ওমান সরকারের বিদেশি চিকিৎসক নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যাতে বলা হয়েছে, চীন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি বাংলাদেশি চিকিৎসকরাও আবেদন করতে পারবেন না।
এ অবস্থায় দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসকরাও শামিল হন এই কাতারে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মূল ধারার গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয় এই বিষয়ে। এমনকি যাচাই-বাছাই ছাড়া বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন খোদ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. টিটু মিঞাও।
একটি দৈনিক পত্রিকাকে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ওমান চার বছর আগে থেকেই জানিয়ে আসছে, তারা বাংলাদেশ থেকে ডিগ্রিধারী চিকিৎসক নেবে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবশেষ সরকারিভাবে ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক নেয় ওমান। এছাড়া দেশটির বেসরকারি হাসপাতালে চলতি বছরও বাংলাদেশি চিকিৎসক নেয়া হয়।
তবে চিঠির একটি বিষয়ে নজর পড়ে সময় সংবাদের। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের একটি বিজ্ঞপ্তি অথচ নেই কোনো সিল-স্বাক্ষর। যাচাই করতে ওমানে সরাসরি যোগাযোগ করলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।
ওমানে নিয়োজিত বাংলাদেশের লেবার কাউন্সিলর মেজর রাফি জানান, এ ধরনের কোনো বিজ্ঞপ্তিই ওমান সরকার দেয়নি। বরং বাংলাদেশের প্রায় আড়াই থেকে তিনশ চিকিৎসক সেখানে দক্ষতার সঙ্গেই কাজ করে আসছেন।
তিনি বলেন,
২০২২ সালে একই ধরনের পোস্ট দেখা গিয়েছিল। এটা নতুন না। ওমান সরকার কখনও এমন করেনি। কয়েকদিন আগেও আমাদের দেশের চিকিৎসকরা ওমানে এসেছেন। বিজ্ঞপ্তিটিতে ওমান সরকারের সিল বা স্বাক্ষর কিছুই নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, ‘যেখান থেকে গুজবটা ছড়ানো হয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হয় এমন ভুয়া ফেসবুক পোস্ট কিংবা ভুয়া প্রতিবেদন আর না হয়। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’
এদিকে প্রথমে গুজবে গা ভাসালেও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. টিটু মিঞা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু অফিসিয়ালি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এমন কোনো বার্তা নেই। অবশ্যই আমরা এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করব।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন