Image description
 

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ যে সরকারকেই বেছে নিক না কেন ভারত তার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’ তিনি এটাকে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি হিসেবেই দেখাতে চেয়েছেন। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এর মাঝে অন্য কিছু শুনতে পাচ্ছেন। তার কথা ২০১৪ সালের পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দেয়। সেবারও ভারত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ আড়াল করতে এমন অস্পষ্ট ও ধোঁয়াটে ভাষা ব্যবহার করেছিল।

 

বহু বছরের দুর্বল গণতন্ত্র এবং বাইরের মদতপুষ্ট শাসন থেকে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশ। মিশ্রির কথাগুলো ততটা নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না। বরং একটা প্রচ্ছন্ন হুমকির মতো মনে হচ্ছে। বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারত এখনো অদৃশ্য শক্তি হিসেবে থাকতে চায়।

 

মিলগুলি খুবই পরিষ্কার। ২০১৩ সালের শেষ দিকে এবং ২০১৪ সালের শুরুতে বিরোধী দল সাজানো নির্বাচন বর্জন করেছিল। ভারতের সে সময়ের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং দ্রুত ঢাকায় এসেছিলেন তখন। তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি করান। এতে নির্বাচনকে সুষ্ঠু দেখানোটা সহজ হয়েছে। তাছাড়া শেখ হাসিনার জন্য জয়ী হওয়াটাও সহজ হয়ে গিয়েছিল। ভারতও ঢাকার নেতাদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্কটা ধরে রেখেছিল।

 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখন ২০২৬ সালের প্রথম দিকে নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়েছে। মিশ্রির কথাগুলো ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনার সঙ্গেও মিলে যায়। দেখে মনে হচ্ছে, পুরোনো পরিকল্পনা আবার ফিরে এসেছে। তারা ‘স্থিতিশীলতা’ এবং ‘সহযোগিতা’র মতো শব্দ ব্যবহার করছে। কিন্তু লক্ষ্য তাদের বদলায়নি। ভারত এমন ফলাফল চায়, যা তাদের স্বার্থের জন্য ভালো হবে।

 

আধিপত্যের পুনর্জন্ম

বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের ইতিহাস ভারতের রয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের উত্থানে সমর্থন দিয়েছিল। শেখ হাসিনার শাসনামলে তারা কিছু অন্যায্য চুক্তিও করেছে। এই ধারাটা তাদের পুরোনো। আঞ্চলিক শান্তির বুলির আড়ালে ভারত সবসময় তার আগ্রাসী চেহারা লুকিয়ে রাখে।

 

দ্রুত নির্বাচন সম্পর্কে মিশ্রির সাম্প্রতিক কথাগুলো শুনলে ভালোই মনে হবে। তিনি বলেছেন, ভারত কোনো পক্ষ নেয় না। কিন্তু বাস্তবে ভারত আসলে উদ্বিগ্ন। ২০২৪ সালের আগস্টে হাসিনার পতন হয়। তখন থেকেই ঢাকার ক্ষমতার কেন্দ্রে বিশেষ প্রবেশাধিকার হারিয়েছে ভারত।

 

ভারত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি চায়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রানজিটও তাদের দরকার। এগুলোর সঙ্গে গণতন্ত্রের সম্পর্ক নেই। এগুলো ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তির অনুষঙ্গ।

 

হস্তক্ষেপের ব্যবচ্ছেদ

বাংলাদেশ নির্বাচনগুলোতে ভারত গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভারত তিনটি নির্বাচনে সহায়তা করেছে। প্রতিটি নির্বাচনই হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। আর প্রতিটি নির্বাচনই বাংলাদেশকে ভারতের ওপর আরো বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।

 

২০১৪ সালের নির্বাচনে গণতন্ত্র ছিল না। সেটা ছিল সাজানো কৌশলে ক্ষমতা বদল। বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করেছিল। অর্ধেকের বেশি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না। হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে এবং তার সরকারকে বৈধ দেখাতে সাহায্যের দরকার পড়েছিল। আর ভারত সেই সাহায্যই নিয়ে এসেছিল।

 

সুজাতা সিং তখন ঢাকা সফরে এসেছিলেন। তিনি জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি করান। সেটা ছিল আসলে কৃত্রিম পন্থায় পরিবেশ তৈরির চেষ্টা। ভোটাররা হুমকির মুখে পড়েছেন। ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪০ শতাংশের কম। কিন্তু ভারত দ্রুত ফলাফলকে মেনে নেয়। এটাকে তারা ‘সাংবিধানিক প্রয়োজন’ হিসেবে তুলে ধরে। ভারত তখন কৃত্রিম বৈধতা উৎপাদন করেছিল। বিশ্ব এটাকে দেখেছিল প্রহসন হিসেবে। কিন্তু ভারত তার মিত্রকে ঠিকই ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছিল।

 

