Image description

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূচনা হয় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন চাকরি অন্যান্য ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত ৫৬ শতাংশ থেকে কোটা কমিয়ে সম্মানজনক স্তরে রাখতে। কোটার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোটা ছিল মুক্তিযুদ্ধ কোটা। ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী ক্ষমতায় বসে একদিকে মুক্তিযুদ্ধের মনগড়া নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল, নতুন প্রজন্ম যার নাম দিয়েছিল ‘আওয়ামী ইতিহাস সাহিত্য’, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দুর্নীতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন তালিকা তৈরি করে তাতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্মগ্রহণ না করে পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। তার প্রমাণ পাওয়া যায় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে ‘জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, ভাতাপ্রাপ্ত প্রায় দুই হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স ৫০–এর নিচে।’

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মাসিক ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি চাকুরিতে কোটা পেত এই মুক্তিযোদ্ধা কোটা নামধারী ফ্যাসিবাদী পরিবারের সদস্যরা। তারা দুর্নীতির মাধ্যমে মনগড়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করেছিল, যার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতিবেদনে ‘১০ লাখ টাকা দিলেই মিলতো মুক্তিযোদ্ধা সনদ’ (১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ -যুগান্তর)।

ফ্যাসিস্টের সন্ত্রাসী সংগঠন ছিল ছাত্রলীগ। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরির নিয়োগে পদধারী নেতাকর্মীদের জন্য ছাত্রলীগের নাম এবং সুপারিশ ছিল অঘোষিত কোটা। ছাত্রলীগের কেউ ভাইভা দিতে গেলে সাধারণত বাদ দেয়ার সুযোগ কম ছিল। ছাত্রলীগের এই অবৈধ সুবিধার বৈধতা প্রকাশ্যে বক্তব্যে বলেন, তৎকালীন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিব, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব, এইচ টি ইমাম- ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে তিনি বক্তব্যে বলেন, ‘তোমরা লিখিত ভালো করো, ভাইবা আমরা দেখবো।’ (১২ নভেম্বর, ২০১৪  জাগো নিউজ)। 

আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে রাষ্ট্র স্বীকৃতি কোটার পরিমাণ কমিয়ে সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামেন ছাত্রছাত্রীরা। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ছিল নির্যাতিত, এমনকি তাদের পরিবারের সন্তানরা বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত না থাকার পরও হতো বৈষম্যের শিকার। ছাত্রলীগের  নেতাকর্মীরাও যাতে রাষ্ট্র স্বীকৃতি কোটার পরিবর্তে অঘোষিত ছাত্রলীগের কোটা ব্যবহার করতে পারেন এই লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে  প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যোগদান করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের এবং হলের ছাত্রলীগের পদধারী নেতাকর্মীরা নেতৃত্বে দিয়ে শুরুতেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আবার তার সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় বিপাকে পড়ে যায় সরকার। তখন ছাত্রলীগের পদধারী নেতারা প্রকাশ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত বিরোধী আন্দোলন থেকে সরে কৌশলে আন্দোলন চালিয়ে যান। ইমরান এইচ সরকার ও লাকী আক্তারকে শাহবাগে কেন্দ্র করে এইরকম কৌশলী আন্দোলনে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সফলতা পেয়েছিল। ছাত্রলীগ সেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করলেও যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপান্তরিত হয় তখন বিপরীতমুখী অবস্থান গ্রহণ করেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আন্দোলনের সামনের সারি থেকে দূরে যাওয়ায় এবং মুক্তিযুদ্ধো পরিবারের সন্তানদের আধিপত্য থাকায় প্রশাসন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর অত্যাচার, গ্রেপ্তার শুরু করে। একটি পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিরোধ শুরু করলে প্রশাসনের অত্যাচার, গ্রেফতারের মাত্রা যত বাড়তে থাকে, আন্দোলনের শক্তি এবং গতি তত বাড়তে থাকে। যদিও আন্দোলনের শুরু থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিএনপি সার্বিক সহযোগিতা শুরু করেন। দীর্ঘদিনের নির্যাতিত বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের নির্দেশে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মিছিল সহকারে আন্দোলনে যোগদান করে‌ন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজপথ না ছেড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার জন্য ভিডিও বার্তায় বলেন। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।’ (১৬ জুলাই, ২০২৪ - ডেইলি স্টার)। তখন শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন। সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর নির্মম নির্যাতন শুরু করেন। মাঠে পুলিশ প্রশাসনের সাথে আন্দোলনকারীদের নির্যাতন করতে ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে হামলা এবং গুলি করে মানুষ হত্যা শুরু করেন। 

