সুস্বাস্থ্যের জন্য দিনের প্রতি বেলার খাবারই সমান গুরুত্বপূর্ণ। কোন বেলায় কী খাবেন তা ভেবেচিন্তে এবং জেনেবুঝে ঠিক করা উচিত। কিন্তু সমস্যা হলো, সকালের নাস্তা এবং নৈশভোজের মতো দুপুরের খাবার নিয়েও আমাদের বেশিরভাগেরই তেমন মাথাব্যথা নেই।
সে কারণেই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে ঝাঁ চকচকে করপোরেট অফিসে পৌঁছেও দুপুরের খাবারই রয়ে যায় সব থেকে বেশি অবহেলিত। ভাবটা এমন যেন, এই সময়ে কিছু একটা খেয়ে নিলেই হলো। এমনটা করতে গিয়েই স্বাস্থ্যের বাজছে বারোটা। এমনকি পুষ্টির ঘাটতি হয় শরীরে।
তাই যত দ্রুত সম্ভব দুপুরের খাবারের মেনুর দিকে নজর ফেরানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের কথায়, দুপুরে এমন কয়েকটি খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে, যা দেহের একাধিক ক্ষয়ক্ষতির কারণ।
এখন মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে, এই তালিকায় ঠিক কোন কোন খাবার রয়েছে? সেই উত্তর জানতে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদনটি পড়ে ফেলুন। আশা করছি, তাহলেই আপনার চোখ খুলে যাবে। এরপর থেকে আপনিও এসব খাবারের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে পারবেন।
বিরিয়ানি, চাউমিন এড়িয়ে চলুন
দুপুরে বিরিয়ানি, চাউমিনের মতো ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস থাকলে দ্রুত সাবধান হন। মাসে এক বা দুদিন দাওয়াত রক্ষা করতে গিয়ে খেলে তেমন সমস্যা হওয়ার কিছু নেই, হলেও তা সামান্য। কিন্তু প্রায়ই দুপুরে যদি এসব খাবার মুখে তোলেন, তাহলেই পড়বেন বড় বিপদে।
কারণ, এসব ফাস্টফুডে রয়েছে ক্ষতিকর তেল, লবণ ও মশলার সম্ভার। তাই নিয়মিত এসব খাবার খেলে হার্ট, চোখ, ব্রেনসহ দেহের একাধিক অঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে বৈকি! এমনকি এসব খাবারের কারসাজিতে বাড়তে পারে ওজন। সুতরাং এবার থেকে লাঞ্চে এসব খাবার মুখে তুলবেন না যেন!
কোল্ড ড্রিংকস নৈব নৈব চ
আপনার অতি প্রিয় কোল্ড ড্রিংকসে রয়েছে মিষ্টির ভাণ্ডার, যা কিনা দ্রুত সুগার বাড়াতে পারে। এমনকি ওজনকে ঊর্ধ্বমুখী করার ক্ষেত্রেও এর জুড়ি মেলা ভার।
তবে এখানেই শেষ নয়, এই পানীয়তে এমন কিছু ক্ষতিকর উপাদান মেশানো হয়, যা পেটসহ দেহের একাধিক অঙ্গের বারোটা বাজাতে পারে। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে কোল্ড ড্রিংকস এড়িয়ে চলাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। নইলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।
রেডমিটই সমস্যার কারণ
দুপুরের খাবারে প্রায়ই গরু কিংবা খাসির মাংস খেলে কিন্তু সমস্যার শেষ থাকবে না। কারণ এসব মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা কিনা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে। সেই কারণে হৃদরোগের ফাঁদে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।
সেই সঙ্গে অত্যধিক রেডমিট প্রীতি কিন্তু রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও বাড়াতে পারে। তাই নীরোগ জীবন কাটাতে চাইলে দুপুরে গরু-খাসির মাংস যত কম খাবেন ততই ভালো। তাই বলে একেবারে ছেড়ে দেবেন না যেন। মাসে দুই-তিন দিন খাওয়া যেতেই পারেন।
চিপসেই লুকিয়ে বিপদ
আজকাল অনেকেই দুপুরে হালকা খাবার খাবেন ভেবে চিপস খেয়ে নেন। অনেক বাচ্চা তো নিয়মিত টিফিনে এসব খাবার খায়। এতেই স্বাস্থ্যের দফারফা হয়ে যায়। কারণ চিপসের মতো ডিপ ফ্রায়েড ফুডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিকর ফ্যাট, যা কিনা হার্টের বারোটা বাজাতে পারে।
শুধু তাই নয়, যে কোনো চিপসেই মেশানো থাকে প্রচুর পরিমাণে লবণ আর মশলা। এই দুই উপাদান ব্লাড প্রেশারকে ঊর্ধ্বমুখী করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই বিপদ এড়াতে দুপুরে চিপস এড়িয়ে চলুন। স্কুলে বাচ্চাও যাতে এ খাবারটি বেশি না খায়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
মিষ্টি খেলেই ফাঁসবেন
দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পর অনেকেরই মিষ্টি ছাড়া চলে না। এই কারণেই কিন্তু পিছু নেয় ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে কোলেস্টেরল, ব্লাড প্রেশারের মতো ঘাতক রোগ। তাই বিপদ ঘটার আগেই দুপুরে মিষ্টি খাওয়ার বদভ্যাসে লাগাম টানুন। তাহলেই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে পারবেন।
ঢাকা টাইমস