২০১৮ সালের নির্বাচনেও একই ধারার পুনরাবৃত্তি করা হয়। ৩০০টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮৮টিতে জিতে যায়। এটি এতটাই একতরফা ছিল যে, দলের সদস্যরাও তখন অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলেন। খবরের প্রতিবেদনে তখন আগাম ব্যালট বাক্স ভরা, ভোটের আগে গ্রেপ্তার এবং ভোটারদের ভীতির কথা উঠে এসেছিল।

 

ভারত প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিল। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগেই তাকে ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভোটের ফলকে তিনি ‘স্থিতিশীলতার জয়’ আখ্যা দেন। এর অর্থ হলো ভারতের জন্য ট্রানজিট, নিরাপত্তা চুক্তি এবং বাজার সুবিধা চালু থাকবে।

 

অনেক বাংলাদেশিই মনে করেন, ভারতের ‘র’ বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ আর দলীয় কর্মীদের সঙ্গে তখন কাজ করেছে। ইচ্ছামতো ভোটের ফলের জন্য তারা রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স ভরেছিল।

 

২০২৪ সালের জানুয়ারি নাগাদ নির্বাচনটা পুরোপুরি লোকদেখানো হয়ে উঠেছিল। ৮৫ শতাংশের বেশি আসনে জিতে যায় আওয়ামী লীগ। তবে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। বিরোধী দলের নেতারা হয় কারাবন্দি ছিলেন, নয়তো দেশ ছেড়েছিলেন। মুখ খোলা বা প্রতিবাদ করা তখন ছিল রীতিমতো অপরাধ।

 

এই নির্বাচনকেও ভারত বেশ তাড়াতাড়িই স্বীকৃতি দেয়। তারা বলেছে, এটা ছিল নাকি ‘জনগণের ইচ্ছা’। অন্যদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থাগুলো একে সাজানো আর ভুয়া নির্বাচন বলে আখ্যা দেয়। এই স্বীকৃতির আড়ালে ভারত কিছু অন্যায় চুক্তি বহাল রাখতে চেয়েছিল। এর মধ্যে ছিল আদানি বিদ্যুৎ চুক্তি, ট্রানজিট বা করিডোর সুবিধা এবং তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে নীরবতা ধরে রাখা।

 

প্রতিটি নির্বাচনই ভারতের নিয়ন্ত্রণকে আরো শক্ত করেছিল। তাদের প্রতিটি স্বীকৃতিই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছিল। ভারত এটাকে ‘স্থিতিশীলতা’ বললেও সেটা ছিল আসলে নিয়ন্ত্রণ মজবুত করা। হাসিনার প্রতি ভারতের সমর্থন বুঝতে হলে বাংলাদেশকে ভারতের বৃহত্তর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে দেখতে হবে। ভারতের অর্থনীতি আর নিরাপত্তার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

নিয়ন্ত্রণের করিডোর

হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ ভারতের ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়। এর মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সমুদ্রের সঙ্গে যুক্ত হয়। ২০১০ সালের বিভিন্ন চুক্তিতে ভারতকে স্থল ও নদীপথ ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের অবকাঠামো তখন কার্যত ভারতের সেবায় নিয়োজিত হয়।

 

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বার্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি তখন ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এই বাণিজ্য ছিল অসম। আদানি চুক্তির মতো জ্বালানি চুক্তি বাংলাদেশকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করে। আর বিশাল মুনাফা করতে থাকে ভারতীয় সংস্থাগুলো। এগুলো ছিল ভারতের ক্ষমতার হাতিয়ার। আর বাংলাদেশের জন্য এগুলো ছিল হাসিনার শাসনের মূল্য।

 

ভিন্নমতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা

হাসিনা ভারতের নিরাপত্তায় সহায়তা করেছেন। গোয়েন্দা ও পুলিশি কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে যোগ দেয়। ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহ আর রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চিন্তিত ছিল। এগুলো সামলানোর দায়িত্ব তারা ঢাকাকে দিয়েছিল। বিনিময়ে বাংলাদেশ তার নিজের দেশের বিরোধীদের দমন করেছিল। নিরাপত্তাকে অজুহাত বানিয়ে তারা এই কাজ করেছিল।

 

ভারতের প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনকে ঠেকানো। হাসিনা বাংলাদেশকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের সঙ্গে খুব বেশি যুক্ত করেননি। চীন সেতু ও বন্দর তৈরি করেছে; কিন্তু হাসিনা ভারতকেই সমর্থন দিয়ে গেছেন। এই সমর্থন বঙ্গোপসাগরে ভারতকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করেছে। ইউনূসের সরকার ভারসাম্য চায়। তারা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। এটি ভারতের হিসাবনিকাশ পাল্টে দিতে পারে।

 

ভারত প্রতিটি পাতানো নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে গেছে। তাদের এই স্বীকৃতি পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ কমাতে কাজ করেছে। বিনিময়ে বাংলাদেশ তিস্তা এবং সীমান্তে মৃত্যুর মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রায় চুপ থেকেছে। এটি ছিল ভারতের কোমল ক্ষমতার হাতিয়ার। তারা কথা চালাচালি করে গণতন্ত্র পরিচালনা করেছে, সত্যিকারের ভোটের মাধ্যমে নয়।

