Image description
হিরো অ্যামি স্কট: একাই রুখে দাঁড়ান সিডনির মলে হামলাকারীর বিরুদ্ধে
সিডনির বৃহত্তম মলে তখন ছুরি নিয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে আততায়ী। তখন এক নারী অফিসার একাই তার মারাত্মক তাণ্ডব রুখে দিয়েছিলেন। অ্যামি স্কট একাই আক্রমণকারী জোয়েল কাউচির মুখোমুখি হয়েছিলেন। সে সিডনির ওয়েস্টফিল্ড বন্ডি জংশন শপিং সেন্টারে বেশ কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করে। বেশ কয়েকজন লুটিয়ে পড়েন ফ্লোরে। ইন্সপেক্টর স্কট কাউচির পিছু নেন এবং কমপ্লেক্সের পঞ্চম তলায় তার মুখোমুখি হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তিনি আততায়ীকে তার হাতের অস্ত্রটি ফেলে দিতে বলেন। সে ব্লেড দিয়ে স্কটকে পাল্টা আঘাত করতে গেলে তাকে গুলি করে হত্যা করেন অস্ট্রেলিয়ার এই 'হিরো' পুলিশ অফিসার । প্যারামেডিকরা না আসা পর্যন্ত স্কট ৪০ বছর বয়সী কাউচিকে সিপিআর দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। Video Player is loading. Pause Mute Remaining Time -10:18 Close PlayerUnibots.com ওয়েভারলির মেয়র পাওলা ম্যাসেলোস স্কাই নিউজকে বলেছেন, "তিনি (অ্যামি স্কট) আক্রমণকারীকে গুলি করার পরে অবিলম্বে সিপিআর প্রয়োগ করতে শুরু করেছিলেন- যা আপনাকে সেই ব্যক্তির উৎসর্গ এবং তার অবিশ্বাস্য বীরত্বকে তুলে ধরে।" বছর ৩৯ এর স্কট পুলিশে রয়েছেন ১৯ বছর ধরে এবং তিনি পূর্ব শহরতলির পুলিশ এরিয়া কমান্ডের সাথে সংযুক্ত। সিডনির মলে আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় তিনি কাছাকাছি একটি হোটেলে মদের লাইসেন্স চেক করছিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে খবর পেয়ে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তিনি আজ সমগ্র দেশ জুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন। নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স বলেছেন, "ইন্সপেক্টর অ্যামি স্কট বিপদের দিকে ছুটে গিয়ে পেশাদারিত্ব এবং সাহসিকতা দেখিয়েছেন এবং গত ২৪ ঘন্টায় অনেকের জীবন বাঁচিয়েছেন।" স্কট ঘটনাস্থলে প্রথম পৌঁছেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেছেন, স্কট ‘অবশ্যই একজন নায়ক’, যিনি নিজের জীবনের পরোয়া না করে অনেকের জীবন বাঁচিয়েছেন। স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়ার সাথে কথা বলার সময় নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ মন্ত্রী ইয়াসমিন ক্যাটলি বলেছেন, হামলার পরে তিনি স্কটের সাথে দেখা করেছিলেন তার ‘নম্র’ স্বভাব দেখে তিনি অভিভূত হন। পুলিশ জানিয়েছে, আক্রমণকারী জোয়েল কাউচি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন এবং তদন্তকারীরা এই ঘটনাটিকে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত হামলা হিসাবে বিবেচনা করছেন না এবং কাউচির পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। হামলায় পাঁচজন নারী এবং একজন পুরুষ যাদের বয়স ২০ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে, মারা গেছেন এবং একটি শিশুসহ আরও ১২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিজের জীবন দিয়ে অ্যাশলি গুড বাঁচিয়েছেন তার মেয়েকে। ছুরিকাহত হ্যারিয়েটের কয়েক ঘণ্টা অস্ত্রোপচার হয় হাসপাতালে। তার বিপদ এখনও কাটেনি, তবে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ডন সিঙ্গেলটন (২৫) নিহত হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান পাকিস্তানি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক তৃতীয় নিহত ব্যক্তির নাম ফারাজ তাহির (৩০)। তিনি একজন পাকিস্তানি নাগরিক যিনি কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় চলে গিয়েছিলেন। কাউচির হাতে চতুর্থ শিকার হলেন ৪৭ বছর বয়সী জেড ইয়ং, একজন স্থপতি। নিহত পঞ্চম জনের নাম ছিল পিকরিয়া দারচিয়া (৫৫) যিনি - তার লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুসারে -২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ডিজাইনার হিসাবে জর্জিয়ার তিবিলিসিতে কাজ করেছিলেন এবং নিজেকে একজন শিল্পী হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, অন্য একজন ভিকটিম বিদেশ থেকে এসেছেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার নেই। তারা যোগ করেছে যে কর্মকর্তারা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। হামলায় নিহতদের প্রতি সম্মান ও শোক জানাতে ১৫ এপ্রিল সমস্ত সরকারী-সংশ্লিষ্ট ভবন থেকে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয় । সূত্র : news.sky.com