Image description
জে-১০সি যুদ্ধবিমানে পরাস্ত রাফাল ভারত পাকিস্তান সংঘাতে সতর্ক কূটনীতি ট্রাম্পের :: প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেয়া হবে : শাহবাজ শরিফ :: পাকিস্তানের প্রতিঘাতের ভয়ে কাঁপছে ভারত, ব্ল্যাকআউট ঘোষণা :: শুধু বিমান নয়, ভারতের মনোবলও ভেঙে দিয়েছে পাকিস্তান : তথ্যমন্ত্রী :: শুধুমাত্র চোর এবং কাপুরুষরাই রাতে আক্রমণ করে : বিলাওয়াল :: পাকিস্তানের গোলায় অন্তত ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভারতীয় ড্রোনের অনুপ্রবেশের আরও কতগুলো প্রচেষ্টা তারা ব্যর্থ করে দিয়েছে। সেনাবাহিনীর জারি করা এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে যে সফট-কিল (কারিগরিভাবে) এবং হার্ড-কিল (অস্ত্রের মাধ্যমে) পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত ২৫টি ইসরাইলে তৈরি হেরোপ ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর মতে, পাকিস্তানের ধ্বংস করা এসব ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা আগে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, গতসাত ও আটই মে রাত থেকে ভারত ড্রোনের সাহায্যে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে ১২টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। আরও ড্রোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আইএসপিআর তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে বলেছে যে পাকিস্তান ভারতের বিমান ও ড্রোন ধ্বংস করার পর তারা (ভারত) ইসরাইলি তৈরি হেরোপ ড্রোন দিয়ে পাকিস্তানে আক্রমণ করছে যা ভারতের উদ্বেগ এবং আতঙ্কের লক্ষণ।

এদিকে, ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে চীনের তৈরি জে-১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহারের দাবি করেছে পাকিস্তান। বুধবার কাশ্মীর ও সীমান্তবর্তী অন্যান্য বিতর্কিত এলাকায় স্বল্প সময়ের এক সামরিক সংঘর্ষে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও দেশটির সেনাবাহিনী। ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দার সংসদে বলেন, গুলি করে নামানো পাঁচটি যুদ্ধবিমানের মধ্যে তিনটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি রাফাল। আর এগুলো গুলি করেছে পাকিস্তানের জে-১০সি বিমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেট ফাইটার... ভারতীয় রাফাল গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তিনটি রাফাল ছিল। আমাদের দিক থেকে ছিল জে-১০সি, যা চীনের সহযোগিতায় তৈরি।’ পাকিস্তানের দাবি সত্যি হলে এটি হবে জে-১০সি যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে প্রথম এয়ার-টু-এয়ার সফলতা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম রাফাল ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা। সিএনএন এক ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভারতীয় বাহিনীর একটি রাফাল যুদ্ধবিমান পাকিস্তান ভূপাতিত করেছে। আরও বিমান ভূপাতিত হয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ভারত পাকিস্তান সংঘাতে সতর্ক কূটনীতি ট্রাম্পের : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসার ধরণ পাল্টে ফেলেছেন। কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংঘাতের বিষয়ে তিনি একটি ঐতিহ্যবাহী এবং সতর্ক কূটনীতিতে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর পর ট্রাম্প ভারতের সমালোচনা করেননি বরং দ্রুত সমাধানের জন্য অনুরোধ করেছেন। ‘এটা খুবই ভয়াবহ,’ ট্রাম্প বুধবার বলেছেন। ‘আমি উভয়ের সাথেই একমত। আমি উভয়কেই খুব ভালোভাবে জানি, এবং আমি তাদের কাজ করতে দেখতে চাই। আমি তাদের থামাতে দেখতে চাই।’

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যদি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারি, তাহলে অবশ্যই করব।’ গত মঙ্গলবার ভারতের হামলার পরপর এ ঘটনাকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। পাকিস্তানে হামলা নিয়ে ভারত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিওকে বিস্তারিত জানিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর, রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে নিন্দা ও সহযোগিতার আহ্বান জানান, কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উত্তেজনা এড়াতেও অনুরোধ করেন।

প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেয়া হবে : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, আমরা সাহসী জাতি, গতরাতে ভারতের বিমান হামলায় নিহতদের প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেয়া হবে। মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর বুধবার (৭ মে) রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কাপুরুষ শত্রু, যারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালায় এবং নিজেকে শক্তিশালী ভাবে। আমরা গত রাতে প্রমাণ করেছি, পাকিস্তান জানে প্রতিরক্ষা করতে কীভাবে উপযুক্ত জবাব দিতে হয়। জাতি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সাহস ও শক্তিকে শ্রদ্ধা জানায়। শাহবাজ বলেন, হয়তো তারা ভেবেছিল আমরা পিছু হটবো। কিন্তু তারা জানে না যে, আমরা সাহসী জাতি। হামলায় নিহতদের প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেয়া হবে।

পাকিস্তানের প্রতিঘাতের ভয়ে কাঁপছে ভারত, ব্ল্যাকআউট ঘোষণা : পাকিস্তানে ভারতের হামলার পরে দুই দেশের মধ্যে আবারও চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় পাল্টা হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান। সেই আতঙ্কে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত, যার অংশ হিসেবে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণ ব্ল্যাকআউট। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ৮ মে রাত ৯টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গুরুদাসপুর জেলায় বিদ্যুৎ-আলোক সংযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তানের সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সীমান্তে সম্ভাব্য আরও হামলার আশঙ্কায় ভারত ইতোমধ্যেই রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং গুজরাটে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, জনসমাবেশসহ সব ধরনের গণপরিসর। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, এবং সীমান্তের প্রতিটি প্রবেশপথে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।

শুধু বিমান নয়, ভারতের মনোবলও ভেঙে দিয়েছে পাকিস্তান : পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, পাকিস্তান কেবল ভারতীয় বিমানগুলিই করে ভূপাতিত করেনি, বরং নয়াদিল্লির মনোবল এবং গর্বও নষ্ট করে দিয়েছে। জাতীয় পরিষদের ফ্লোরে তিনি বলেন, রাফায়েল জেট ভূপাতিত করা পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে। প্রচলিত যুদ্ধের দিকে তাকালে এমন বেশ কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে, যেখানে আমরা ভারতকে পরাজিত করেছি। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত এখন এতটাই ভয় পাচ্ছে যে, তারা এখন মনুষ্যবিহীন ড্রোন পাঠাচ্ছে।’

শুধুমাত্র চোর এবং কাপুরুষরাই রাতে আক্রমণ করে : পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিপিপির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, শুধুমাত্র চোর এবং কাপুরুষরাই রাতে আক্রমণ করে। যদি তাদের একটুও সাহস থাকত, তাহলে তারা দিনের বেলায় আক্রমণ করত। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে গতকাল আবেগঘন এক বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ভুট্টো জারদারি বলেন, ভারত তার অহংকারের কারণে বর্বর এবং অন্ধ হয়ে উঠেছে, কিন্তু পাকিস্তানের সাহসী জনগণ তাদের দেখাবে।

পাকিস্তানের গোলায় অন্তত ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত : ভারতের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারতের সামরিক স্থাপনাগুলোতে গোলাবর্ষণ করেছে পাকিস্তান। এ সময় ৪০ থেকে ৫০ জন ভারতীয় সেনাকে নিহত হয়েছে বলে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট এই খবর জানিয়েছে। বুধবার ভোররাতে ভারতের বিমান হামলার জবাবে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে এবং এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। ভারত এখনো পাকিস্তানের দাবি করা ৪০-৫০ জন সেনা নিহতের বিষয়ে কোনো জবাব দেয়নি। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সীমান্তে গোলাবর্ষণে এখন পর্যন্ত দেশটির একজন সেনা ও ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সূত্র : বিবিসি, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ডন, ইনডিপেনডেন্ট।