 

আনুগত্যের মূল্য

ভারত যে স্থিতিশীলতা চেয়েছিল, তাদের প্রভাবই সেটা ধ্বংস করেছে। কারচুপি করা সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে আসল গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ভারত নিজেদের সুবিধা নিশ্চিত করেছে।

 

পরিবর্তনের দাবিতে ২০২৪ সালে তরুণ বাংলাদেশিরা প্রতিবাদে নেমেছিল। তারা ভারতকে এমন বহিরাগত শক্তি হিসেবে দেখে, যারা দমন-পীড়নকে টিকিয়ে রেখেছে। ভারত একসময় ছিল মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বন্ধুপ্রতিম দেশ; কিন্তু এখন তারা নিয়ন্ত্রক।

 

এই বিশ্বাস হারানোটাই ভারতের জন্য বড় সমস্যা হয়ে গেছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব বাড়ছে। এই অনাস্থার জন্ম হয়েছে অন্যায় চুক্তি, দুর্বল বাণিজ্য আর সাহায্যের আড়ালে ভারতের কর্তৃত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণের কারণে।

 

নতুন প্রভাত নাকি পুরোনো ছায়া

হাসিনার বিদায় হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় এসেছে। ইউনূসের সরকার সংস্কার শুরু করেছে। তাদের লক্ষ্য অবাধ নির্বাচন ও সমতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্র সম্পর্ক গড়ে তোলা।

 

ভারতের জন্য এটা একটা পরীক্ষা, আবার একটি সুযোগও বটে। পরীক্ষাটা হলো বাংলাদেশকে সমমর্যাদার চোখে দেখা। আর সুযোগটা হলো কূটচাল নয়, বরং সম্মানের ভিত্তির ওপর সম্পর্ক গড়ে তোলা। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ক্ষমতা জোর-জুলুম বা পুতুল সরকার দিয়ে টিকতে পারবে না। সত্যিকারের নেতৃত্বের অর্থ হলো শক্তিশালী ও স্বাধীন প্রতিবেশী, দুর্বল নয়।

 

২০২৬ সালের নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। ভারতকে এখানে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারা কি ঢাকার ভাগ্য নির্ধারণে নাক গলানো বন্ধ করতে পারবে? তারা কি বন্ধুত্ব আর নিয়ন্ত্রণকে আলাদা করে দেখতে পারবে? বাংলাদেশের জন্যও এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লড়াইটি অবাধ ভোটাধিকার এবং বাইরের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের জন্য। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান দেখিয়ে দিয়েছে, জনগণ আর কোনো কৃত্রিম বৈধতা বা ধার করা স্বাধীনতা মেনে নেবে না।

 

সামনের বছরগুলো বলে দেবে দক্ষিণ এশিয়া আধিপত্যের রাজনীতি পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারবে কি না। ভারতকে অবশ্যই পিছু হটতে হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে তার নিজস্ব আলোয় বিকশিত হতে দিতে হবে।

 

ক্ষমতার ছায়া, স্বাধীনতার শিক্ষা

বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ভারতের ভূমিকা একটি ধাঁধা এবং একটি শিক্ষণীয় বিষয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সহায়তাকারী হিসেবে এই সম্পর্কের শুরু হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণে পরিণত হয়। বন্ধুত্ব রূপ নেয় প্রভাবে। প্রভাব হয়ে ওঠে হস্তক্ষেপ।

রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে গিয়ে ভারত দূরত্ব বাড়িয়েছে। দ্রুত সুবিধা পাওয়ার লোভ দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের নৈতিক অবস্থানকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশ তার মূলে ফিরে এসেছে। তরুণ প্রজন্ম সমতা চায়, নত হতে চায় না। ইউনূসের সরকার মর্যাদা আর সার্বভৌমত্বকে মিলিয়ে দেখছে, কারো ক্ষোভের সঙ্গে নয়।

 

ভারতের বোঝা উচিত, গণতন্ত্র বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। বৈধতা সস্তা চুক্তির মাধ্যমে আসতে পারে না। যারা প্রতিবেশীদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দেয়, তারাই আসলে প্রকৃত নেতা।

 

নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘মুক্ত হওয়া কেবল শৃঙ্খল থেকে মুক্তি নয়, বরং এমনভাবে জীবনযাপন করা, যা অন্যের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং উন্নত করে।’ পদ্মা ও তিস্তার ওপর দিয়ে সেই কথাগুলো ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আধিপত্য ঘৃণার জন্ম দেয়। শুধু কথা দিয়ে ভাঙা বিশ্বাসকে জোড়া লাগানো যায় না। ভারত যদি দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি চায়, তবে তাকে নিজের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশকে এবং এই অঞ্চলকে তাদের নিজস্ব আলোয় দাঁড়াতে দেওয়া উচিত।

 

সিরাজুল আই. ভুঁইয়া