
শাহীদ কামরুল
আজকের লেখাটি লেখার সময় বিখ্যাত নোবেল লরিয়েট আইরিশ নাট্যকার, কবি ও ঔপন্যাসিক স্যামুয়েল বেকেটের ‘ওয়েটিং ফর গডো’ নাটকটির কথা মনে পড়ল। বেকেট তার নাটকে দেখাচ্ছেনÑভ্লাদিমির ডিডি ও স্ট্রাগন গুগু নামের দুজন অসহায় মানুষ অনন্তকাল ধরে অপেক্ষা করছে গডো নামের একজনের জন্য। কিন্তু হায়! গডো তো আর আসে না।
এরপর একটা বালক এসে নিজেকে গডো-এর শেফার্ড হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলে, গডো আজ আসবে না, আগামীকাল আসবে। তখন এ দুজন প্রোটাগনিস্ট অপেক্ষা করতেই থাকে এন্টাগোনিস্ট গডোর জন্য, এভাবে অন্তহীন অপেক্ষা করতেই থাকে কিন্তু গডো আর আসে না।
আসলে নাটকের বালকটি হলো একটি মিথ্যা আশ্বাসের প্রতীক। আর গুডোর অর্থ বিভিন্ন পার্সপেকটিভ থেকে হতে পারে, তবে আমি অর্থ করতে চাই রাজনৈতিক মুক্তির প্রতীক হিসেবে। বস্তুত বাংলাদেশের মানুষও ৪৩ বছর ধরে গডোর জন্য এন্তেজার করছে, অবশেষে সৌভাগ্যক্রমে ২০২৪ সালে জুলাই ৩৬ উছিলায় গডো এলো। কিন্তু! কিছু আদমির কাছে গডো পছন্দ না বা পছন্দ করতে পারছে না। নিয়তির পরিহাস যেন বড় বাংলার মানুষের সবচেয়ে বড় নিয়তি।
৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর কেউ না কেউ তো প্রধান উপদেষ্টা হতেন। কল্পনা করুন ড. ইউনূস ছাড়া অন্য কেউ প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন। তাহলে সেই প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্ব কি বিদেশি চাপ, দেশি চাপ ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চাপ নিতে পারত? অন্য দেশের কথা বাদ দেন। ভারতের চাপই নিতে পারত না। বিএনপি এখন নির্বাচন নির্বাচন জিকির করে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে ফেলছে। বিএনপি ও জামায়াত কি সেই চাপ নিতে পারবে? পারবে না, এটা তারা ভালো করেই জানে। আর জানে বলেই তারা নিজেদের অবস্থানকে নতুন করে ক্যালিব্রেট করছে, টের পাচ্ছেন কাদের খুশি করার জন্য? ড. ইউনূসকে ক্যালিব্রেট করতে হয় না।
বরং অন্যদের ক্যালিব্রেটি করতে হয়। বাংলাদেশের সর্বস্তরে কারা নেতৃত্ব দিয়ে আসছে, তার একটু সার্ভে করে দেখুন। ডাটা কী বলে বুঝুন। বিগত বছরগুলোয় কারা নেতৃত্ব দিয়েছে? কোথাও কি মেধা ও যোগ্যতার মূল্যায়ন ছিল? তাই আমরা খারাপ মানুষদের দ্বারা শাসিত হয়ে অভ্যস্ত হয়ে এমনভাবে পচে গেছি যে ভালো মানুষদের মূল্যায়ন করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি। আসলে আমাদের হালত অনেকাংশেই ট্যানারির পাশে থাকা সেসব মানুষের মতো, যারা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে ট্যানারি থেকে আসা বিকট দুর্গন্ধের সঙ্গে। তাই, নয়া উমদা মাওকায় বাস করে যখন বাসার জানালা দিয়ে ফুলের গন্ধ নেয়, তখন বাসার কারো কারো ফুলের দুর্গন্ধের কারণে ঘুম আসে না, ফলে চামড়ার ব্যাগ নাকের কাছে রেখে ঘুমায়। বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা হয়েছে ঠিক তেমনি। ভালো মানুষ আর ভালো শাসন আমাদের এখন আর ভালো লাগে না।
অনেক আগে ২০১৫ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে এক কনফারেন্সে একজন সাংবাদিক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেছিলÑ‘আপনি এমন এক বয়সে পৌঁছেছেন, যখন অনেক মানুষ অবসর গ্রহণ করে। কিন্তু আপনি এখনো ব্যস্ত একজন মানুষ। যদিও আপনি আর গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা করেন না, তবু আপনি ইউনূস সেন্টারের চেয়ারম্যান, যা বিশ্ব সমস্যার সমাধানে নিবেদিত ব্যবসাকে উৎসাহিত করে। এ ছাড়া আপনি বিভিন্ন প্যানেল আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।’ ড. মোহাম্মদ ইউনূস তখন জবাব দেনÑঅবসর শব্দটিকেই অবসরে পাঠানো উচিত। কারণ অবসর শব্দটি খুবই ক্ষতিকর। অবসরে যাওয়া মানে আপনার আর কোনো প্রয়োজন নেই, আপনার কাজ শেষ। একটি জাহাজ যখন আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না, তখন সেটিকে অবসরে পাঠানো হয়, অপ্রয়োজনীয় হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু একজন মানুষ কোনো যন্ত্র নয়, যাকে অকেজো করে রেখে দেওয়া যাবে।
ড. ইউনূস আরো বলেন, ‘জীবনের প্রথম ধাপে আমরা বড় হই, পড়াশোনা করি, বিয়ে করি, সন্তান লালনপালন করি, কাজ করি এবং দায়িত্বের চাপে থাকি। সবসময় দায়িত্ব পালন করতে হয়, সবসময় একটা চাপ অনুভব করতে হয়। কিন্তু জীবনের এই দ্বিতীয় ধাপে, প্রথমবারের মতো আমি মুক্ত। আমি যা চাই, তাই করতে পারি। আমার স্বপ্ন ও ইচ্ছাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে পারি। আমি এখন শুধু সেই কাজগুলো করি, যা আমি উপভোগ করি।’ ওপরের কথাগুলো বলেছিলেন আজ থেকে ১০ বছর আগে। ১০ বছর পর আজকে তার বয়স ৮৪ বছর। ৮৪ বছরের একজন মানুষ ৪৩ বছরের প্রাণচাঞ্চল্য নিয়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষও হয়তো তিনি। ঘরে একজন শয্যাশায়ী স্ত্রী, শুনেছি তার দেখাশোনাও ড. ইউনূস করেন। কী সাংঘাতিক ব্যস্ত সময় পার করছেন! দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চাপ সামলাচ্ছেন ৮৪ বছরের এই মানুষটি। যিনি কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন এই বয়সেও অবসরকে অবসরে পাঠানো যায়।
আদতে জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে, চারদিকে যখন ঘোর অন্ধকার, তখন রোশনি হাতে এগিয়ে এলেন ড. ইউনূস। অন্য খেলোয়াড়রা চেষ্টা করে যাচ্ছেন ওনাকে ডিসক্রেডিটেড করতে, ওনাকে ব্যর্থ করতে। বাংলাদেশে গত ৫৩ বছরে এত আলোকিত মানুষ ক্ষমতার শীর্ষে যেতে পেরেছিল? যেখানেই যাচ্ছেন কি পরিমাণ তাজিম পাচ্ছেন। ৮৪ বছর বয়সেও অনবরত মিটিং, বক্তৃতা ক্লান্তিহীনভাবে দিয়ে যাচ্ছেন।
আর দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অসংখ্য মানুষ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, ওনার সফলতা দেখলে তাদের শরীরে ফুসকা পড়ে। উনি সফল হলে তো দেশ সফল, কারণ তাদের কাছে তো দেশের চেয়ে দল আর দলের চেয়ে নিজের স্বার্থ বড়। উনিই এখন অনেকের স্বার্থের বড় প্রতিবন্ধক, তাই যেকোনো মূল্যে ওনাকে সরাতেই হবে। উনি সফল হলে তো তাদের রাজনীতিই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
যাই হোক, ড. ইউনূসের প্রশংসা আগে একজন সহ্য করতে পারতেন না, জুলাই ৩৬ বিপ্লবের ফলে তিনি পগার পার হয়েছেন, তবে সাইকোলজি প্যারালাইজড করে গেছেন কিছু আদমিকে, যা তাদের কায়কারবার দেখে সহজেই মালুম করা যায়। ড.ইউনূসকে নিয়ে বেশুমার কাদা ছোড়াছুড়ি করাই যাদের বড় দায়িত্ব,তাদের বলিÑশুধু চীন সফরেই ড. ইউনূসের সাফল্যের কথা সামান্য একটু শুনুনÑ১৫ হাজার কোটি টাকার বিশ্বমানের মেডিকেল প্রতিষ্ঠা, ১২ হাজার কোটি টাকার চারটি মহাসাগরীয় বাণিজ্য জাহাজ ক্রয়, ১০ হাজার কোটি টাকার তিস্তা ব্যারাজ তৈরি, বিনা শুল্কে ২০২৮ সাল পর্যন্ত মুক্ত পণ্যবাণিজ্যসহ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ১ ট্রিলিয়ন ডলারের চুক্তি হতে যাচ্ছে। এখানেই শেষ না।
