Image description

জুলাই প্রক্লেমেশন এর কাউন্টডাউন চলছিল, আর ২৫ দিন বাকি রাইট? এই ২৫ দিন কিভাবে পার হবে? স্টাবলিশমেন্ট‌ সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে জুলাই প্রোক্লেমেশন  না করতে দেয়ার। এটা বন্ধ করার একমাত্র উপায় হচ্ছে জুলাই এর পক্ষের শক্তি গুলোকে এই 20-25 দিনে টুকরা টুকরা করে ফেলা। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা যেন এরা নিজেরাই নিজেদের মারার জন্য ব্যস্ত হয়ে থাকে জুলাই ঘোষণাপত্র তো দূর কি বাত নিজেদের জান অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি পরে। 
ছাত্রদলের  সাম্যের হত্যাকারীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দেখতে হবে আসলে তার হত্যার পিছনে দায়ী কে? হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হলে আমরা বলতে পারছি না এই হত্যার পিছনে কে আছে বা এটার আসল উদ্দেশ্য কি? এই হত্যাকাণ্ড যে জুলাই অংশীদারদের মধ্যে অবিশ্বাস অনাস্থা তৈরি করার জন্যই করা হয়নি সেটাই বা আপনি কি করে অস্বীকার করবেন?


এই যে কোন রকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়া আর এক রাজনৈতিক দলের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়া সেই আওয়ামিলীগ আমলের মত, এইটা হচ্ছে স্টাবলিশমেন্টের চাল। সেই একইভাবে জামাত-শিবির কার্ড খেলে দেয়া। খেয়াল করেন সেই আওয়ামি আমলের মতই আওয়ামী লীগের জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, গত ১৬ বছরের অর্থ দুর্নীতি, আয়না ঘর খুন হত্যার বিচার সমস্ত কিছু ছাপিয়ে প্রাসঙ্গিক করে ফেলা হলো জামাত শিবির কে। 


ইন্টারিম সরকার আর রাষ্ট্রের এস্টাবলিশমেন্ট কি এক? না। আমলাতন্ত্র, নিরাপত্তা বাহিনী, মিডিয়া এবং সরকারের উপদেষ্টা এরা মিলে রাষ্ট্র চালায়। বা এরা হচ্ছে স্টাবলিশমেন্টের পার্ট। এখন খেয়াল করেন আমলাতন্ত্র, নিরাপত্তা বাহিনী এবং মিডিয়া এখন পর্যন্ত শতকরা ১০০ ভাগ আওয়ামী লীগ মানে পুরানো এস্টাবলিশমেন্ট এর দখলে আছে। শুধুমাত্র উপদেষ্টা কজন জনগণের পক্ষে হলেও এত শক্তিশালী স্টাবলিশমেন্টের সাথে সারাক্ষণ পাঞ্জা লড়লে সরকার চালাতে পারবেন না। সেই জায়গা থেকে এটা ধারণাই করা যায় যে তাদের স্টাবলিশমেন্ট এর সাথে বহু ধরনের কম্প্রোমাইজ এর মধ্যে দিয়ে সরকার চালাতে হচ্ছে। 
এই যে পুরাতন স্টাবলিশমেন্ট সেটা কিভাবে কাজ করে? ঠিক যেভাবে জঙ্গি বয়ান তৈরি করার মধ্যে দিয়ে জনগণের কনসেন্ট নির্মাণ করেছে এবং তারপর জঙ্গি নিধনের নামে আয়না ঘর এবং ক্রসফায়ার করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেছে এবং জনগণের দৃষ্ট অন্যদিকে রেখেছে, ঠিক একইভাবে একই পন্থা এখনো জাহির আছে। 


এখনো তারা জনগণের কনসেন্ট নির্মাণ করছে। কি বিষয়ে?  এইযে এনসিপি, বিএনপি, জামাত-শিবির সকলেই খারাপ, এই সকল কোন রাজনৈতিক দলের ওপর আস্থা রাখা যাবে না, আস্থা রাখা যায় না!! বিশেষ করে অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর পরস্পরের মধ্যে কোন্দল লাগিয়ে দেয়া, পরবর্তীতে হামলা মামলা ও লাগিয়ে দিতে পারে। 


এটা কিভাবে করছে?  ৮ কোটি ফেসবুক ইউজারের দেশে জনগণের মতামত নিয়ন্ত্রণ করা অথবা তৈরি করা এখন পানির মত সোজা হয়ে গেছে। হাজারে হাজারে বট আইটি ফেক আইডি একটিভ আছে।  এই সমস্ত আইডি থেকে প্রচন্ড কনফিউজিং সব বিষয়গুলো ভাইরাল করা হচ্ছে। এই আইডি গুলো এমন ভাবে কাজ করে আপনারা একবার মনে হবে সে জামাতে ইসলামই একবার মনে হবে বিএনপি। সমস্ত রাজনৈতিক পোস্টগুলো নিচে যে হয় হা হা দিয়ে নালীফাই করছে অথবা বিএনপির নিচে যেয়ে জামাতে ইসলামী হয়ে নোংরা কথা বলছে অথবা জামাত ইসলামের নিজে যেয়ে এন সি পি হয়ে প্রচন্ড আক্রমাত্মক কথা বলে আসছে। প্রত্যেকের মধ্যে ফাটল ধরানো, আস্থা ভেঙে দেয়ার জন্য এই সমস্ত বট আইডি গুলা সর্বোচ্চভাবে সক্রিয় আছে। আওয়ামী লীগের ষোল বছরে কোনদিন আমার প্রোফাইল কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখি নাই, যা হয় হবে। এখন কমেন্ট সেকশন খোলা রাখলেই বট আইডির আক্রমণে আইডি টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে । এইরকম একটা পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ন্যারেটিভ এবং কনসেন্ট আপনারা তৈরি করছেন বা আমরা তৈরি করছি এরকম ভেবেন না। 


 পুরনো যে স্টাবলিশমেন্ট এর উপর ভর করে একদল লোক ঈশ্বরের সমান ক্ষমতাবান হয়েছে, হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে, হাজারে হাজারে নির্দোষ মানুষকে হত্যা করেছে, সেই স্টাবলিশমেন্টের অংশগুলো এত সহজে হার মানবে এরকমটা ভেবেন না। এইগুলাকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বলে উড়াই দেয়ার‌ও সুযোগ নাই। 
কবি ইমতিয়াজের ভাষায় বলতে হয় রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকরী যন্ত্র। কাজেই  জুলাই অভ্যুত্থানের অংশীদার জনের নিজেরা নিজেদের নিঃশেষ করা বন্ধ করে জুলাই প্রোক্লেমেশনের উপর নজর রাখেন, যে কোন মূল্যে ঘোষণাপত্র টা এবং অবশ্যই বের করে নিয়ে আসতে হবে। এই দফা না হলে আর কিন্তু হবে না!!

দিলশানা পারুল