
ইতিহাস বিকৃত করা বন্ধে জামায়াতে ইসলামী ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল।তিনি বলেন, দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার কারণেই আজও জাতি সঠিক ইতিহাস জানে না। ছাত্র-জনতার অর্জিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করার ষড়যন্ত্রের এখনই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কার্যালয়ের সামনে শতাধিক আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের চিকিৎসা সহযোগিতা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না উল্লেখ করে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য বলেন, জামায়াত শহীদের নিয়ে ১০ খন্ডে আড়াই হাজার পৃষ্ঠায় বই প্রকাশ করেছে। এই বইতে শহীদদের পরিচয় ও শহীদ হওয়ার ঘটনা এবং আন্দোলনে ভূমিকা লিপিবদ্ধ আছে। আগামীতে আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের পরিচয় এবং আন্দোলনে তাদের ভূমিকা নিয়ে বই প্রকাশ করা হবে। যাতে করে কোনও অপশক্তি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সূর্য সন্তানদের রাষ্ট্র যথাযথ সম্মান করেনি। রাষ্ট্র যদি প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এক কোটি টাকা করে সম্মানজনক সহায়তা করে তবে ২ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা আওয়ামী লীগ পাচার করেছে, সেই টাকার তুলনায় এই টাকা কিছুই না
বুলবুল বলেন, জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে রাষ্ট্রের আগে শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের তালিকা করেছে, শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে, আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের পাশে রয়েছে। কিন্তু এটি রাষ্ট্র করার কথা থাকলেও রাষ্ট্র সেটি এখনো করতে পারেনি। ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ যেই গণহত্যা চালিয়েছে এই গণহত্যার শিকার প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা করেছে জামায়াত। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে-হাসপাতালে জামায়াত নেতৃবৃন্দ গিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, আহতদের পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব জামায়াতের। ঢাকা মহানগর দক্ষিণে ১৫৫ জন শহীদ পরিবারের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। এভাবে সারাদেশে শহীদ পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা করে পৌঁছানো হয়েছে বলে জানান বুলবুল।
গণহত্যার বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আবারও ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা হবে মন্তব্য করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে রাজনৈতিক সরকার দলীয় স্বার্থে রাষ্ট্রের সংস্কার করবে না। যারা বিগত সময়ে আগে-পরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তারাই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলো ধ্বংস করেছে। তাহলে আগামীতে তারা ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবে না আরো বেশি ধ্বংস করবে সেটি ভেবে দেখতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি আরও বলেন, গণহত্যার বিচার ছাড়া নির্বাচন দিলে রাজনৈতিক সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচার করবে না। ফলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের জীবন ও রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ও পল্টন থানা আমির শাহীন আহমেদ খান।