Image description
১৯৭৯ সালের চুক্তি সংশোধন, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের লক্ষ্য কী?
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এসটিএ) নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সরকারের মধ্যে ১৯৭৯ সালেই একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তিতে কিছু সংশোধন এনে শুক্রবার নতুন করে আরও ৫ বছরের জন্য সম্প্রসারিত করতে একমত হয়েছে দুই দেশ। এ ব্যাপারে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর হওয়ার কথা জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র দপ্তর। এসটিএ প্রথম স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ও চীনের নেতা ডেং জিয়াওপিং-এর মধ্যে হয়েছিল সেই চুক্তিটি। যার লক্ষ্য ছিল, কৃষি, বিদ্যুৎ, মহাকাশ, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বিশ্ব বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং শিক্ষা ও গবেষণারত আদানপ্রদানের মতো বিভিন্ন বিষয়ে সমন্বয়ের পথকে সহজতর করা। সংশোধিত চুক্তিটি ২৭ আগস্ট থেকে পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য আগেই কার্যকর হয়েছে এবং উভয় দেশের প্রতিনিধিরা বেইজিং-এ এটি স্বাক্ষর করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই চুক্তি থেকে ‘গুরুতর ও আসন্ন প্রযুক্তিগুলিকে’ বাদ দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা সংবাদদাতাদের বলেছেন, নতুন চুক্তিটি আগের চুক্তির সুযোগ ও সম্ভাবনাকে আরও ছোট করে এনেছে এবং ‘পারস্পরিকতা, স্বচ্ছতা ও উন্মুক্তিকে’ নিশ্চিত করতে ‘গার্ডরেলস’ চালু করেছে। চীনের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং ফেব্রুয়ারি মাসে সংবাদদাতাদের বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত আদানপ্রদান ও সমন্বয়ের ধরনটি ‘পারস্পরিকভাবে লাভজনক এবং উভয়ের জন্য ভাল।’ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সমন্বয় গত কয়েক বছর ধরে সমালোচনার মুখে পড়েছে এবং নিরাপত্তাগত উদ্বেগ তৈরি করেছে। সমালোচকদের যুক্তি, এই চুক্তি বেইজিং-এর সামরিক সক্ষমতাকে আরও জোরদার করতে পারে। ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট এই চুক্তির মেয়াদ যখন শেষ হতে চলেছিল তখন রিপাবলিকান প্রতিনিধি এলিস স্টেফানিক (একে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের দূত হিসেবে মনোনীত করেছেন) ও অন্যান্য আইনপ্রণেতারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে এসটিএ পুনর্নবীকরণ না করতে অনুরোধ করেছিলেন। আবহাওয়া, সমুদ্রবিজ্ঞান ও ভূতত্ত্বের মতো নানা ক্ষেত্রে প্রাথমিক গবেষণার উপর নজর দিয়েছে সংশোধিত চুক্তিটি। পররাষ্ট্র দপ্তরের বক্তব্য অনুযায়ী, সুনামি সতর্কতা, ইনফ্লুয়েঞ্জা তথ্য, বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ, কৃষি ও কীট নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত গবেষণা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান সংস্থাগুলিকে সহযোগিতা করবে এসটিএ। পররাষ্ট্র দপ্তরের আরেক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, সংশোধিত এসটিএ-র নিয়ম অনুযায়ী ন্যাশনাল ওসানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং বিদ্যুৎ ও কৃষি দপ্তরের মতো সংস্থাগুলি চীনের এই বিষয়ক সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয়, তথ্য লেনদেন চুক্তি ও যৌথ গবেষণা প্রকল্পের প্রস্তাব দিতে পারবে। চীনের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রস্তাবিত যৌথতা বিষয়ে পর্যালোচনা করছে; পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের নেতৃত্বে এক বৃহত্তর আন্তঃসংস্থা পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে এই পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টি। একবার যাচাই করা হয়ে গেলে প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়িত হতে পারে।