দেশের ৫৫টি ক্রীড়া ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন ও সংস্থার মধ্যে সভাপতি নেই ৪৮ টিতেই। চারটি ফেডারেশনে নেই সাধারণ সম্পাদকও। এক কথায় বাবা-মা হারানোর এতিম সন্তানের মতো স্থবির হয়ে আছে ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলো।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিকল্প ঠিক না করেই ৪৫টি ফেডারেশনের সভাপতি ও দুটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ করেছে। তিন ফেডারেশন সভাপতিশূন্য ছিলো আগে থেকেই। দুটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নিজ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কয়েকটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন আত্মগোপনে।
ফুটবল আর ক্রিকেট ছাড়া দেশের বাকি সব খেলাই থমকে আছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের জন্য মতামত নিতে একটি সার্চ কমিটি গঠণ করেছে। এই কমিটি বেশ কয়েকটি সভা করে মন্ত্রণালয়কে কিছু ফিডব্যাক দিয়েছে।
তার ভিত্তিতে দ্রুতই কয়েকটি ফেডারেশনের শীর্ষ পদে নতুন মুখ দেখা যাবে বলে ক্রীড়াঙ্গনে গুঞ্জন আছে। এখন এ কাজটি যতদিন না হবে তততিন ক্রীড়াঙ্গনের স্থবিরতা কাটারও কোনো সম্ভাবনা নেই।
গত ১০ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে একসঙ্গে ৪২টি ফেডারেশনের সভাপতিতে অব্যাহতি দিয়েছে। তার আগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আরো তিন ফেডারেশনের সভাপতি ও এক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদককে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিভিন্ন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কমিটিতে থাকা তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের অপসরাণ করেছে। সেখানে ১৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ছিলেন ২০ ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ শরীর গঠণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অপসারণ করেছে কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদককে।
নিজ থেকে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন ও বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। এ মুহূর্তে সভাপতির পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদকও নেই বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন, বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশন, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন ও বাংলাদেশ শরীর গঠণ ফেডারেশনের।
অপসারণ বা পদত্যাগ না করলেও সাধারণ সম্পাদক আত্মগোপনে হকি ও শ্যুটিংয়ের। অফিসের সাথে যোগাযোগ নেই রোলার স্কেটিং, বক্সিংসহ বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের। কয়েকটি ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষকেও অপসারণ করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় একের পর এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে ব্যাপকহারে ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে কর্মককর্তাদের অপসারণ ও অব্যাহতি দিলেও একজনকেও নতুনভাবে দায়িত্ব দেয়নি। তাই সিংহভাগ ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন এখন অভিভাবকশূন্য।
ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন, শ্যুটিং স্পোর্টস ফেডারেশন, হ্যান্ডবল ফেডারেশন, জুডো ফেডারেশন, কারাতে ফেডারেশন, তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন, টেবিল টেনিস ফেডারেশন, জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন, বাস্কেটবল ফেডারেশন, আরচারি ফেডারেশন, মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, বক্সিং ফেডারেশন, বধির ক্রীড়া সংস্থা, বাশাআপ অ্যাসোসিয়েশন, রাগবি ফেডারেশন, ফেন্সিং ফেডারেশন, বেসবল সফটবল অ্যাসোসিয়েশন, ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটি, সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশন, মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন, চুকবল অ্যাসোসিয়েশন, সেপাক টাকরো অ্যাসোসিয়েশন, জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশন, প্যারা আরচারি অ্যাসোসিয়েশন, ভারোত্তোলন ফেডারেশন, উশু ফেডারেশন, ক্যারম ফেডারেশন, সাইক্লিং ফেডারেশন, টেনিস ফেডারেশন, কুস্তি ফেডারেশন, রোলার স্কেটিং ফেডারেশন, কান্ট্রি গেমস অ্যাসোসিয়েশ, থ্রো বল অ্যাসোসিয়েশন, ভলিবল ফেডারেশন, স্কোয়াশ র্যাকেটস ফেডারেশন, রোইং ফেডারেশন, আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো অ্যাসোসিয়েশন, ঘুড়ি অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন, খিউকুশিন কারাতে অ্যাসোসিয়েশন, খো খো ফেডারেশন, মার্শাল আর্ট কনফেডারেশন, কাবাডি ফেডারেশন, দাবা ফেডারেশন, ব্রিজ ফেডারেশন, শরীর গঠন ফেডারেশন, ব্যুত্থান অ্যাসোসিয়েশন ও ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশন।