Image description

মাহমুদুর রহমান

 

একজন ফ্যাসিস্ট শাসক ও তার হেজেমনিক প্রভুর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নিরস্ত্র তরুণ ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় বিপ্লবের ফসল আজকের ড. ইউনূস সরকার। আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ইয়ামিন, ওয়াসিম, নাফিজ ও আনাসের মতো সহস্রাধিক তরুণের জীবনের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছি।

২০২৪ সালের সেই স্বাধীনতাপ্রাপ্তি কোনো সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ স্বীকার করুক কিংবা না করুক তাতে বিপ্লবের প্রকৃত ইতিহাস পাল্টাবে না। হাসিনার আমলে তারা হয়তো পরিবার নিয়ে সুখে থেকেছেন, অবাধ স্বাধীনতা ও অঢেল সম্পদ উপভোগ করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীকে প্রতিদিন পরাধীনতার গ্লানি সহ্য করে কোনোক্রমে বেঁচে থাকতে হয়েছে।

আজন্ম মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত শেখ হাসিনা সারাজীবন ধরে মেজর জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস পাল্টানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এবারও আমি আশাবাদী, লুটেরা হাসিনার সমগোত্রীয় ভিন্ন দলের রাজনীতিবিদদের জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস অস্বীকার করার প্রচেষ্টা সফল হবে না।

৫ আগস্ট হাসিনার দিল্লিতে পলায়নের দু-এক দিন পরেই ইস্তানবুল থেকে কনক সারওয়ারের ইউটিউব চ্যানেলের টক শোতে অংশ নিয়ে আমি ড. ইউনূসকে প্রধান করে বিপ্লবী সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছিলাম। ২৮ সেপ্টেম্বর ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ঢাকায় ফেরার পর পুরোনো মামলায় কয়েক দিনের জেলজীবন পার করে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারের বক্তব্যে আবার ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি করে একটি বিপ্লবী কিংবা জাতীয় সরকারের দাবি জানিয়েছিলাম।

সেই প্রস্তাবে কেউ কর্ণপাত তো করেনইনি, বরং বিভিন্ন মহল আমাকে হঠকারিতার অভিযোগ দিয়ে গালমন্দ করেছে। হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫ বছর ধরে যাকে জীবন বাজি রেখে অবিরত লড়াই করতে হয়েছে, তার ক্ষমতার জন্য ব্যাকুল রাজনীতিবিদদের সামান্য গালমন্দে কিছু যায়-আসে না। মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে এসব লোককে আমি কোনোদিন পরোয়া করিনি। ইদানীং অবশ্য দেখতে পাচ্ছি, কোনো কোনো ইউটিউবার তাদের কনটেন্টে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গ এমনভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন, যেন এটি তাদের নিজস্ব এবং একেবারে আনকোরা আইডিয়া।

অথচ এতদিন তারাই যথাসম্ভব দ্রুত নির্বাচনের জন্য ওকালতি করেছেন। জনমতের হাওয়া বুঝতে পেরে বেচারারা এখন তাদের বক্তব্যে কিছুটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছেন। অনেকের ক্ষেত্রেই তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের চেয়ে ভিউ, লাইক, সাবসক্রাইব প্রভৃতি বোধগম্য কারণে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যাকগে, আজকের মন্তব্য-প্রতিবেদনের মূল প্রসঙ্গে আসি।

ড. ইউনূস যে প্রায় দুই ডজন উপদেষ্টাকে নিয়ে ৮ আগস্ট ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’-এর যাত্রা শুরু করেছিলেন, তাদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৫ বছরের অপশাসনের বিরুদ্ধে যার যার সাধ্যমতো আওয়াজ তোলার সাহস দেখিয়েছিলেন। উপদেষ্টাদের অধিকাংশই হাসিনার আমলে হয় নীরব অথবা সরাসরি সুবিধাভোগী ছিলেন।

হাসিনা ক্ষমতায় টিকে গেলে তাদের কোনো সমস্যা হতো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরেই শুরু হয়েছিল বেশুমার প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী নিয়োগের মিছিল। আজ পর্যন্ত সেই মিছিলের কোনো শেষ দেখা যাচ্ছে না। এই গত সপ্তাহেও প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় নতুন একজন ভাগ্যবান সাবেক আমলা সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আমার জানামতে অন্তর্বর্তী সরকারে এ-জাতীয় নিয়োগপ্রাপ্তদের সংখ্যা নিচের তালিকায় পাঠকের অবগতির জন্য উদ্ধৃত করলাম—

প্রধান উপদেষ্টা : ১ জন

উপদেষ্টা : ২৩ জন

প্রধান উপদেষ্টার সহকারী : ৩ জন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী : ৬ জন

সংস্কার কমিশন প্রধান : সম্ভবত ১৫ জন

সর্বমোট : ৪৮ জন

আমার ধারণা কেবল ওপরের ৪৮ জনই নয়, এর বাইরেও বিভিন্ন পদমর্যাদায় অন্য নিয়োগপ্রাপ্তরা রয়েছেন। দুই দশক আগে সরকারের ছোটখাটো দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল। যতদূর মনে আছে, তৎকালীন চারদলীয় সরকারে ৬০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তখনকার পত্রপত্রিকায় সেই মন্ত্রিসভাকে জাম্বো ও ঢাউস আখ্যা দিয়ে প্রচুর ট্রল করা হয়েছিল। সেই সময় আমাদের মধ্যে সরকারের আকার যথাসম্ভব ছোট করে দরিদ্র দেশের রাজস্ব ব্যয় কমানোর পন্থা নিয়ে বেশ আলোচনা হতো। বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান থেকেও এ বিষয়ে পরামর্শ আসত। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সরকারের আকার ছোট করা নিয়ে বেশ সোচ্চার ছিলেন। অবশ্য একটি রাজনৈতিক সরকারে নানারকম বাধ্যবাধকতা এবং দলের মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার কারণে সরকারের আকার প্রত্যাশা অনুযায়ী ছোট করা সব সময় সম্ভব হয় না।

কিন্তু রাজনৈতিক দলের মতো ড. ইউনূসের কারো কাছে দায়বদ্ধতার কোনো কারণ আমি দেখি না। তার সরকারের বৈধতা কিংবা শক্তির একমাত্র উৎস জনগণের সমর্থন। তা হলে তিনি কেন সরকারকে ক্রমাগতভাবে বিপুলাকায় করে চলেছেন? এভাবে যত্রতত্র মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের মর্যাদায় পদ বিলানোর কোনো যুক্তি আমি অন্তত খুঁজে পাচ্ছি না। তা হলে কি জনগণ ধরে নেবে, সরকারের প্রাথমিকভাবে নিযুক্ত উপদেষ্টাদের দিয়ে কাজ চলছে না? সেক্ষেত্রে অকর্মণ্য উপদেষ্টা, সহকারী কিংবা সংস্কার কমিশনের প্রধানদের জনগণের করের টাকায় পোষার কোনোরকম যুক্তি থাকতে পারে না। নতুন নিয়োগ হতে হলে পুরোনোদের অবশ্যই বাতিল করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, শেখ হাসিনার পতনের বিপ্লব আরম্ভ হয়েছিল ‘মেধা না কোটা’ স্লোগান দিয়ে।

বিপ্লবোত্তর সরকারে যদি কোটা অথবা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পছন্দের ভিত্তিতে উপদেষ্টা-সহকারীদের নিয়োগ চলে, তা হলে জাতির জন্য এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না। এসব নিয়োগের মাধ্যমে কে কাকে খুশি করছেন, সেটা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। মনে রাখতে হবে, যেহেতু দেশে এখন জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত কোনো সংসদ নেই, কাজেই সব উপদেষ্টা ও সহকারী জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আমি মনে করি, মাসে অন্তত একবার প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপদেষ্টা অথবা বিশেষ সহকারীর মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কাজকর্ম নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করা উচিত। আমার এই পরামর্শ গ্রহণ করা কিংবা না করা তাদের এখতিয়ার।

সরকারের দায়িত্ব নিয়েই ড. ইউনূস বলেছিলেন, একমাত্র ছাত্ররা তার নিয়োগকর্তা। এখন প্রশ্ন হলো তার উপদেষ্টা, সহকারী, ছায়া সহকারী ও বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়োগকর্তাও কি ছাত্ররাই, নাকি সেই নিয়োগ দিচ্ছেন সরাসরি তিনি নিজে, অথবা অন্য কোনো প্রভাবশালী মহল? দেশ-বিদেশ থেকে নিয়োগপ্রাপ্তদের অনেকেই জনগণের কাছে প্রায় অপরিচিত। শেখ হাসিনার দানবীয় শাসনকালে এদের অধিকাংশকে কখনো মুখ খুলতে দেখা যায়নি। কারো কারো বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার পক্ষে দালালির অভিযোগও রয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতি ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে এদের অনেকেই দেখেও না দেখার ভান করেছেন। কেউ প্রচ্ছন্নভাবে হাসিনার জুলুমের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন। তারাই এখন বেশ গরিমা-সহকারে প্রাপ্ত ক্ষমতার নানারকম সুবিধা পাবলিক স্পেসে জাহির করছেন।

বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে যখন কোনো অপরিচিত ব্যক্তির আশেপাশে গানম্যানদের বিচরণ দেখি, কিংবা নির্ধারিত জায়গার বাইরে রাস্তায় আইন ভেঙে লোকজনের যাতায়াতের জায়গায় তাদের চকচকে গাড়ি পার্ক করতে দেখি, তখন বুঝতে পারি, এরা ইউনূস সরকারের সব নব্য কেউকেটা লোকজন কিংবা তাদের পরিবারের সদস্য। উপদেষ্টাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশকে আবার আমলাতন্ত্র থেকে আমদানি করা হয়েছে। আমলাদের সুবিধাবাদী চরিত্র সম্পর্কে আমরা সবাই মোটামুটি অবগত। কী বিশেষ গুণ বা মেধার কারণে এসব তথাকথিত ‘বিশিষ্ট ব্যক্তিরা’ একটি বিপ্লবোত্তর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অনায়াসে নিয়োগ পাচ্ছেন, সেটা অধিকাংশ মানুষেরই অজানা। সংস্কারের লক্ষ্য কী ছিল, সেই লক্ষ্য কতখানি অর্জিত হয়েছে এবং বাদবাকি অংশ কোন প্রক্রিয়ায় অর্জিত হবে, সেটাও জনগণকে এই ৯ মাসে জানানো হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, সংবিধান সংস্কার কমিশনের কথাই উল্লেখ করা যাক।

সেখানে রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ হবে নাকি ‘জনগণতন্ত্রী’ হবে, এসব আলোচনা হলেও রাষ্ট্র ও সরকারের কাঠামো (ওয়েস্টমিনস্টার কিংবা প্রেসিডেন্সিয়াল), নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও রূপরেখা, সংসদ ও সরকারের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রভৃতি বিষয়ের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার কোনো সংবাদ আমি এখনো পাইনি। আশা করছি, হয়তো ঐকমত্য কমিশনে এসব জরুরি বিষয়ে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দিন-তারিখ নিয়েই প্রধানত ব্যস্ত থাকার ফলে নতুন ক্ষমতাবানদের তেমন একটা জবাবদিহির মধ্যে পড়তে হচ্ছে না।

বর্তমান সরকারের বেশ কিছু নিয়োগ নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ড. ইউনূসের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তিনি বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে যে অবস্থান করছেন, এ নিয়ে বিতর্কের কোনো সুযোগই নেই। আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেকে ড. ইউনূসকে কোনো নির্বাচন ছাড়াই পাঁচ বছর ক্ষমতায় রেখে দেওয়ার দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলছেন। রোজার ঈদের দিন জাতীয় ঈদগাহে মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশও আমরা দেখতে পেয়েছি। কেউ কেউ এমন পরামর্শও দিচ্ছেন, সংসদ নির্বাচনের পর যে দলই ক্ষমতাসীন হোক না কেন দেশের স্বার্থে তাদের উচিত হবে ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতির পদে বসানো।

অবশ্য ঢাল-তলোয়ারবিহীন নিধিরাম সর্দার মার্কা রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করে মাঝেমধ্যে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে কেবল মাজার জিয়ারতের দায়িত্ব পালন করতে ড. ইউনূস সম্মত হবেন কি না, সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে তার বিপুল জনপ্রিয়তার বিষয়টি টের পেয়ে বিএনপি পর্যন্ত নির্বাচনের ইস্যুতে সুর নরম করতে দৃশ্যত বাধ্য হয়েছে।

এবার আমার স্বভাব অনুযায়ী, জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে খানিকটা তিক্ত সতর্কবার্তা দিয়ে রাখছি। অতীতে দেখা গেছে, এ দেশে জনপ্রিয়তা বেশ ক্ষণস্থায়ী ব্যাপার। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি কী বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন, সেটা আমার নিজের চোখে দেখা। আবার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিব নিহত হলে বিস্ময়করভাবে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় লাখ লাখ জনতার আনন্দ-উল্লাস ও মিষ্টি বিলানোর দৃশ্যও আমি বুয়েটের বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে দেখেছি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনার পলায়ন-পরবর্তী ঢাকার চেহারা যারা দেখেছেন, তারা ৫০ বছর আগের সেই দৃশ্য খানিকটা আন্দাজ করতে পারবেন। বাংলাদেশে একমাত্র জিয়াউর রহমানই ক্ষমতায় থেকে তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছিলেন। এমনকি বেগম জিয়াও ১৯৯১ ও ২০০১ সালে যে জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, মেয়াদশেষে সেটি ধরে রাখতে পারেননি। আমি আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করি, ড. ইউনূস ক্ষমতা পরিত্যাগ করার পরও রাষ্ট্রপতি জিয়ার মতোই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের কাছে শ্রদ্ধাভাজন হয়ে থাকবেন। আমার আশাবাদ পূরণ হবে কি না, সেটা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।

উল্লেখ্য, ড. ইউনূস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সে হিসেবে বর্তমান সরকারের মেয়াদকাল এখন থেকে সর্বোচ্চ ১৪ মাস। এই স্বল্প সময়ের জন্য মাথাভারী প্রশাসনের কোনো প্রয়োজন থাকার কথা নয়। সুতরাং আমরা আশা করব, নতুন নতুন উপদেষ্টা কিংবা সহকারীদের নিয়োগ প্রদানে এবার ‘ফুল স্টপ’ দেওয়া হবে। যে কাজ ড. ইউনূস আগামী ১৪ মাসে সম্পন্ন করতে পারবেন না, সে রকম কোনো কাজে এই পর্যায়ে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দিলে আশা করি তিনি বিরক্ত হবেন না।

লিখে রাখতে পারেন, কোনো কারণে বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে, সেই ব্যর্থতার দায় একমাত্র ড. ইউনূসকেই নিতে হবে। তার চার ডজন উপদেষ্টা, সহকারী ও সংস্কার কমিশন প্রধানদের নাম ইতিহাসের ফুটনোটেও সম্ভবত স্থান পাবে না। বর্তমান সরকারের ক্ষমতাবান বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আমার মন্তব্যের জন্য রাগান্বিত হলেও আমার কিছু করার নেই। আবারও আমাদের ঐকান্তিক প্রত্যাশা—ঘোষিত সময়ের মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার সমাধা করে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অবাধ, অহিংস ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে প্রফেসর ইউনূস দেশবাসীর কাছে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকুন।