
দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি জাতীয় কাউন্সিল করতে যাচ্ছে। আগামী জুনে দলের সপ্তম এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে পারে। এজন্য দায়িত্বশীলদের দুই মাসের মধ্যে ৮২টি সাংগঠনিক জেলা ও অধিভুক্ত উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নয় বছর আগে বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ।
দলটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিএনপির ওপর হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন, অত্যাচার-নির্যাতনসহ নানা কারণে তারা নির্ধারিত সময়ে দলের জাতীয় কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারেননি। বর্তমানে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এখন জাতীয় কাউন্সিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকগুলোতে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অধিকাংশ নেতা এখনই কাউন্সিল করার পক্ষে অভিমত দিয়েছেন। বৈঠক থেকে কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঘোষণার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্বশীলরা আভাস দিয়েছেন, এবার কাউন্সিলে থাকছে নতুন-নতুন চমক। পরিবর্তন হবে দলীয় গঠনতন্ত্রের কিছু ধারা-উপধারা। দীর্ঘ নয় বছর পর দলের কাউন্সিলে ১৬ বছর রাজপথে থাকা নেতাদের আমলনামা অনুসারে ভাগ্য নির্ধারণ হবে। যোগ্য, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করে নবরূপে সাজানো হবে বিএনপিকে।
কাউন্সিলের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের সীমাহীন নির্যাতনে বিএনপি তখন স্বাভাবিক দলীয় কর্মকান্ড চালাতে পারেনি। তাই উদ্যোগ নেওয়ার পরও দলের জাতীয় কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি। এখন রাজনীতির পরিবেশ এসেছে। তাই দলের জাতীয় কাউন্সিলও হবে। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিএনপির ইউনিটভিত্তিক কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেওয়া হচ্ছে। এই কার্যক্রম শেষ হলে জাতীয় কাউন্সিল করা হবে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ৫ আগস্টের পর নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে ভাবছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। এদিকে বিএনপির ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতা-কর্মীদের আশা, নেতৃত্বে তাদের জায়গা দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন কাউন্সিল না হওয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে অনেক কমিটি।
স্থায়ী কমিটি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোতে এখনো প্রায় ১২০টি পদ শূন্য রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা সংগঠনের চলমান প্রক্রিয়া। তবে জাতীয় কাউন্সিল হলে সংগঠনটি নতুন নেতৃত্ব পায়। দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে থাকা ত্যাগী, সংগ্রামী, পরীক্ষিত নেতারাই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ পান। এতে ত্যাগীরা যেমন মূল্যায়িত হন, তেমনি সংগঠনও শক্তিশালী হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেন।