Image description

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ছাত্রলীগ নেতা থেকে চেয়ারম্যান হয়ে মির্জা আশরাফুজ্জামান রাসেল শূন্য থেকে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। চার বছর আগে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়ে ওই ইউনিয়নের জনগণের কোনো পরিবর্তন না হলেও, তার মালিকানায় রয়েছে দুটি ব্রিকফিল্ড।

সরকার পতনের পর কাটা ভোটের সব চেয়ারম্যানরা পালিয়ে গেলেও বর্তমান সময়ের স্থানীয় কিছু নেতাদের ম্যানেজ করে তিনি আছেন বহাল তবিয়তে।

জানা যায়, মির্জা আশরাফুজ্জামান রাসেল ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তখনকার সময়ে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগরের) আসনে সংরক্ষিত নারী সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী। মূলত লাইলীর হাত ধরেই তার উত্থান। এরপর থেকে ঢাকায় আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেত্রীর ছত্রছায়ায় থাকতেন রাসেল। কিছু দিন রাসেল ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের নেতাও ছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

 

এরপর ফরিদুন নাহার লাইলীর প্রচেষ্টায় ২০২১ সালে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পান। ওই বছরের ২১ জুন নির্বাচনে সাবেক চেয়ারম্যান তার খালাতো ভাই ফয়সাল আহমেদ রতনকে মাঠে দাঁড়াতে দেয়নি প্রশাসন ও তার লোকজন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন এলজিএসপি, কর্ম সৃজন কর্মসূচি প্রকল্প, টিআর, কাবিখা ও কাবিটাসহ কোনো প্রকল্পেরই কাজ সঠিকভাবে হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সব প্রকল্পের টাকা একাই আত্মসাৎ করেন তিনি। ওই টাকা দিয়ে তার ইউনিয়নে গড়ে তোলেন দুটি অবৈধ ইটভাটা।

বর্তমানে তার এ অবৈধ ইট ভাটায় প্রায় ৫-৭ কোটি টাকার কার্যক্রম চলছে বলে জানা যায়। এছাড়াও চেয়ারম্যান হওয়ার প্রথম বছরই ৮নং ওয়ার্ডে ৩ একর ২০ শতাংশ জমি কেনেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ওই ইউনিয়নের ৩নং ও ৫নং ওয়ার্ডের নুরুল ইসলাম, নুর করিম, ফয়েজ আহমদ ও হোসেন আহম্মদ জানান, গত চার বছরে তাদের ওয়ার্ডে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। একদিনের জন্যও তাদের এলাকায় চেয়ারম্যানকে দেখেননি তারা।

ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মতিন জানান, রাসেল চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার ওয়ার্ডে কোনো বরাদ্দ দেয়নি। এছাড়াও কোনো ইউপি সদস্যকে তিনি পাত্তা দেন না। জনগণকে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবাই মেম্বার হয়েছেন; কিন্তু চেয়ারম্যান একাই ওই ইউনিয়নের সব প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করছেন। যার কারণে সব ইউপি সদস্য এলাকায় তোপের মুখে রয়েছেন।

এদিকে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা আশরাফুজ্জামান রাসেল দাবি করেন, তার ইউনিয়নে বেশিরভাগ রাস্তাই পাকা এবং সলিং। ৩-৪টা মাটির রাস্তা আছে সেগুলোতে কিছু কাজ তিনি করেছেন। জমি ক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, জমি আমার মায়ের টাকায় কেনা হয়েছে। আর একটা ব্রিকফিল্ড আমার আরেক মামার।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস কালবেলাকে বলেন, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ শুনেছি।