সম্প্রতি ওনার তৎপরতায় জাতিসংঘে রোহিঙ্গা প্রস্তাব পাস হয়েছে ১৪০ দেশের প্রত্যক্ষ ভোটে। যেখানে কোনো দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়নি। রোহিঙ্গাদের আগে যেখানে খাবার বাবদ মাসিক ৭ ডলার, তথা ৮৪৭ টাকা দেওয়া হতো, সেখানে নতুন বাজেটে সেটি বাড়িয়ে এখন থেকে জনপ্রতি খাবারে ১২ ডলার তথা ১৪৫২ টাকা দেওয়া হবে। তা ছাড়া বিশ্বের ৭৫তম দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক গুমবিরোধী সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। লুট হওয়া ব্যাংকগুলোর নিশ্চিত ধ্বংস হতে রক্ষা করেছেন। পুরো রোজায় কোনো জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি এবং পুরো রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ভালো ছিল। আদানির কাছে বিদ্যুৎ খাত ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষার কোশিশ করেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পতন থেকে রক্ষা করেছেন, এখন রিজার্ভ তরতর করে বাড়ছে, রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং ডলারের দামের পতন ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।
রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি হয়েছে। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে তার সময়। বিগত বছরগুলোয় বর্ডার কিলিং গড়ে বছরে ৫০০-এর অধিক ছিল। গত বছর ছিল ৫৭৭ জন। ইউনূস সরকারের সময় তা ৭ মাসে ১০ জন। দেশটাকে রাজ্য থেকে আবার রাষ্ট্রের মর্যাদায় আসীন করেছেন তিনি। তাই জুলাই বিপ্লবকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক ড. ইউনূস। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বাধিক সমাদৃত বাঙালিও তিনি। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলার মতো সৎসাহস রাখেন একমাত্র প্রফেসর ইউনূস। সব সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব একমাত্র তার পক্ষেই আদায় করা সম্ভব হয়েছে। কারণ তিনি সৎ ও আন্তরিক।
বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে একমাত্র তার আমলেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ও ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে তুমুল সমালোচনা ও তার বিরুদ্ধে কুৎসিত ভাষায় অপপ্রচার করা যাচ্ছে। কাউকে তিনি গ্রেপ্তার করেননি, যা ফ্যাসিস্ট জমানায় কল্পনাও করা যেত না। তিনি প্রবাসীদের ভিআইপি মর্যাদা দিয়েছেন এবং ঘোষণা করেছেন রেমিট্যান্সযোদ্ধা হিসেবে। তার যোগ্য নেতৃত্বে আরব আমিরাতে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি কারাগার থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার, যা তিনি মেরামত ও সংস্কার করছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ শুরু করেছেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজে দেশে পাঠানোর জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা করছেন।
