Image description
 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ‍’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এর পরই সরব হয়েছেন ছাত্র নেতারা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শুক্রবার তার ভেরিফাইড ফেসবুকে বলেছেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এসব শঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে আসবেন না।

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্পষ্টভাবে বারবার বলছেন ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকশন হবে। আমি নিশ্চয়তা দিতে চাই সরকার এই কথা রাখবে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোন অনিশ্চয়তা নেই।

গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামিলীগ শুধু জাতীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিক ভাবে ইউএন রিপোর্টের মাধ্যমে স্বীকৃত। জনতার ঐক্য জিন্দাবাদ।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন ফেসবুকে বলেছেন, লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য আমরা প্রস্তুত। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ পর্যন্ত এ লড়াই চলবে।

ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম শুক্রবার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের অপচেষ্টা রুখে দিতে ছাত্র-জনতা আবারও প্রস্তুত।

রক্তের দাগ শুকায় নাই। এই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমার ভাইয়ের খুনিদের ফেরানোর কোন চেষ্টা আমরা সফল হতে দিবো না।

জুলাইয়ের মতো আবারও ঐক্যবদ্ধ হোন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন রুখে দিন। গণহত্যাকারীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না।

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সমন্বয়ক ও চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদ তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেন, জলপাই রঙ কিংবা ইন্ডিয়া যারাই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, তা জুলাইয়ের মতোই প্রতিহত করা হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের যারা তাদের এ এজেন্ডায় সায় দিবে তারা উপদেষ্টা থাকার নৈতিক অধিকার হারাবে।

ধীরে ধীরে সব প্রকাশ করা হবে....

যারা ছাত্রনেতা কিংবা ছাত্র উপদেষ্টাদের মাথায় লবণ রেখে বরই খাওয়ার চিন্তা কিংবা চেষ্টা করছেন, সেসকল ব্যক্তিদের মুখোশও উন্মোচন করা হবে।

জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব থেকে যখন কেউ তাদের আওয়ামী পূণর্বাসন প্রক্রিয়ায় সরাসরি বিরোধীতা করেছে, ঠিক তখনি নিউজ মিডিয়া কিংবা তথাকথিত ইন্ফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে তাদের বিতর্কিত করার জন্যে মিডিয়া ট্রায়াল চালানো হয়েছে।

গত দেড়মাস ধরে যার শিকার হয়ে যাচ্ছি আমি নিজেও।

শিকার হয়েছেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, মাহফুজ আব্দুল্লাহ, হাসনাত আব্দুল্লাহসহ প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ।

আর তাদের প্রতিটি প্রপাগাণ্ডায় নিয়মিত অংশ নিয়েছে এদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক সচেতন শিক্ষার্থীসহ, তথাকথিত সুশীলগণও।

কারো তথ্যপ্রমাণহীন পোস্টকে ইউনিভার্সাল ট্রুথ ধরে নিয়ে অনলাইন ব্যাশিংয়ের শিকার করা হয়েছে।

"কিভাবে গোয়েন্দা সংস্থা প্লট সাজায়, আর সেই প্লটের অংশীজন হয়ে উঠে তথাকথিত ইন্ফ্লুয়েন্সাররাও"-লিখেছিলাম কয়েকদিন আগেই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

আজ অন্তত অনুধাবন করুন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, আমি বিএনপি, জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। ছাত্র-জনতা আবারও প্রস্তুত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের অপচেষ্টা রুখে দিতে।

একটি বিষয় স্পষ্ট—জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কোনো বাধা থাকবে না। কিন্তু কেউ যদি শুরুতেই বিভক্তি সৃষ্টি করে, তবে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।

আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি—আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।

শহীদদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। এই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার যে কোনো প্রচেষ্টা আমরা ব্যর্থ করে দেব। আসুন, আবারও ঐক্যবদ্ধ হই—যেমন আমরা জুলাইয়ে হয়েছিলাম।

গণহত্যাকারীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব রাফে সালমান রিফাত ফেসবুকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে জুলাইকে ফিরিয়ে আনা আবশ্যক। অন্যথায় লাভ নাই।

বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, অন্যান্য রাজনৈতিক গোষ্ঠী, সাধারণ শিক্ষার্থী, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, আলেম সমাজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার গণমানুষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জনতার শক্তিই পারে ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে।

চাপে হোক, বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে, এক লাইনে আসতেই হবে। এককভাবে একটিভিজম টাইপ আন্দোলনে নেমে কোনো লাভ হবে না। আপনি এইখানে দানবীয় এস্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে লড়তেছেন, মনে রাইখেন। এইটা শুধু জাতীয় না, আন্তর্জাতিক ইস্যুও বটে। ঐক্যবদ্ধ হই সবাই।

আমার মতে আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধে প্রমিনেন্ট সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা শক্তিশালী এগ্রিমেন্টই হচ্ছে বেস্ট অপশান।

ব্যক্তিগণ তো বিচার প্রক্রিয়ায় আছেই। বিচার হতেই হবে। কিন্তু দলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে হবে রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে।

আমরা চেষ্টা করছি জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে। সমন্বয়ের মাধ্যমে জনতার শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে।

আল্লাহ ভরসা!

উল্লেখ্য ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ‍’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ মার্চ দুপুর আড়াইটায়। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদের বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা না-কি ভালো।