
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার হাওর এলাকায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের বিতর্কিত প্রকল্পটি বাতিল করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সাশ্রয় এবং পরিবেশ রক্ষা উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবদুল হামিদের ইচ্ছায় ৫ হাজার ৬৫১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। তবে ২০১৯ সালে মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক উদ্বোধনের পর হাওর এলাকায় ভয়াবহ আকস্মিক বন্যার কারণে এ প্রকল্পটি সমালোচনার মুখে পড়ে। ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি পানিপ্রবাহের বাধা সৃষ্টি করে নির্মিত হয়। হাওরের পানি চলাচলের জন্য কয়েকটি খাল খোলা রাখা হলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। ফলে মারাত্মক বন্যা দেখা দেয়। তাই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাতিলের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে ৩০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে। তবে অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এ অর্থ ফেরত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সূত্র জানায়, সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে গত মাসের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত এক সভার পর সেতু কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রকল্প কার্যালয় নির্মাণে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে। সেতু সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ ‘রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড’ সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, পরিবেশ এবং হাওর এলাকার জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রকল্পটির ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় এনে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জমি অধিগ্রহণের জন্য ছাড়কৃত অর্থও ফেরত আনা হবে। মিঠামইন উপজেলা সদর থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী পর্যন্ত হাওর অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে এবং মিঠামইন ক্যান্টনমেন্ট সংযুক্ত করার জন্য মিঠামইন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।