ঘুম নিয়ে মজার সব তথ্য
সবার জন্য চাই ঘুম। সবাই ঘুমান কিন্তু ঘুমের সবকিছু আদ্যোপান্তের ঠাহর এখনও করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের অনেকটাই এখন চিকিৎসকের হাতের মধ্যে হলেও রাত্রিকালীন দীর্ঘসময়ের ঘুমের অনেকটাই অজানা অধরা রয়ে গেছে।
স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে পাখি, সাপ থেকে উভচর ব্যাঙ, এমনকি মাছেরও প্রয়োজন ঘুম। ঘুম নিয়ে তাই আগ্রহের শেষ নেই। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণায় উঠে আসা ঘুম নিয়ে কয়েকটি বিজ্ঞানসম্মত খোঁজ দেওয়া হলো;
- মোবাইল ফোন চার্জের মত, মগজের রিচার্জের জন্য চাই ঘুম। মস্তিস্কের কোষের সঙ্গে ওই ঘুমের মধ্যে ওই দেহকোষ নিজের মেরামতি সেরে ফেলে। দেহের হরমোনের সমতা ঠিক রেখে শরীরকে আবারও তরতাজা করে দেয়।
- বয়সভেদে ঘুমের চাহিদা বিভিন্ন রকম। শিশুদের জন্য ১৬ ঘণ্টা। ৩-১২ বছর বয়সীদের জন্য ১০ ঘণ্টা। ১৩-১৮ বছরের জন্য ১৩ ঘণ্টা। ১৯ থেকে ৫৫ বছরের জন্য ৮ ঘণ্টা। ৬৫ ঊর্ধ্ব মানুষের জন্য ৬ ঘণ্টা। এমনটাই নাকি উপযুক্ত।
- ঘুমের অন্যতম প্রধান বিকার স্বপ্ন। ঘুমের শেষ পর্যায়ে যখন তা ভেঙে যাওয়ার মুখোমুখি তখনই স্বপ্ন শুরু হয়। তবে গবেষণায় জানা গেছে, শতকরা মাত্র ৪০ জন নিয়মিত স্বপ্ন দেখেন। শতকরা ১২ জন স্বপ্ন দেখে কেবল সাদা- কালোতে।
- দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে যে বিষয়টা আমরা কম গুরুত্ব দিই, সেটাই স্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে। আমরা যাদের মুখ একবার দেখেছি, তাদের মনে রাখি বা না রাখি, স্বপ্নে তাদের দেখাই মেলে। ব্যক্তি আবেগের উপর স্বপ্নের ধরণ নির্ভর করে।
- ঘুমের অনেক বৈকল্য রয়েছে। প্যারাস্মিনয়া এমন এক মানসিক বৈকল্য যেখানে ঘুমিয়েও ব্যক্তি অস্বাভাবিক নড়াচড়া করেন। অনেক সময়ও ঘুমের মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা থাকে।
- মানুষ যখন শুয়ে ঘুমান, তার উপর ব্যক্তিত্ব বোঝা যায়- দাবি বিজ্ঞানীদের। এই ধরনের মানুষের সংখ্যা শতকরা ৪১। সাধারণত এসব মানুষেরা রাশভারী হলেও হন খোলা মনের।
- দেখা গেছে, যারা বেঁকে ঘুমায় তারা একটু সন্দেহ– বাতিকের হয়। এদের সংখ্যা শতকরা ১৫। সৈন্যদের ভঙ্গিতে শুয়ে ঘুমানো মানুষেরা একটু সংরক্ষণশীল হন। এদের সংখ্যা ৮ শতাংশ। ঝর্ণার মত আলুথালুভাবে শুয়ে থাকা মানুষেরা একটু হুল্লোড়বাজ হয়। এই ধরনের মানুষ মাত্র ৭ শতাংশ। যারা মাছের ভঙ্গিতে ঘুমান তারা ভাল শ্রোতা। এদের সংখ্যা শতকরা ৫ জন। দীর্ঘদিন ধরে সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্যটুকু যোগাড় করতে পেরেছেন কিজ্ঞানীরা।
- বৃটিশ সেনাবাহিনী প্রথম একটানা ৩৬ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে কাটানোর উপায় বের করে।
- সবচেয়ে কম ঘুমায় যেসব স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন: জিরাফ- দিনে মাত্র ১.৫ ঘণ্টা (৫-১০ মিনিট করে), রোয়ে হরিণ- দিনে ৩.০৯ ঘণ্টা, এশিয়ার হাতি- দিনে ৩.১ ঘণ্টা।
- সবচেয়ে দীর্ঘসময় ঘুমায় যেসব স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন: কয়েল- দিনে ২২ ঘণ্টা, বাদামী বাদুড়- দিনে ১৯.৯ ঘণ্টা, প্যাঙ্গলিন- ১৮ ঘণ্টা।
- গবেষণা বলছে, ডলফিনরা যখন ঘুমায়, তখন তাদের মগজের অর্ধেক ঘুমায়, অর্ধেকটা সচল থাকে। জলের মধ্যে চালিয়ে যায় শ্বাসক্রিয়া।
- খাদ্যে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যুর মত ঘুমে বঞ্চিত হয়ে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ১৪ দিন না খেলে মৃত্যু হবে কিনা তা নিয়ে তর্ক চলতে পারে। কিন্তু একটানা ১০ দিন ঘুম না হলে মৃত্যু চলে আসতে পারে।
- বিজ্ঞানীদের ধারণা অন্ধলোক স্বপ্নে নানা প্রতিচ্ছবি দেখে। যারা জন্মান্ধ তারাও নাকি স্বপ্ন দেখে। আবেগ, অনুভূতি, শব্দ, গন্ধ, স্পর্শজনিত স্বপ্ন দেখে। জেগে ওঠার পাঁচ মিনিটের মধ্যে স্বপ্নের ৫০ শতাংশ আমরা ভুলে যাই। ১০ মিনিটের মধ্যে ৯০ শতাংশ মিলিয়ে যায় মন থেকে। শতকরা ২ জন বড় হয়েও বিছানায় ঘুমের সময় মুত্রত্যাগ করে থাকে।