
মো. জসীম উদ্দিন পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দেশের বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক সম্মেলন, কূটনীতি, এবং বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সম্পর্কের সমন্বয় করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের আমলে ২৭তম পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে দায়িত্ব নেন ফরেন সার্ভিসের ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন।
হাসিনার আমলে কট্টর আওয়ামী সমর্থক ছাড়া কাউকেই জনপ্রশাসক পদক পেতেন না। জসীম অসাধ্য সাধন করেছেন। ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই তিনি এ পদক পান বলে দিনটিকে স্মরণীয় বলে উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।
প্রফেসর ইউনূসের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা তুলে ধরে বহির্বিশ্বে তেমন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই ব্যর্থতা পররাষ্ট্র সচিবের এ ব্যাপারে উদাসীনতার ফল। বহুপক্ষীয় কূটনীতিতেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আওয়ামী দোসরদের অনেককে তিনি বঞ্চিত কর্মকর্তা অভিহিত করে সুপারিশ প্রণয়ন করেছেন। ফ্যাসিস্ট আমলে জসীম উদ্দিন জনপ্রশাসন পদক পেয়েছেন। ওই সময়ে তিনি শেখ হাসিনার হাত থেকে এই পদক গ্রহণ করেন। ওই ছবির একটি পোস্ট তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে আপলোড করে লিখেছেন, ‘২০১৮ সালের ২৩ জুলাই একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে জনপ্রশাসন পদক গ্রহণ করি।’ কট্টর আওয়ামী সমর্থক ছাড়া কাউকেই জনপ্রশাসক পদক দেওয়া হতো না। শুধু তাই নয়, ফ্যাসিস্টদের গণহত্যার বিপক্ষে এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষে সমর্থন আদায়েও বিভিন্ন দেশে থাকা মিশনগুলোতে কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছে না। দ্বিপক্ষীয় বহুপক্ষীয় কূটনীতির ক্ষেত্রেও কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছে না। এছাড়াও, অনেক ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লেজে-গোবরে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে দেশ অগ্নিগর্ভ হলেও জসিম হাসিনা সরকারের অনুগত ছিলেন। তিনি নিজের ফেসবুকে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে পোস্ট দিয়েছেন। হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এবং দিল্লিতে বসে হাসিনার বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের ব্যাপারে তিনি ভারতের ওপর সামান্যতম চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি দূতাবাস বর্তমানে আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী সরকারের সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির সুপারিশে টাকার বিনিময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত তার এলাকার প্রায় ৩০ কর্মচারী বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করছেন। পলাতক সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম রাজশাহীর নিজের নির্বাচনি এলাকা থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রায় ৯০ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন।