
"আমার স্ত্রী বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। কষ্ট পাচ্ছে, তবুও সে ডাক্তারের কাছে যেতে রাজি না," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ঢাকার খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা ফখরুল আলম।
বছরখানেক আগে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে মি. আলমের বড় ছেলে আহনাফ তাহমিদের মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনার পর শোকার্ত পরিবারটির সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এক ধরনের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
"আমার ছোট ছেলেরও খতনা করানোর সময় হয়েছে। কিন্তু তাকে যে কোনো হাসপাতালে নিবো, সেই সাহস পাচ্ছি না," বলেন মি. আলম।
সন্তানহারা এই বাবা এটাও জানিয়েছেন যে, তার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন চিকিৎসক রয়েছেন।
"তারাও বলতেছে যেন তাদের কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু আমি নিচ্ছি না। ভয় হয়, যদি এবারও একই ঘটনা ঘটে!," বলছিলেন খতনা করাতে গিয়ে প্রাণ হারানো শিশু তাহমিদের বাবা ফখরুল আলম।
"সত্যি বলতে, এদেশের ডাক্তারের ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উঠে গেছে," বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. আলম।
ফখরুল আলমের মতো বাংলাদেশে অসংখ্য মানুষ রয়েছেন, বিভিন্ন কারণে যারা দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর সেভাবে ভরসা রাখতে পারছেন না।
ফলে চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষকে ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের হাসপাতালগুলোয় ছুটতে দেখা যাচ্ছে।

ছবির উৎস,Fakhrul Alam
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেবা পেতে ভোগান্তি, রোগ ধরতে না পারা, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেওয়া, রোগীকে যথেষ্ঠ সময় না দেওয়া, দায়িত্বে অবহেলায় মৃত্যু, স্বাস্থ্যসেবায় বাণিজ্যিক মনোভাব, জবাবদিহিতা ও নজরদারির অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে সাধারণ মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে।
"সোজা কথায়, ডাক্তারদের কাছে যেই মানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা, রোগী সেটা পাচ্ছেন না বলেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। তাদের আস্থা অর্জন করতে হলে সেবার মান বাড়ানোর পাশাপাশি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোজাহেরুল হক।
বেসরকারি হিসেবে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় আট লাখের মতো মানুষ চিকিৎসা করাতে বিদেশে যাচ্ছেন। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ যাচ্ছেন ভারতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে, চিকিৎসার নামে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় পাঁচশ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। এতে দেশটির অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ছবির উৎস,Getty Images
রোগ নির্ণয়ে ভোগান্তি
"দেশে অন্তত দশ-বারো জন ডাক্তারকে দেখাইছি। কিন্তু কেউ বলতে পারেনি যে, আমার ঠিক কী হয়েছে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন বজলুর রহমান।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মি. রহমানের বছর দুই আগে অনেকটা হঠাৎ করেই পেটে ব্যথা শুরু হয়। শুরুর দিকে কিছুটা কম থাকলেও ক্রমেই ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। তখন তিনি সমস্যার সমাধানে ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞের কাছে যান।
"তিনি আমাকে বেশকিছু টেস্ট দিলেন। সেগুলো করালাম, কিন্তু কিছুই ধরা পড়লো না। তখন ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়ে বললো, ওষুধগুলো খান, সব ঠিক হয়ে যাবে," বলেন মি. রহমান।
ওষুধগুলো খাওয়ার পর কিছুদিন ব্যথা ঠিকও হয়েছিল তার। কিন্তু মাস না পেরোতেই পুনঃরায় সেটি ফিরে আসে।
"এর পরের এক বছরে যে যেখানে রেফার করছে, সেখানে গিয়ে ডাক্তার দেখাইছি। কিন্তু কেউ বলতে পারে না যে, ঠিক কী রোগ হয়েছে," বলেন মি. রহমান।

ছবির উৎস,Getty Images
রোগ ধরা না পড়লেও ওই এক বছরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ওষুধ বাবদ এক লাখেরও বেশি টাকা খরচ করে ফেলেন বজলুর রহমান।
পরে পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করে রোগ নির্ণয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে যান তিনি।
"সেখানে গিয়ে দেখা গেলো, আমার কোলনে আলসার। অথচ দেশের ডাক্তাররা এক বছরেও ধরতে পারলো না। আমার টাকাও নষ্ট হলো, ভুগতেও হলো," ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন মি. রহমান।
সঠিকভাবে রোগ ধরা না পড়ার কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বহু মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
"বস্তুত প্রতিবছর যত মানুষ বিদেশে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন, তাদের প্রায় ৫৩ শতাংশই রোগ নির্ণয় ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন গবেষণা থেকে আমরা জানতে পারছি," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) বিজ্ঞানী ডা. আহমদ এহসানুর রহমান।

ছবির উৎস,Getty Images
ভুল রিপোর্টের বিড়ম্বনা
ঘটনাটি ২০২৩ সালের।
পেটের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন নীলফামারির ডোমার উপজেলার এক কিশোরী। সেখানে চিকিৎসক তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেন।
পরীক্ষাটি করানো হয় স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এরপর যে ঘটনা ঘটে, সেটির জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না কিশোরীর পরিবার।
আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্টে বলা হয়, স্কুলপড়ুয়া ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা! পরিবারের জন্য বিষয়টি বিব্রতকর হওয়ায় তারা আরও দু'টি হাসপাতালে পুনরায় আল্ট্রাসনোগ্রাফি করান।
সেগুলোর রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা নন। এ ঘটনার পর প্রথমবার যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করানো হয়েছিল, রোগির ক্ষিপ্ত স্বজনরা সেখানে হামলা ও অবরোধ করেন।
পরে স্থানীয় প্রশাসনের তদন্ত থেকে জানা যায় যে, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসলে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর মতো প্রশিক্ষিত কোনো লোকই ছিল না।

ছবির উৎস,Getty Images
চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এমন ভুল রিপোর্ট দেওয়ার ঘটনা এখনও অহরহ ঘটছে।
"বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী রিপোর্ট নিয়ে আসে, সেখানে মাঝে মধ্যেই আমরা নানা অসঙ্গতি দেখতে পাই। পরে নতুন করে রিপোর্টগুলো করানোর প্রয়োজন পড়ে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শাহনূর শরমিন।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার এমন ভুল রিপোর্টের কারণে অনেক সময় রোগিরা মৃত্যু ঝুঁকিতেও পড়ছেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
"চিকিৎসকরা যেহেতু টেস্টের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ওষুধ দেন, কাজেই ভুল রিপোর্টের কারণে দেখা যায় ভুল রোগের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এতে সুস্থ হওয়ার বদলে রোগির জীবনই ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে," বিবিসি বাংলাকে বলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন।

ছবির উৎস,Getty Images
সময় দেন না চিকিৎসকেরা
বাংলাদেশে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রোগীদের পুরনো একটি অভিযোগ হচ্ছে, ডাক্তাররা তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেন না।
"যে সমস্যা নিয়ে আমি তার কাছে গেলাম, সেইটাও ঠিকমত শোনে না। গেলেই শুরুতে কিছু টেস্ট আর ওষুধ ধরায় দেয়," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা খাদিজা বেগম।
তিনি ঘন ঘন জ্বর আসা সহ বেশকিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। স্থানীয় চিকিৎসকদের ওষুধে স্বাস্থ্যের উন্নতি না হওয়ায় সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
"এখানে এসেও দেখি, সেই একই রকম। কথাই শুনতে চায় না। অথচ টাকা নেয় দুই ডাবল," ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন পঞ্চাশোর্ধ খাদিজা বেগম।
রোগীদের এমন ক্ষোভ যে মোটেও অমূলক নয়, গবেষণাতেও সেটি বের হয়ে এসেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসা সাময়িকী ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে যেসব দেশে চিকিৎসকরা রোগীদের সবচেয়ে কম সময় দেন, বাংলাদেশ সেগুলোরই একটি।
দেশটিতে চিকিৎসকেরা একজন রোগীর পেছনে গড়ে মাত্র ৪৮ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে থাকেন।
"এত অল্প সময়ের মধ্যে একজন ডাক্তার কীভাবে রোগীর অবস্থা বুঝবেন এবং রোগীই-বা কী সেবা পাবেন? এই কারণেও বহু রোগী বিদেশে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন," বলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আহমদ এহসানুর রহমান।

ছবির উৎস,Getty Images
নজরদারি-জবাবদিহিতার অভাব
সরকারি হিসেবে, দেশে বর্তমানে ১৫ হাজারের মতো নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। যদিও বাস্তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসব হাসপাতালের একটি বড় অংশেই প্রশাসনের নজরদারি নেই। জেলা পর্যায়ের অনেক হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নেই বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
"ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগিরা সেগুলোতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন।
এছাড়া ঢাকার বাইরের অনেক বেসরকারি হাসপাতালে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলও নেই।
"দেখা যাচ্ছে, ওইসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে," বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. শাহনূর শরমিন।
এর জন্য মালিকপক্ষের বাণিজ্যিক মনোভাবকে দায়ি করছেন অনেকে।

ছবির উৎস,Getty Images
"খরচ বাঁচিয়ে বেশি লাভ করার জন্য তারা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দেয় না। অথচ নানা অজুহাতে রোগীদের কাছ থেকে ঠিকই টাকা আদায় করে নেয়," বলেন ডা. হোসেন।
এতে রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে, অনেক ক্ষেত্রে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
"রোগী মারা যাওয়ার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। তখন তারা গিয়ে একটা মুখস্ত কথা বলে দেয় যে, এই হাসপাতালের অনুমোদন ছিল না। এর আগে খোঁজ থাকে না," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দাবি করছেন যে, তারা নজরদারি চালাচ্ছেন।
"আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের লোকবলের সংকট রয়েছে। তাছাড়া কর্মকর্তাদের হাসপাতাল পরির্দশনের পাশাপাশি অন্য অনেক দায়িত্বও পালন করতে হয়," বিবিসি বাংলাকে বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মোহাম্মদ মঈনুল আহসান।

ছবির উৎস,Shamim Ahmed
শাস্তি হয় কতটা?
২০২৪ সালে ঢাকার সাঁতারকুলে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে মারা যায় পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়ান আহমেদ।
ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে তখন অভিযোগ তুলেছিল শিশুটি পরিবার।
ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর নির্মাণাধীন হাসপাতালটির স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অনুমোদন ছাড়াই হাসপাতালটি চলছিলো বলে তখন জানান সরকারের কর্মকর্তারা।
মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয় হাইকোর্ট।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে শিশু আয়ানের মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সেখানকার দুই চিকিৎসককে দায়ি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন কমিটির সদস্যরা।
সেই সঙ্গে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে নিহত শিশুর পরিবারকে দেওয়ার সুপারিশও করা হয়।
"কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ওইসব সুপারিশের কোনোটাই বাস্তবায়ন করা হয়নি," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ।

ছবির উৎস,Getty Images
মি. আহমেদ এটাও জানাচ্ছেন যে, শুরুর দিকে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ করা হলেও কয়েক মাসের মধ্যে সেটি পুনরায় চালু করা হয়।
"প্রতিদিন বাড়ি ফেরার পথে আমি হাসপাতালটাকে দেখি আর ভাবি, আমরা কোথায় বসবাস করছি," বলেন মি. আহমেদ।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "আমার একমাত্র ছেলেটাকে মেরে ফেলে তারা দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে। অথচ কোনো বিচার হলো না, শাস্তি হলো না।"
একই কথা বলছিলেন আহনাফ তাহমিদের বাবা ফখরুল আলম।
"এ দেশে সাধারণ মানুষের জীবনের দাম নেই। আইনের শাসন নেই। ক্ষমতার কাছে সবাই জিম্মি। তাহলে উন্নতি হবে কীভাবে," বলছিলেন মি. আলম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অবহেলায় মৃত্যুর বিভিন্ন অভিযোগের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও দোষিদের শাস্তি না হওয়ায় একই ঘটনার বার বার ঘটছে।
এতে আস্থার সংকট আরও প্রকট হচ্ছে।