![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/8fa253fbf091817e2cf50136773769d7.png)
জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। এই প্রতিবেদন তৈরির সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো প্রতিনিধি তাদের দলের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেননি বলে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যদিও প্রতিবেদেন জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ছাত্রশিবির ছাড়া অন্য কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে- এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
গতকাল বুধবার (১২ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের ১০ নম্বর পৃষ্ঠায় জামায়াত ও শিবিরের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের অনুরোধ জানিয়েছিল, তবে দলটির পক্ষ থেকে সাক্ষাত করা হয়নি। এছাড়াও, জামায়াতে ইসলামী দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে সাধারণভাবে বিবেচিত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কাছে সাক্ষাৎকারের অনুরোধ পাঠানো হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। তবে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের বেশ কয়েকজন সমর্থকের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।’
এদিকে জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন তারা। অন্যদিকে, শিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন সময় জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সাথে শিবিরের অনেকের দেখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের কমিশন কার্যালয়ে বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিনিধি দল আমাদের সাথে যখনই যোগাযোগ করেছে, আমরা রেসপন্স করেছি। কিন্তু প্রতিবেদনে এটা কীভাবে এলো, আমরা চেক করবো। আমরা যাচাই করে দেখেছি, প্রতিবেদনে যে তথ্য এসেছে তা সঠিক নয়।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় এক নেতা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাংলাদেশের থাকতে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি। তবে বিভিন্ন সময় জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সাথে শিবিরের অনেকের দেখা হয়েছে। পরে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে। তার প্রেক্ষিতে আমরা দ্রুতই তাদের কাছে ই-মেইল পাঠাবো। এছাড়া তাদের প্রতিবেদনে শিবিরের নাম বেশ কয়েকবার উল্লেখও আছে। শুধু তাই নয়, আমাদের একটি বিবৃতিও তাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন।
এ বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন মুজতবা খন্দকার নামের এক ব্যক্তি। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলকে সাক্ষাৎকার তো দূরের কথা দেখাও করতে চায়নি সেনাপ্রধান ও ডিজিএফআই প্রধান। তাদের দেখা না করার বিষয়টি অনুমিত। তবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বিএনপি নেতাদের সাথে দেখা করেছেন, তাঁদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন। কিন্তু জামায়াত, শিবিরের কেউ জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলকে কোন ধরনের সহযোগিতা এমনকি দেখা করতেও রাজি হয়নি। যেটা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এমনকি পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার ক্ষমতায় উচ্ছিষ্টভোগী জাপার নেতারাও তদন্ত দলকে সহযোগিতা করেছে, তথ্য দিয়েছে। কিন্তু জামায়াত কেন জাতিসংঘের তদন্ত দলকে অসহযোগিতা করলো। হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল তো দলটির জন্য বিভীষিকাময় ছিল। তারপরও কেন তাদের এমন রহস্যময় আচরণ।জামায়াত নেতাদের কাছে তাদের এই নীরবতার ব্যাখ্যা কি আমরা চাইতে পারি না?’