয়।

এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান বলেন, পৃথিবীর সব ধর্মের সব দেশের নাগরিকদের সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সারা বিশ্বে মুসলিমরা নির্যাতিত হলে জাতিসংঘ অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। অথচ বিশ্ব নেতারা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নিজেদের দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে। সারা বিশ্বে মুসলিম নেতাদের হাতে কোনো অমুসলিম নির্যাতিত না হলেও অমুসলিম নেতাদের হাতে মুসলিমদের রক্ত লেগে আছে।

তিনি বলেন, ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল কর্তৃক মুসলমানদের প্রথম কাবা মসজিদুল আকসা দখল করে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিজ দেশ থেকে উচ্ছেদ করতে সন্ত্রাসী নেতানিয়াহু পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লংঘন করে ফিলিস্তিনে বর্বর হামলা চালিয়ে বেসামরিক নারী-পুরুষ, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের হত্যা করেছে। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মুসলিম সম্প্রদায় মনে করবে জাতিসংঘের সমর্থনেই মুসলিমদের হত্যা করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে গণহত্যার দায়ে নেতানিয়াহুকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে। স্বাধীন ফিলিস্তিনে সন্ত্রাসী ইসরাইল কর্তৃক বর্বরোচিত হামলা বন্ধ করতে হবে।

এ সময় ইসরাইলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করে জাতিসংঘের সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ।

এ সময় সাঈদা রুম্মান আরো বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব গত সাপ্তাহে চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে আলোচনা করে জেনে গেছেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠের কোনো বিভাজন বা বিভেদ নেই। সবাই স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। কিন্তু ভারত সরকারের মদদে একটি চক্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ ভারতে মুসলিদের পাশবিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে। মুসলিমদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে দেয়া হয় না।

সাঈদা রুম্মান বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে রাষ্ট্রের কাছে সব নাগরিক সমান। জামায়াতে ইসলামী কোনো সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ সমর্থন করে না। জামায়াতে ইসলামী সব গণহত্যার বিচার দাবি করছে। প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা লাভের পক্ষে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন রয়েছে। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলিম দেশ ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব্যাবপী ইসরাইলি পণ্য বর্জনের ডাক দেন। এ সময় তিনি অবিলম্বে গাজায় পানি, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট পুনসংযোগ করতে এবং জরুরি খাদ্য ও স্বাস্থ্য সহযোগিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদের সদস্য তানহা আজমীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবা খাতুন শরীফা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইসরাইল। যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লংঘন করে ফিলিস্তিনে বর্বর হামলা চালিয়ে ইসরাইল নিজেদেরকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিত করেছে। এই বর্বর হামলার পর বিশ্ব নেতাদের নীরবতা সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে ব্যথিত করেছে। শুধু ব্যথিতই নয়, ক্ষোভের সৃষ্টিও হয়েছে। অনতিবিলম্বে জাতিসংঘ কর্তৃক ইসরাইলি বর্বর হামলা বন্ধ করতে হবে এবং গণহত্যার দায়ে ইসরাইলি বাহিনীকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে। তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ইসরাইলের সব পণ্য বয়কট করার আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি জান্নাতুল কারীম সুইটি বলেন, কোনো সভ্য জাতি গণহত্যা চালাতে পারে না। ইসরাইলি গোষ্ঠী পৃথিবীর ইতিহাসে এক অসভ্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে জাতিসংঘের কাছে দাবি জানাতে হবে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসরাইলের সাথে শান্তিকামী বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরাইলের ওপর যেই নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটি গোপনে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ এক ফ্যাসিবাদ আরেক ফ্যাসিবাদের সাথে সম্পর্ক করে। বাংলাদেশ আওয়ামী ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। সুতরাং এক সাপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরাইলের ওপর সেই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি