![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/4340b8387b3bd5e65b386c6eed46efa3.png)
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমার আরো অনেক আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন আমির ছিলেন, এই নারায়ণগঞ্জের গড ফাদার খ্যাত একজন দুর্ধর্ষ লোক মহাসড়কের পাশে ৭২ ফুট লম্বা একটা ব্যানার নিয়ে রেখেছিলেন। উনি সেই ব্যানারে লিখেছিলেন, অমুকের প্রবেশ নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ। আরেক ধাপে এগিয়ে তিনি জেলা প্রশাসক এবং জেলার পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে একটা সভায় বলে রেখেছিলেন, ডিসি-এসপি সাহেব, আমার নামে খুনের একটি অগ্রিম মামলা দায়ের করে রাখেন। আমি অধ্যাপক গোলাম আজমকে খুন করতে চাই।
স্বৈরাচারী সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন কিন্তু গড ফাদারের সুযোগ হয় নাই, সরাসরি তাকে খুন করার। এই অধ্যাপক গোলাম আজম সাহেবকেই তিনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন নারায়ণগঞ্জের মাটিতে। যে ভাই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, আজকে তিনি কোথায়? তিনি কি নারায়ণগঞ্জে আছেন!
অহংকার ভালো জিনিস নয়। গর্ব-অহংকার করতে নাই, দাম্ভিকতা দেখাতে নাই। ক্ষমতার জোরে ছড়ি ঘুরাতে নাই। মানুষকে খুন করতে নাই, সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিতে নাই, সন্ত্রাসীদেরকে লালন করতে নাই। এই কাজগুলো যারা করেন, দুনিয়ায় তারা তাদের করুণ পরিণতির একটা অংশ ভোগ করেন এবং আখেরাতে আদালতে এট দ্যা ডে, ফাইনাল জাজমেন্ট, আল্লাহতায়ালা তাদেরকে শুলে চড়াবেন। সে শুলটা বাংলাদেশের, বিভিন্ন দেশের বিদ্যমান শুলের মত নয়, সেটা আগুনের মহাকুণ্ড। আল্লাহকে ভয় করুন। দাম্ভিকতা, অহংকার পরিহার করুন। তওবা করুন। আগে মানুষ হন, তারপরে মুমিন হোন।
বাংলাদেশের সংবিধান সকলকে সমান অধিকার দিয়েছে, সাংবিধানিক অধিকার কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কষ্টের বিষয়, ৫৪ টা বছর এই জাতিকে বিভিন্নভাবে ভাগ, বিভক্ত, টুকরা-টুকরা করে রাখা হয়েছিল। এই কাজটা সুকৌশলে আওয়ামী লীগ করেছে। তারা প্রথমেই পার্বত্য এলাকার লোকদেরকে উচকায় দিল। নেতা বললেন, বাংলাদেশে যারা বসবাস করে তাদের সকলের একমাত্র পরিচয়, তারা বাঙালি। এখানে যারা থাকবেন বাঙালি হয়ে থাকতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম তার এই কথায় প্রতিবাদে গর্জন করলো, অস্থির হয়ে উঠলো। আমরা বাঙালি নই, আমরা পাহাড়ি। তিনি একটা বিভক্তি প্রথমেই টেনে দিলেন। সেই যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত হলো, আজ পর্যন্ত আর শান্তি ফিরে আসে নাই। শান্তি বাহিনী নামে একটা বাহিনী গঠন হলো। তাদের হাতে ১০,০০০ সামরিক কর্মকর্তা এবং আমাদের সৈনিক নিহত হলো, সাধারণ মানুষ নিহত হলো। এমনকি তারা নিজেদের মাঝে আবার বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে, নিজেরা নিজেদেরকে খুন করলো। সেই যে খুন ঝরা শুরু হলো, সেই খুন ঝরাটা এখনো অব্যাহত থাকলো।
স্বাধীন দেশে একজন নাগরিক, সংবিধান তাকে যে কয়টা মৌলিক অধিকার দিয়েছে, সব কয়টি অধিকার এই দেশে নিশ্চিত হবে। শাসন ক্ষমতায় যারা যাবেন, তাদের অধিকার নিশ্চিত করা ওদের দায়িত্ব, এটা কোন দয়ার দান নয়। তার বাঁচার অধিকার, তার সম্মান রক্ষার অধিকার, বিচার পাওয়ার অধিকার, স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার, তার সন্তানের শিক্ষা পাওয়ার অধিকার, মানুষ হিসেবে মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার অধিকার, তার কাজের অধিকার, সবকিছু তার হাতে তুলে দিতে হবে।
এটাই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা। এই সমাজটা হবে বৈষম্যহীন। এই সমাজ হবে মানবিক। এই সমাজ হবে মানবিক। এই সমাজ হবে সমস্ত সমাজকে ধারণ করার, সমস্ত মানুষকে ধারণ করার সমাজ। কিন্তু না, তারা তা করেননি। তারা সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছিলেন। যতগুলা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ছিল, সব তারা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।