একটা দেশ সুন্দর হয় যখন দেশের মোট জনসংখ্যার একটা থ্রেশোল্ডসংখ্যক মানুষ জ্ঞানী, গুণী, প্রতিবাদী ও আলোকিত হয়। ব্রেইন ড্রেইনের কারণে আমরা একাডেমিক্যালি মেধাবীদের হারিয়েছি, হারিয়ে যাচ্ছি, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের গুণী, প্রতিবাদী ও আলোকিতদেরও হারিয়েছি। আর দিন যতই যাচ্ছে, ব্রেইন ড্রেইনের হার ততই বাড়ছে। টের যদি এখনো না পেয়ে থাকেন, শিগগিরই চরমভাবে পাবেন। তখন করার আর তেমন কিছু থাকবে না। এই কারণে তিনি জনগণের হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছেন। সময় যতই যাচ্ছে, ড. ইউনূসের জনপ্রিয়তা ততই বাড়ছে। যে দলই নির্বাচন দাবি জানাচ্ছে, জনগণ তাদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করছে এবং তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে। যখন হাসিনাৎসি ক্ষমতায় ছিল, তখনো তারা ‘ড. ইউনূসকে নিয়ে মহাচিন্তায় ছিল, না পারছিল গিলতে, না পারছিল বমি করতে’। বর্তমানে একই পরিস্থিতি বিএনপির বেলায়ও।
ড. ইউনূস নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ইতোমধ্যে তিনি বিএনপির কাছে অপছন্দনীয় পাত্রতে পরিণত হয়ে গেছেন। তাই, কম সময়ে তিনি এমন একটি আন্তর্জাতিক স্তরের ‘টি-২০’ খেলার মতো পদক্ষেপ নিতে পারেন, যা অন্যদের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনবে বলে মনে হয়।
জনগণ ইতোমধ্যে টের পাচ্ছে, দেশ কোনদিকে যাচ্ছে, কে কী চায়। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ অস্থির। জনগণ এখন এমন কাউকে খুঁজছে, যিনি ক্ষমতার মোহ ছাড়া দেশের জন্য কিছু করতে পারবেন। কেউ কেউ ড. ইউনূসকে সরাতে আন্দোলনের ডাক দিলেও, অনেকেই তাদের অবস্থান বজায় রাখতে ড. ইউনূসের পক্ষে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে এ দলটি ছোট হবে না, এটাও অনেকটা নিশ্চিত।
ড. ইউনূস শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং বিশ্বের এক অমূল্য সম্পদ, যাকে অপমানের চরম ফল ভোগ করছে পুরো শেখ পরিবার ও আওয়ামী লীগ। হাজার বছরে একবার এমন একজন নেতা জন্ম নেন, যিনি সত্য, সততা ও সঠিক মূল্যবোধের পরিচায়ক। তাকে ঠেকানোর চেষ্টা নয়, বরং তার দর্শন ও কাজকে স্বাগত জানানোই সময়ের দাবি। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই পরিবর্তনের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করি। ড. ইউনূস ক্ষমতালোভী নন, তার বয়স প্রায় শেষ।
মৃত্যুর খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে, দেশকে একটু পরিবর্তনের একমাত্র চেষ্টায়, দেশের প্রতিটি মানুষকে একটু সুখের ছোঁয়া দিতে অপ্রাণ কোশেশ করে যাচ্ছেন এই মহান ব্যক্তি, যার চাওয়ার কিছু নেই, পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য তার বিরোধিতা করতে পারি, কিন্তু দেশের স্বার্থে কিছু ছাড় দেওয়া, কিছু ভালো বিষয়ে একমত হওয়াটা জরুরি। আসলে যেকোনো জাতিকে বিশেষ মুহূর্তে দেশ ও জাতির বৃহত্তম স্বার্থে ধর্ম, বর্ণ, দল, মত ও আদর্শের ঊর্ধ্বে ওঠে কিছু বিষয়ে একটি স্ট্র্যাটেজিক এসেনশিয়ালিজমের দিকে এগিয়ে আসতে হয়, তা না হলে বিরাজমান সংকট থেকে উতরানো যায় না, যেটা বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি বলে মনে করি। কারণ দেশের মানুষ খুব ভালো করেই ওয়াকিবহাল আছেন যে, রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার পর নিজের জন্য, পরিবারের জন্য কাজ না করে শুধু নামাজ, রোজা আর দেশের সেবা করবেন এবং দেশের মানুষের জন্য পেন্টিসক্রেসি বানাবেন।
লেখক : সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, লেখক ও গবেষক, ফ্রাই ইউনিভার্সিটি বার্লিন, জার্মানি