প্রশাসনে কোটাধারীদের আধিক্য এবং আন্দোলনের প্রতি সরকারের অনাস্থা থাকায় পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রতিনিয়ত লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার করে। এই আন্দোলনে সমন্বয়, শৃঙ্খলা রক্ষা, নেতৃত্ব, মিডিয়ায় কথা বলার জন্য কয়েকজন নির্ধারণ করা হয়, তাদের দেয়া হয় সমন্বয়ক। প্রশাসনের অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকায় এবং আন্দোলন আরও জোরদার হতে থাকে। একটি পর্যায়ে আওয়ামী লীগ দলকানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যতীত সকল শ্রেণীপেশার সাধারণ মানুষ আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলন দমাতে ডিবি ৬ জন সমন্বয়ককেই গ্রেপ্তার করে। তখন তারা ডিবি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন প্রত্যাহার করার কথা বলেন। ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সহিংসতা ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আন্দোলনের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। (২৮ জুলাই, ২০২৪)। আন্দোলন প্রত্যাহারের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন সমন্বয়করা। এমনকি তারও আগে একটি ভিডিও বার্তায় সার্জিস আলম বলেন আন্দোলনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর নেমে আসে গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের খড়্গ। আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ৫ তারিখে ভারতে পালিয়ে যান এবং আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। 

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সমগ্র দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী নামের প্লাটফর্ম। ১৭ বছরের নির্যাতন-নিপীড়নের পর ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে সমগ্র জেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, এমনকি উপজেলায়ও বৈষম্যবিরোধী নামে সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়কের নামে দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় থাকা নেতাকর্মীদের অধিকাংশই অন্যায্যভাবে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধা ভোগের পাশাপাশি অপকর্মের বৈধতা পেয়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্মে থেকে যা ইচ্ছা করলে গ্রেপ্তার কিংবা আইনের আওতায় আসতে হয় না বিধায় সমন্বয়ক নামে সারাদেশে দখলদারিত্ব শুরু করে। তখন ছাত্রলীগের নির্যাতনকারী নেতাকর্মীরা নিজেদের রক্ষা করতে কৌশলে এই বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্মে নাম লেখান। চাঁদাবাজিতে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে সমন্বয়কদের সাথে সমন্বয় করে প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি করে। তাদের অপকর্মের মাত্রা সীমাহীন হলে সাধারণ মানুষের চাপে প্রশাসন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় এবং প্রকাশ্যে আসা চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মবজাস্টিসের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই বাধাগ্রস্ত হতে হয়। (সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ২ নারীসহ গ্রেফতার, ৯ যুগান্তর, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪)।’  বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্ম যুক্তরা চাঁদাবাজি এবং দখলদারিত্বের পাশাপাশি নতুন করে শুরু করেন মামলা বাণিজ্য। কোনো ব্যক্তি তাদের অন্যায্য দাবি না মানলে তখন মামলা দায়ের করতো। পুলিশের সাথে কখনো সমন্বয়ের মাধ্যমে, কখনো পুলিশকেও মামলায় অভিযুক্ত করার হুমকি দিয়ে সাধারন মানুষকেও মামলায় আসামি করা এবং এজাহার থেকে নাম বাদ দিতো বিভিন্ন শর্ত এবং অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে। দীর্ঘদিনের নির্যাতিত বিএনপির নেতা-কর্মীদেরও এই মামলা বাণিজ্যের শিকার হতে হয়েছে। ‘নাটোরের বিএনপিকর্মী এনায়েত করিম রাঙ্গাকে জুলাই বিপ্লবের তিন হত্যা মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করে ফাঁসানো হয়েছে। রাঙ্গার ভাতিজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের নেতা কথিত সমন্বয়ক ফয়সাল আহম্মেদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয় (৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ - যুগান্তর)।

বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রতিদিন নিউজ হতো এরকম অসংখ্য ঘটনা। কিন্তু প্রশাসন তাদের কারো বিরুদ্ধেই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতো না, কেননা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদ। এই পরিষদে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছে তাদের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের নির্ধারিত করেছেন তারাই। সারাদেশে অসংখ্য আইন বহির্ভূত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যায়। একটি পর্যায়ে প্রকাশ্যে জনরোষের মুখে পরে বৈষম্য বিরোধী প্লাটফর্মের নেতাকর্মীরা। তাদের অপকর্ম চালু রাখতে বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্ম বিলুপ্ত করে গড়ে তুলেন নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি)। ‘আত্মপ্রকাশ বিকেলে, কে কোন পদে আসছেন (প্রথম আলো, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)।’ বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্ম থেকে কেবলমাত্র নামের পরিবর্তন হয়েছে, ব্যক্তি হিসেবে তারাই রয়েছেন।

এনসিপি নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকুরিতে তদবির বাণিজ্য শুরু করেন। এমনকি কারো প্রোমোশন, ডিমোশন কিংবা পোস্টিং নির্ধারণ করেন এনসিপি নেতাকর্মীরা। দুর্নীতিতে জড়িয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এনসিপির নেতাকর্মীরা যা ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। ‘দুই উপদেষ্টার এপিএস ও পিও’র দুর্নীতি: তদবির বাণিজ্যে আয় শতকোটি টাকা’ (২৪ এপ্রিল, ২০২৫, মানবজমিন।) 

অন্যদিকে হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট কিংবা টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। তাদের পলায়নের পর সেগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে, তখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা মানুষের সেবায় এসব সেক্টরে কাজ শুরু করেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় নিয়মানুযায়ী ইজারা নিয়ে জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত হন। মাদ্রাসা, মসজিদ, স্কুলকলেজের ম্যানেজিং কমিটি, এমনকি ফ্যাসিবাদী সহযোগী অনেক শিক্ষকও পলায়ন করেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা এগুলো চালু রাখতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

একদিকে সমাজকল্যাণমূলক কাজে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করায় বিএনপির সুনাম বেড়েই চলেছে, অপরদিকে দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদীর সুবিধাভোগী এবং সহযোগী গোষ্ঠীর অপকর্মের তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। এই নতুন ফ্যাসিবাদীগোষ্ঠী তখন বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করছে, কখনো প্রকাশ্যে, কখনো অপ্রকাশ্যে। আওয়ামী লীগের প্রশিক্ষিত বটর বাহিনীর সাথে এনসিপি গোপন আঁতাত করে বিএনপির বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়াল করছে কিনা তাও সময় সাপেক্ষে প্রকাশিত হচ্ছে।

এনসিপি নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে আওয়ামী লীগের মতোই ডিভাইড অ্যান্ড রুলস পলিসি গ্রহণ করছে। ফ্যাসিবাদী কর্তৃক দীর্ঘদিনের নির্যাতিত এবং ঐক্যবদ্ধ জোট বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে কৌশলে সন্দেহ এবং দ্বন্দ্বে সৃষ্টি করতে পেরেছে। জামায়াত এবং বিএনপির ভিশন এবং মিশন আলাদা হওয়ায় মতপার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই মতপার্থক্যের জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াত মন্তব্য করলে অসংখ্য বট আইডি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একই সুরে মন্তব্য করছে। এই আইডিগুলোর প্রকৃত মালিকদের খুঁজে বের করে আইনানুগ শাস্তির বিধান করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিএনপি এবং জামায়াত উভয়ের ক্ষেত্রেই একই পদ্ধতির দেখা দিয়েছে। ফ্যাসিবাদের শাসন যেহেতু দীর্ঘদিন ছিল তাই অনেক রাজনৈতিক দলেই ফ্যাসিবাদীর প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে সুবিধাভোগী ব্যক্তি/গোষ্ঠী সংখ্যায় কম/বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তারাও ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। আওয়ামী লীগ যেমন ন্যূনতম মতপার্থক্য হলেই যখন যাকে ইচ্ছা বিএনপি/জামায়াত-শিবির-রাজাকার বানাতো এই সুবিধাবাদী গোষ্ঠী সেই ট্যাগিং পলিসি প্রয়োগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদীর সহযোগী এনসিপি বিভিন্ন গোষ্ঠীর সহযোগিতা নিয়ে, তাদের অপশাসন দীর্ঘ করতে কৌশলে বিএনপির বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়াল করছে। বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনসিপি নেতাকর্মীরা অহরহ মিডিয়ায় প্রকাশ্যে বলছে।

লেখক: সাবেক গণসংযোগ সম্পাদক, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এবং এমফিল গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়